আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তাকে ভুলে থাকতে ভুলে যাই -সজিব তৌহিদ

I am waiting for someone and I know she will ever come. কোন বিশেষ বিশেষণে বিশেষিত করে আমি আমার প্রিয় শিক্ষকের প্রিয়ত্ব ও বিশেষত্ব নষ্ট করতে চাই না। শুধু এইটুকু বলব স্মৃতি-প্রীতির দূরন্ত হাইস্কুল জীবনের সেই গুরুজন আজও আমার হৃদয়তন্ত্রীতে বসবাস করেন। আজ একাডেমিক শিক্ষা জীবনের প্রান্ত সীমায় দাঁড়িয়ে তাকে বারবার ভুলে থাকতে ভুলে যাই। শিক্ষা-দীক্ষা, নীতি-আদর্শ, জান-গর্ভ আলোচনার জন্য নয়। দুষ্টামি, ফাজলামি, খুনসুটি আর দূরন্তপনায় উৎসাহিত করার জন্য তিনি আমার কাছে অবিস্বরণীয়।

দুষ্টামি আর আনন্দের ছলে তিনি যা শিখিয়েছেন তখন তা তুচ্ছ মনে হলেও এখন সেসব বেশ গুচ্ছ-গুচ্ছ স্বচ্ছ ও সুন্দর মনে হয়। তিনি তার দৃষ্টিভঙ্গি ও মানসিকতায় বোঝাতে চেয়েছেন পড়ালেখা জীবিকা অজর্নের মাধ্যম মাত্র। জীবনকে অর্থপূর্ণ ,সুন্দর ও সাথর্ক করার জন্য উৎকৃষ্ট পন্থা নয়। তাই তিনি ক্রীড়া,শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহী করার জন্য নানা কথা বলেছেন। তার সেইসব কথায় তখন আমি ও আমরা অনেক বেশি বিরক্ত এবং বিভ্রান্ত হতাম।

আজ তাই গভীরভাবে মনে পড়ে চোখ কান বন্ধ করে শুধু লেখাপড়ায় ডুবে থাকার জন্য বর্তমানে দেশের ৫০ লক্ষ তরুণ-তরুণী নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। নিশ্চয়ই আমার সেই স্যার তরুণ প্রজন্মের এই করুণ কা-ে ব্যতিথ না হয়ে পারেন না। তা সত্ত্বেও তিনি তরুণদের নিয়ে স্বপ্ন দেখেন নতুন অরুণদয়ের। অসংখ্য মেধামি শিক্ষার্থীর ভিড়ে তিনি আমাকে চিনতেন কিন্তু আমার মত নিরেট গর্ধপের নাম জানতেন না। স্কুলের বিভিন্ন খেলাধূলায় ধারাভাষ্য দিতাম বলে স্যার আমাকে ভাষ্যকার বলেই ডাকতেন।

ক্লাসের ভালো শিক্ষার্থীদের নয় নিরেট-বোকা,নিরীহ পিছনের সারির ছাত্রছাত্রীদের নিয়েই স্যার বেশি মাতামাতি করতেন। ফলে আমার মত খারাপ ও দুর্বল ছাত্রছত্রীর মধ্যে আতœসম্মান বোধ জন্ম নেওয়ায় বিভিন্ন ক্লাসে নিয়মিত বেতের মার খাওয়া থেকে মুক্তি লাভ করি। আমি আমার মধ্যে পরিবর্তন লক্ষ্য করি , বিস্মিত হই আর নিরবে বলি, আমিও যেদিন স্যার হবো সেদিন ক্লাসের সবচেয়ে খারাপ শিক্ষার্থীরাই হবে আমার প্রিয়। স্যারের মত আমিও শিক্ষার্থীদের সাথে হরহামেশায় হ্যান্ডশেক করে তাদের ওই দুরন্ত -দুষ্টু মনের প্রেম-ভালোবাসার খবর নেব। এখনো রাস্তাঘাটে কারো সাথে হ্যান্ডশেক করলে হঠাৎ মনে ভাসে এই হাত কী কুড়িগ্রম জেলার ভ’রুঙ্গামারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালযের ক্রীড়া শিক্ষক শ্রী পরিমল চন্দ্র সাহার সেই হাত।

যে হাতে এসেম্বিলি ও স্কুল ফাঁকি দেয়ার জন্য, স্কুল ড্রেস না পড়ার জন্য, স্কুল পালিয়ে সিনেমা দেখার জন্য পাখনা, পিঠ ও পশ্চৎদেশ যখম হয়েছে বারবার..... । আহা ! সেইসব উচ্ছ্বল দিন। স্কুল, ক্লাস। পরিমল স্যার। আমার পরি স্যার আজ কোথায় ! আর আমি কোথায়..? যেখানেই থাকেন স্যার আপনাকে সশ্রদ্ধ শত নমস্কার ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.