আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হুদাই চাওয়ার অভ্যাস মুসলিমদের কর্মবিমুখ করছে !

জীবন এক প্রবাহমান নদী, এখানে দু:খগুলো ভাটার মত, যা বাধ দিয়ে সংরক্ষনও করতে পারেন আবার জোয়ারের অপেক্ষায় ধৈর্যও ধরতে পারেন । মুহাম্মদ সা: আমাদের শিখিয়েছেন যে কিছু পেতে হলে আগে দিতে হয় । আপনি যদি সম্পদ চান তাহলে যাকাত দিতে হবে । আপনি যদি চান যে মৃত্যুর পরেও আল্লাহ আপনাকে পূন্য দিতে থাকবেন তাহলে আপনাকে জনকল্যান মূলক কাজ করতে হবে । আপনি যদি লোকেদের থেকে ভাল ব্যবহার আশা করেন তাহলে আপনাকে সবার সাথে ভাল ব্যবহার করতে হবে ।

আপনি যদি চান অন্যে আপনার বিপদে এগিয়ে আসুক তাহলে আপনাকে অন্যের বিপদে এগিয়ে যেতে হবে । আপনি যদি ন্যায় বিচার চান তাহলে নিজেকে অন্যের প্রতি আপনাকে ন্যায়বিচার করতে হবে । আপনি যদি নিজ সন্তানদের নিকট ভরনপোষন আকাংখা করেন তাহলে আপনার বৃদ্ধ মা-বাবাকে ভরন-পোষন করতে হবে । যদি আল্লাহর নৈকট্য চান তাহলে আপনাকে ফরয আহকামগুলোর পাশাপাশি বেশি বেশি নফল ইবাদত করতে হবে । যদি আপনি চান যে আপনার সকল ইবাদত আল্লাহর নিকট গ্রহনযোগ্য হোক তাহলে আপনাকে অবশ্যই অবৈধ পথে আয় করা ছেড়ে দিতে হবে.... ইত্যাদী,ইত্যাদী ।

এখানে একটি কথা প্রত্যেকটি নেক কাজ একেকটি দোয়া....আপনি নেক কাজ করলেই বিনিময় পাবেন । এবং কোন কাজে কি বিনিময় পাবেন তা ডিটেইলস হাদীস থেকে পড়ে নিতে পারেন । আমরা জানি যে নামায মানে দোয়া, ভদ্রতার সহিত আল্লাহর কথা স্মরন করা । প্রথমে মনে মনে নিয়ত করলেন, তারপর কোরান পড়লেন, রুকু এবং সেজদাতে প্রশংসা সুচক বাক্য বললেন(ওগুলো ও কোরানের আয়াত), তারপর নামায শেষে দরুদ পড়লেন, দোয়ায়ে মাছুরার মাধ্যমে দোয়া করে সালাম ফিরিয়ে নামায শেষ করলেন । এখানে দেখেন নামাযের মাধ্যমে দোয়াটা দুই প্রকারের করলেন, একটা হলো যখন কোরান পড়লেন তখন আপনার উপর রহমত বর্ষিত হলো, তসবিহ পড়লেন এবং এর প্রতিদান পেলেন ।

আরেকটি হলো যে আপনি সরাসরি আল্লাহর নিকট গুনাহ থেকে মুক্তি চাইলেন । মানে এক নামাযের মাধ্যমেই দুই রকমের দোয়া করলেন, একটা ডাইরেক্ট আরেকটি ইনডাইরেক্ট । আচ্ছা, এবার বলেন’ত নামাযের শেষে যে আমরা আবার সম্মিলিত দোয়া করি ওইটা কেন করি ? আপনি বলতে পারেন যে দোয়া করলে’ত আল্লাহ বেজার হন না ! তাহলে অসুবিধা কোথায় ! তাহলে আপনাকে বলব, ফরয সালাত এক রাকাত বাড়িয়ে পড়লেও’ত গুনাহ হওয়ার কথা না ! তাহলে কেন বাড়িয়ে পড়েন না ? আপনি বলতে পারেন, ফরয নামায কেউ এক রাকাত বাড়িয়েও পড়তে পারবে না আবার কমিয়ে পড়তে পড়বে না... যদি পারত তাহলে নবী করীম সা: নিশ্চয় বাড়িয়ে পড়তেন ! একই কথা আপনাকেও বলব, প্রতিবার ফরয নামাযের পরে যে আলাদাভাবে দোয়া করা হয় তা’ত নবী করীম সা: করেননি তাহলে আপনারা কেন তা করছেন ? পারলে একটা হাদীস দেখান, যেখানে নবী করীম সা: নামায নামক দোয়া যত্ন করে পড়ার পরেও আবার সবাইরে নিয়ে সব নামাযের শেষে দোয়া করেছেন ? কিছু পেতে হলে যে কিছু দিতে হয় ....এই নিয়মটা আস্তে আস্তে আমাদের থেকে উঠে যাওয়ার পিছনে আমাদের এই মুনাজাতের অভ্যাসটা দায়ী কিনা , তা ভেবে দেখার সময় এসেছে । হুদাই চাওয়ার অভ্যাসটা যে আমাদেরকে কর্মবিমুখ করছে না তা কি আপনি বুকে হাত দিযে বলতে পারবেন ? পৃথিবীতে মুসলিমদের মধ্যে যে এত ভিক্ষাবৃত্তি দেখা যায় এর জন্যে কারনটা কি বলতে পারেন ? মুনাজাত করার নাম দিয়ে যে হুজুরের অবৈধ পথে টাকা আয় করছে ,এর জন্যে কে দায়ী বলতে পারেন ? কোন কাজ না করেই হুজুরেরে মুনাজাতের জন্যে টাকা কিছু দিয়ে নিজেরা কর্ম থেকে বিমুখ হচ্ছি কি না, ভেবে দেখুন ! আপনি কি জানেন, অন্যায় যে করে আর অন্যায়ে যে সাহায্য করে দুজনেই সমান অপরাধী.... দোয়া করার জন্যে, কোরান পড়ার জন্যে, জানাযার নামাজ পড়ার জন্যে টাকা নিয়ে হুজুর যেমন ধর্ম বিক্রি করে খেয়ে অন্যায় করছে, একইরকম ভাবে আপনিও তাকে টাকা-পয়সা দিয়ে অবৈধ পথে আয় করতে সহযোগীতা করছেন ! অর্থাৎ দুজনেই সমান অপরাধী । ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।