আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্লুটোক্রাসি (Plutocracy) নয় ডেমোক্রাসি (Democracy) চাই

স্বাধীনতা, সে তো আমার প্রিয় মানুষের এক সাগর রক্তের বিনিময়ে কেনা গণতন্ত্রের অন্যতম প্রধান একটি শর্ত হল নির্বাচন আবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেই হবে না, কিন্তু সেই নির্বাচন হতে হবে অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য । সব গণতান্ত্রিক রাস্ট্রেরই সরকার ব্যবস্থার দুর্বলতা আছে । কারো কম আবার কারো বেশি । আমাদের সরকার ব্যবস্থার প্রধান দুর্বলতা হল আমাদের প্রধানমন্ত্রী Omnipotent,নির্বাচনে প্রচুর টাকার খেলা ( Plutocracy) ও প্রশাসনে ব্যাপক দূর্নীতি । সৎ ও যোগ্য কিন্তু তার টাকা নেই এরকম ব্যক্তি আমাদের দেশের নির্বাচনে উত্তীর্ণ হওয়া অনেকটা ব্যাঙ্গের সর্দির মতই ।

বিশ্বের যেদেশটা গণতন্ত্র রপ্তানি করে বলে নিজেই সেই দায়িত্বে কাঁধে তুলে নিয়েছে সেই দেশটারও গণতন্ত্রের অনেক ত্রুটি আছে বরং আমেরিকার গণতন্ত্রকে Democracy না বলে Plutocracy বলাই শ্রেয়। আর যেহেতু আমেরিকা মার্কিন বিরোধী কতিপয় দেশের নির্বাচন নিয়ে সমালোচনা করে তাই আমেরিকার উচিৎ নিজের নির্বাচন পদ্ধতির ত্রুটিও দেখা । আপনাদের অনেকের হয়তো জানা আছে আমেরিকায় তৃতীয় প্রেসিডেন্ট ক্যান্ডিডেট ছিলেন কিন্তু তার নাম আপনি কি শুনেছিলেন ? বা ওবামা রমনির মত তার নাম আমরা সবাই জানি না কেন ? কারণ পুজিবাদী ও ইহুদী লবির নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া তাকে জনসম্মুখে নিয়ে আসেনি এমনকি সেই তৃতীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে জাতীয় টেলিভিশন বিতর্কেও ডা্কা হয় না । বুশের সময় একজন ছিলেন র্যালপ নাদের । আর ওবামার সময় গ্রীন পার্টির একজন ছিলেন কিন্তু দু:খের বিষয় রমনী ও ওবামার মত আমরা তাকে চিনি না ! অনেকেই ওবামার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া আমেরিকার গণতন্ত্রের বড় এ অর্জন বলে মনে করেন সেটা হয়তো কিছুটা হতে পারে তবে কেনিয়ার একজন নিগ্রো নির্বাচিত হওয়াটা বড় কিছু নয় ।

কৃষ্ণাঙ্গ পররাস্ট্রমন্ত্রী কলিন পাওয়েলই কিন্তু ইরাক যুদ্ধের পক্ষে সাফাই গেয়ে সিনেটে বক্তব্য দিয়ে তা ইরাক যুদ্ধ অনুমোদন করে নিয়েছিলেন । তাই ওবামা কেনিয় বংশদ্ভূত ও কৃষ্ণাঙ্গ এটা বিবেচ্য নয় বিবেচ্য হল তিনি ইহুদী লবি ও মার্কিন পুজিবাদীদের স্বার্থ কতটুকু রক্ষা করতে পারবেন । আর ওবামা কতটুকু স্বার্থ তাদের রক্ষা করতেছেন তাতো আমরা দেখতেই পাচ্ছি। আমাদের দেশগুলির নির্বাচনও এর ব্যতিক্রম নয় । এখানে প্রার্থীর সততা ও যোগ্যতা দেখা হয় না।

প্রার্থীর দেখা হয় দলীয় বিবেচনা, ক্যাডার ভিত্তিক রাজনীতি, টাকা ও যিনি যত বেশি দূর্নীতি করতে পারবেন তার তত বেশি যোগ্যতা । সেটা হবে না কেন ? একজন মেয়র প্রার্থী যদি তার নির্বাচনী প্রচারণাকালীন ব্যয় করেন কোটি টাকা তিনি কি মেয়র হয়ে ঘোড়ার ঘাস কাটবেন না আঙ্গুল চুষবেন ? নাকি প্রতিবার নির্বাচিত হবেন কিন্তু দুর্নীতি করবেন না ! তাহলে এভাবে একসময় তিনি ফকির হয়ে যাবেন !! প্রার্থীর এই দিকটাও তো আমাদের দেখা উচিৎ । ভোটের সময় টাকা নিবেন, পান, সিগারেট, বিড়ি, চা, দিনে রাতে পোলাও মাংস, বিরিয়ানী ইত্যাদি খাবেন আর পরের পাঁচ বছর তাকে খেতে দিবেন না তা হয় কি করে ? তারপরেও উনারা যেটুকু উন্নয়নের কাজ করেন এটা তাদের দয়া ! ধরুণ, তিনি যদি পরপর তিন চার বার নির্বাচনের দাড়ালেন কিন্তু শেষ বার জয়ী হতে পারলেন তাহলে ভাবুন এই ১৫-২০ বছরে নির্বাচনী প্রচারণাকালীন তার কত টাকা ব্যয় হতে পারে ? তাই বলছি, শুধু প্রাথীদের চরিত্র ও দুর্নীতি দেখলে হবে না । আমাদের সিষ্টেমের দিকে তাকাতে হবে। সে সিষ্টেমটা হল আমাদের বর্তমান গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ।

এই ব্যবস্থায় এটাই আমাদের প্রাপ্য যা বিগত বছর থেকে পাচ্ছি। তারপরেও গণতন্ত্র যতই খারাপ হোক এটাই এখন পর্যন্ত কার্যকরী ও সর্বজন গ্রহনযোগ ব্যবস্থা কিন্তু আমাদের দরকার এর সংশোধন ও পরিবর্তন। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.