আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

"মাথার কিছু অংশে গোল হয়ে হটাত চুল পড়ে যাওয়া আর হতাশায় বিপর্যস্ত হয়ে জীনে চুল নিয়ে গেছে বলে নিজেকে আড়াল করে রাখা সবার কাছ থেকে,ভেঙ্গে না পড়ে সমাধান খোজতে থাকুন।"

https://www.facebook.com/tanvir.mh মারুফ ঢাকায় একা থাকে। ভার্সিটিতে ভর্তির জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। হটাত একদিন ঘুম থেকে উঠে মারুফ খেয়াল করলো তার মাথার একটা অংশে একটু চুল নেই। ভাবলো গতকালে বাসের সাথে ধাক্কা খেয়ে মাথায় আগাত লেগেছিল সেটা থেকে হতে পারে। কিন্তু কয়েকদিন পর বিষয়টা সবার নজরেই আসলো।

মারুফ আয়না দিয়ে দেখে খুবই হতাশ হয়ে পড়লো। নিউমার্কেট থেকে কয়েকটা ক্যাপ কিনে ফেললো। মাথা ডেকে ঘুরে যেখানেই যেতে হয়। মানসিক ভাবে তৈরি হতে থাকলো টাক কে স্বাগত জানাতে। কয়েকদিন পর আবার সমান রকম ভাবে মাথার অপর আরেকটি পাশে হুবুহু গোল করে চুল নাই হয়ে গেলো।

কিন্তু অন্য চুল গুলি ঠিকই আগের মতই ঘন আছে শুধু ২ টি জায়গায় গোল হয়ে চুল চলে গেছে। মারুফ আর না পেরে কাছের এক হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার দেখালো। তিনি এটা নিয়ে তেমন কিছুই বলতে পারলেন না শুধু বললেন এই রকম অনেকেরই হয়। অনেকে দাড়িতে হয় অনেকের ব্রু তে অনেকের চুলে। সামান্য একটা ওষুধ তিনি দিলেন।

মারুফ খেতে থাকে। কিন্তু মনে একটা খুতখুত থেকে যায় কারণ সে জানে হোমিওপ্যাথিক কাজ করে জিমিয়ে ঘুমিয়ে। বন্ধুবান্ধবদের নানা কথা। দোস্ত জীনে তোর চুল নিয়ে গেছে। এই রকম আমাদের এলাকাতেও হইছে খারাপ জীনের কাজ এটা।

তোর চুল হয়তো ছারপোকা টাইপের কোন পোকা কামড়ে নিয়ে গেছে। রাতে একটু সাবধানে থাকিস। অবশেষে সে খুবই হতাশ হয়ে পড়ে নামকরা এক হাসপাতালের ত্বক বিশেষজ্ঞের কাছে যায়। নিজেকে একটু অন্য রকম রোগী ভাবে সে পরবর্তী ধাপের জন্য প্রস্তুত। তার ধারনা ডাক্তার অবাক হয়ে তাকে নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করবে।

কিন্তু ডাক্তারের কাছে গিয়ে দেখলো তিনি খুবই স্বাভাবিক আচরন করছেন তিনি এ ধরনের রোগী দেখে অভ্যস্থ মনে হচ্ছে। প্রেসক্রিপসানে লিখে দিলো “ALOPECIA AREATA” মারুফ জিজ্ঞেশ করলো কেন এটা হয়। ডাক্তার বললো বাসায় গিয়ে নেটে সার্চ দিয়ো বাবু পেয়ে যাবে,আর ৭ দিন পর আসবে এই ওষুধ গুলি খেয়ে। আমি কি মাথা নেড়া করে ফেলবো? কি লাভ? চুল যার পড়ে মাথা ন্যাড়া করলেও পড়তে থাকে শুধু মানসিক একটা সান্ত্বনা থাকে যে তোমার চুল পড়াটা দেখতে পারতেছোনা ন্যাড়া মাথার কারনে। মারুফ বাসায় এসে নেটে সার্চ দিয়ে অনেক কিছু বের করে ফেলে।

বুঝতে পারে হতাশা থেকে এই রোগের কারণ আরেকটা কারণ পারিবারিক। মাত্রাতিরিক্ত হতাশা থেকে হটাত মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়। কিন্তু মাত্র ৫% মানুষ এই ঝামেলায় পড়ে। মারুফ ভাবে ৯৫% থাকতে আমিই কেন ৫ % এর ভিতরে পরলাম!!! নেটে ট্রিটমেন্ট ঘেটে যা দেখে তা হল ৫০ % লোকের চুল এমনিতেই উঠে যায় ৬ থেকে ১২ মাসের ভিতর। যাদের চুল উঠতে দেরি হয় তাদের বিভিন্ন ধরনের স্প্রেসহ ২ থেকে ৩ টি ইনজেকশান নিতে হয় চুল খালি হয়ে যাওয়া জায়গায়টায়।

কিছুদিন পরই চুল উঠে যায়। তবে খুবই কম মাত্র ১% মানুষের চুল আর ফিরে আসেনা। ডাক্তারের কথামত ইনজেকসান ওষুধ সহ ধৈর্য ধরে ৬ মাস অপেক্ষার পর মারুফের চুল ফিরে এলো। দূর হল হতাশার,পূর্ণ উদ্যমে ফিরে এলো সে স্বাভাবিক জীবনে। (দ্বিতীয় ছবিটা ট্রিটমেন্টের পর) তাই হতাশায় পড়ে গেলে মানসিক ডাক্তারের শরণাপন্ন সবারই হওয়া উচিত।

আমাদের সমাজে মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়লে তাকে আমরা সহযোগিতার হাত না বাড়িয়ে পাগল বলে আখ্যায়িত করে তাকে আরও হতাশাগ্রস্থ করে দেই। কিন্তু সামান্য সহযোগিতায় সে ঘুরে দাড়াতে পারে তা আমরা ভাবিনা। সেগুলিকে পাত্তা না দিয়ে নিজেকে নতুন করে দাড় করাতে হবেই। হতাশা থেকে অনেক ভয়াবহ রোগ বাসা বেধে যায় নীরবে শরীরের প্রতিটা কোষে। এই ধরনের সমস্যা আপনার থেকে থাকলে ভেঙ্গে পড়বেন না।

ভালো কোন ডাক্তারের কথামত কিছু সময় ধৈর্য নিয়ে থাকুন। অবশ্যই আপনি সফল হবেন। তানভীর মাহমুদুল হাসান ৯/৮/২০১২  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.