আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার “মোস্ট ওয়েলকাম” দর্শন

হয়তো আমি একাই... ঈদের ছুটির পর সবাই মোটামুটি ঢাকায় চলে এসেছে। আমারও আবার ছিল আজকে অফ ডে। ক্যাম্পাসে মিলিত হলাম সব বন্ধু-বান্ধব। আড্ডাবাজির এক পর্যায়ে আমার প্রস্তাব, “মোস্ট ওয়েলকাম দেখুম। ” কয়েকজনের ‘না’; ইমোশনাল অত্যাচার; অত:পর আমাদের ছয়জনের বলাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা।

আগেই বলে নেয়া দরকার, “সুপার একশন হিরো” অনন্তর আগের সিনেমা “স্পিড” দেখে আমরা সকলেই ব্যাপক “পুলোকিত” এবং “বিনোদিত” হয়েছিলাম। যাই হোক, বিকাল সাড়ে তিনটার শো। শুরু হল মোস্ট ওয়েলকাম। “চমৎকার” ভারতীয় এ্যাকশন ও নাচ গানের সমাবেশ ঘটেছে মোস্ট ওয়েলকামে। বাংলা ছবিটিতে একাধারে আছে বলিউডের চলচ্চিত্র “ধুম”, “ক্রিশ”, “ওয়ান্টেড” এর অংশ বিশেষের বাংলা রূপায়ন।

আছেন বলিউডের “খণ্ডকালীন” নায়িকা স্নেহা উল্লালের আইটেম সং। এতা বলিউডি সমারোহের মাঝে “শিলা কি জাওয়ানি” থাকবে না সেটা কি হয়?! না না, ক্যাটরিনা কাইফকে দেখার আগ্রহে সিনেমা হলে গেলে ধোঁকা খাবেন। গানের অংশ বিশেষ আছে; তবে “নাচনেওয়ালী” এ বাংলারই। এবার আসেন দেখে নেয়া যাক চলচ্চিত্রের কিছু উল্লেখযোগ্য দিক: • মূল চরিত্রে অনন্ত জলিলের অভিনয়। মাশআল্লাহ! মুগ্ধ হয়ে গেলাম।

তার সে কি এ্যাকশন! হাসতে হাসতে পেট ব্যাথা হয়ে গেল। বিশেষ করে তার উচ্চারণ এবং ইংরেজিতে কথপকথনে জাতির অনেক শিক্ষা নেয়ার আছে। ওহ, তার শরীর এবং পোশাকও কিন্তু দুর্দান্ত। নায়িকা বর্ষার চেয়ে তার প্রতিই আকর্ষন বেশি ছিল আমাদের। :পি • নায়িকা বষার্র একই ধরনের নাচে পারদর্শিতা এবং পান থেকে চুন খসলে তার মুখের অমর বানী “শুইটহার্ট”।

• এই চলচ্চিত্র দেখলে জানা যাবে কিভাবে না ভিজে এবং নিশ্বাস না নিয়েই সাবলিল ভাবে সমুদ্রে শার্কের সাথে হেসে খেলে সাতার কাটা যায়। • ওহ হ্যা, দুর্নীতি দমন কমিশন ও শাহবাগ থানার নতুন ভবনের দেখাও পাওয়া যাবে এই চলচ্চিত্রে। আহহা.... সিনেমার স্টোরির ব্যাপারেই তো বলা হলো না। কোন প্রবলেম নাই। কষ্ট করে ২০০৯ সালে তামিল ভাষার চলচ্চিত্র “কন্ঠস্বামী/Kanthaswamy” দেখে ফেলেন।

ঘটনা ৮০ ভাগ বুঝে ফেলবেন। http://en.wikipedia.org/wiki/Kanthaswamy_(film) http://www.imdb.com/title/tt1537032/ (এইবার আমি সিরিয়াস) ভালো চলচ্চিত্রের অভাব, হল বন্ধ, অশ্লিলতার জোয়ার, বানিজ্যিক ফর্মুল চলচ্চিত্র নির্মান, ভালো শিল্প সমৃদ্ধ চলচ্চিত্র নির্মানে প্রযোজনার অভাব এই চক্রেই আবর্তিত হচ্ছে আমাদের চলচ্চিত্র শিল্প। এর মাঝে ভালো মানের বানিজ্যিক চলচ্চিত্র নির্মানের স্বপ্ন দেখিয়ে মাঠে নামেন কয়েকজন। “অনন্ত জলিল” তাদেরই একজন। তবে এখানে দর্শকের স্বপ্নের চেয়ে তার নিজের নায়ক হোয়ার স্বপ্নই বেশি দেখা গিয়েছে।

“খোঁজ-দ্য সার্চ”, “হৃদয় ভাঙা ঢেউ”, “স্পিড” এর পর “মোস্ট ওয়েলকাম” প্রতিটিতেই তিনি নিজেকে হাইলাইট করেছেন বেশি। আর যে পরিমান অর্থ নিম্ন মানের কিছু স্পেশাল ইফেক্ট ও বলিউডের সংগীতশিল্পী কৈলাস খের ও স্নেহা উল্লাল এপ পিছনে ব্যয় হয়েছে সেটা দিয়ে ভালো কয়েকজন কলাকুশলী এবং পরিচালক দিয়ে ভালো চলচ্চিত্র বের করে আনা সম্ভব। চলচ্চিত্রটির ব্যাপারে কয়েকটি কথা বলতে চাই: • ভালো দিকটা দিয়েই শুরু করি। শক্তিমান কয়েকজন অভিনেতার দেখা মিলেছে সিনেমাটিতে। নায়ক রাজ রাজ্জাক, সোহেল রানা, বাপ্পা রাজ, আহমেদ শরীফ নিজেদের নামের মর্যাদা ধরে রেখেছেন।

• বিশেষ করে কাবিলার কথা না বললেই নয়। অভিনয়ের দিক দিয়ে ছাড়িয়ে গেছেন নামকরা অনেককেই। দর্শকদেরও যুগিয়েছেন আনন্দের খোরাক। • এবার মন্দের দিকে আসা যাক। বাপ্পারাজ ও রাধিকার গানটা অহেতুক মনে হয়েছে।

খলনায়ক মিশা সওদাগর ও নায়িকা বর্ষার অভিনয়টা একটু বেশিই ছিল। • স্নেহা উল্লাল ও নায়ক অনন্তর কথপকথনের বিষয়টা পরিষ্কার করা হয়নি। • মারামারির দৃশ্যে শুটিং দেখতে আসা লোকজন স্পষ্ট হয়ে ওঠে ক্যামেরায়। • সিনেম্যাটোগ্রাফি নিয়ে কিছু বলার নাই; সিনেমার স্টোরিতেই যেখানে খুঁত সেখানে সিসেম্যাটোগ্রাফি নিয়ে কথা নাই বা বলি। তবে কয়েকটি গানের লোকেশন বেশ ভালো ছিল।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.