আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ধর্মের চেহলাম নাস্তিকতায় নাস্তিকতার আড়ালে ধর্মদ্রোহীতা

"Science without religion is lame; religion without science is blind." - ধর্মহীন বিজ্ঞান হচ্ছে খোঁড়া বা বিকলাঙ্গ আর বিজ্ঞান ছাড়া ধর্ম হচ্ছে অন্ধ। -আলবার্ট আইনস্টাইন পৃথিবীর প্রতিটি সৃষ্টিরই নিজস্ব স্বকীয়তা বা বৈশিষ্ট্য আছে। এই স্বকীয়তা বা বৈশিষ্ট্য দিয়েই আমরা তার পরিচয় খুঁজি। আমরা বাড়ীতে একটা আমের চারা বুনি এ থেকে আমের আশায়। গোয়ালা বালতি নিয়ে গাভীর নীচে বসে দুধের আশায়।

কৃষক ক্ষেতে ধানের বীজ ছড়ায় অনুরুপ ধানের স্বপ্নে। অনন্ত আকাশের সূর্য্য জগতের একাংশে উদিত হয়ে আরেক অংশে অস্ত গিয়ে সদা জাগ্রত কর্তব্য পালনে আপনকে নিয়োজিত রেখেছে। সৃষ্টির আরেক মৌলিক উপাদান পানি উচ্চ ভূমি পাহাড় অথবা মেঘ হয়ে শূন্য থেকে পতিত হয়ে নদী-নালা,খালবিল হয়ে ধরাকে অবিরত স্রাত করে রেখেছে। কারও নিয়মে এতটুকু ব্যত্যয় নেই। প্রত্যেকেই যার যার আপন বৈশিষ্ট্য ধর্মে মহীয়ান।

ধর্ম শাস্ত্র ‘মহা ভারত’-এ বলা হয়েছে, ‘না মানুষ্যৎ তারপরং বাচ্যং”। অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তার সৃষ্ট জীবের মধ্যে মানুষ সর্বশ্রেষ্ঠ। ‘বাইবেল’ এ বলা হয়েছে-‘এড়ফ গধফব সধহ ধভঃবৎ যরং ড়হি রসধমব’- অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তা তাঁর আদলে মানুষ সৃষ্টি করেছেন। আল কুরআনের আলোকে মানুষ ‘আশরাফুল মাখলুকাত’ অর্থাৎ সৃষ্টির সেরা জীব। এভাবে বিশ্বের উল্লেখযোগ্য অপরাপর ধর্মেও একই কথা বলা হয়েছে।

জগতের সকল সৃষ্টি কেবল মাত্র মানব কল্যাণে নিয়োজিত। অর্থাৎ ক্ষুদ্র বৃহৎ সকল সৃষ্টিই মানুষের দাস। এখন একটা স্বাভাবিক প্রশ্নে আসি। আপনার বাড়ীতে যে চাকরটি আছে নিশ্চয় আপনি তার চেয়ে অর্থে-বিত্তে,জ্ঞানে-পান্ডিত্যে,শক্তিতে অনেক বেশি বলীয়ান। নইলে সে কেন আপনার দাসত্ব মানিবে?পরিবার সমাজ পেরিয়ে রাষ্ট্রীয় নীতিতেও আমরা অপেক্ষাকৃত বিজ্ঞ সর্বজ্ঞজনকে নেতা মানি সকলের মঙ্গলের জন্যই।

ক্ষুদ্র বৃহৎ সকল সৃষ্টিই মানব সেবায় নিয়োজিত। কালের কাল মহাকাল মানুষ তার সর্বজ্ঞতা দিয়েই এই মুনীবের দায়িত্বটি পালন করে চলেছে কেবল তার প্রাজ্ঞতার বলে। তাহলে মানুষ বিধাতার কতবড় সৃষ্টি একটু ভেবে দেখুন। বৈশিষ্ট্যতা নিয়ে আরেকটু বলি। ধরুন আপনি বাজারে মাছ কিনতে গিয়েছেন।

পছন্দসই মাছ কেনার পর তার তরকারী কিনবেন। বাজারে অনেক তরকারীও আছে। আপনী তার সবই কিনবেন না নিশ্চয়। তখন হিসাব করে দেখবেন কোন তরকারীটা আপনার মাছের জন্য মানানসই। আর কোন মসলাটা মাছ ও তরকারীর সুস্বাদু সৃষ্টিতে অনুঘটক।

সামান্য তরকারী বা মসলা থেকে যদি তার বৈশিষ্ট্যতা বা ধর্ম চেনা যায় তবে জগতের অবশ্যম্ভাবী মহা সৃষ্টি মানুষ ধর্মমুক্ত হয় কি ভাবে?মানুষও ধর্মমুক্ত নয়। ধর্ম অন্যসব সৃস্টির ক্ষেত্রে কেবল বৈশিষ্ট্যতার পৃথকে ম্রিয়মান। কিন্তু মানুষের ক্ষেত্রে মানব জাতির আত্ম পরিচেয়ের উপঢৌকনে ধর্ম একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান,সংশব্দ মতবাদ। ধর্মের সাথে মানুষের প্রতিটি ক্রিয়াকর্মের অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক। মানুষের মনোজগত থেকে শুরু করে রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, সাহিত্য-সংস্কৃতি প্রভৃতির সাথে ধর্ম অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।

সমাজ বিজ্ঞানীদের দ্ব্যর্থহীন ঘোষণা-‘ধর্মের সম্পর্ক শুধুমাত্র মনোজগতের সাথেই নয় বরং সমাজ ও সংস্কৃতি এবং সংস্কৃতির ধারক ও বাহকদের সাথে রয়েছে এর নিবিড় সম্পর্ক। ’ সংস্কৃতি হচ্ছে আরবী ‘তাহজিব’ এবং ইংরেজী ‘কালচার’ শব্দের বাংলা সমার্থক। সমাজ বিজ্ঞানীদের মতে সংস্কৃতি হলো-‘মানুষের বিশ্বাসলব্ধ মূল্যবোধে উদ্ভুত পরিশীলিত ও মার্জিত মানসিকতা। আর আভিধানিক অর্থে সংস্কৃতি বলা হয় গাছের ‘কাঁটা’ বা অপ্রয়োজনীয় অংশ ছেঁটে ফেলা। এই উদ্ভুত পরিশীলিত ও মার্জিত মানসিকতার পূর্ণাঙ্গ হেফাজতকারী স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা মানব সভ্যতার সূচনা থেকেই ধর্মকে সায় দাঁড়িয়ে রাখেননি।

পরিশীলিতার সেই পবিত্র পরিচ্ছন্নতায় মানুষের মাঝে এসেছে হিন্দু, বৌদ্ধ, ইহুদী, খৃষ্টান, ইসলাম, জৈন,শিখসহ বহু পবিত্রতার অমিয় বাণী। সমাজের একটা শ্রেণী ধর্মকে শুধু মসজিদ, মন্দির, গির্জার বিষয় ভাবেন, তারা হয়ত সমাজের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে যেমন অজ্ঞ; তেমনি অজ্ঞ ধর্মের সংজ্ঞা সম্পর্কেও। সকল ধর্মের দর্শন সকল ব্যাপারে অবশ্যই এক নয়। তবে কিছু বিষয় আছে যা সকল ধর্মেই সার্বজনীন। যেমন-শান্তির মহাবাণী সকল ধর্মই অকপটে বলে থাকে।

বিভিন্ন ধর্ম সৃষ্টিকর্তা সম্পর্কে বিভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছে। জীবন, মৃত্যু, সমাজ, ইহকাল, পরকাল, মানব গোষ্ঠীর উৎপত্তি সম্পর্কেও বিভিন্ন মত রয়েছে। কিন্তু কোনো ধর্মই ‘মালিক’-কে বা সৃষ্টিকর্তাকে অস্বীকার করেনি। বিশ্বাসীগণ সর্বদা মালিকের অধিনস্ততা স্বীকার করে তাঁর সন্তুষ্টির চেষ্টা করেন বা করবেন এটাই স্বাভাবিক। কারণ ধর্ম বলে সৃষ্টির সকল বিশালতাই মানুষের সেবায় নিয়োজিত।

আর মানুষেরা অধিনস্ত সৃষ্টির বৈশিষ্ট্য উদঘাটনেই আপনকে নিরাকার করে ফেলছে। ব্যাপারটা এ রকম রাজ্য অধিকার করতে এসে প্রজাতে পরিণত হওয়া। মানব সমাজে মুনিবের দৈন্যতায় চাকর সুযোগ খোঁজে,সর্বস্ব লুন্ঠন করে। কিন্তু সুখের বিষয় সকল সৃষ্টি যে মানুষের দাসত্বে নিয়োজিত সেই মানুষের দৈন্যতায় সামান্য সময়ের জন্যও তারা তাদের দায়িত্ব থেকে এতটুকু বিচ্যুত হয়নি। রক্ষক ভক্ষক হয়নি বা ক্ষেতের বেড়া ক্ষেত খেয়ে ফেলেনি।

সূর্য্য হঠাৎ দাঁড়িয়ে বিদ্রোহ করেনি। আকাশ শূন্য থেকে গোস্বা করে ভূ-মন্ডলে আছড়ে পড়েনি। বা পানিও উচ্চ থেকে নিম্নে প্রবাহের স্বাভাবিক ধর্ম থেকে ঠায় দাঁড়িয়ে জগতকে ডুবিয়ে দেয়নি। কেননা রাস্তায় গাড়ীগুলো স্বাভাবিক গতি হারিয়ে যেমন যানজটে মানুষের জীবনকে দূর্বিসহ করে তোলে প্রকৃতির কোন সৃষ্টিই তার আপন কর্তব্যে এমন শৈথিল্য দেখায়নি। এটা কি supervisor এর সঠিক নির্দেশনার ফসল নয়?কে সেই মহান supervisor?নিশ্চয় তিনি আমাদের সবার পালনকর্তা সৃষ্টির মহান ইশ্বর।

কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এরই মাঝে মানব সভ্যতায় একটি বৃহৎ অংশ দাঁড়িয়ে গেছে যারা মনে করে সৃষ্টিকর্তা বা মালিক বলে কেউ নেই, তারা মানুষকেই মনে করে সকল শক্তির উৎস। যারা সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসী নয় আমরা তাদের বলি নাস্তিক। বর্তমান বিশ্বের জনসংখ্যার ২.৩% মানুষ নিজেদের নাস্তিক বলে পরিচয় দেয় এবং ১১.৯% মানুষ কোন ধর্মেই বিশ্বাস করে না। জাপানের ৬৪% থেকে ৬৫% নাস্তিক অথবা ধর্মে অবিশ্বাসী। রাশিয়াতে এই সংখ্যা প্রায় ৪৮% এবং ইউরোপিয় ইউনিয়নে ৬% (ইতালী) থেকে শুরু করে ৮৫% (সুইডেন) পর্যন্ত।

ইউরোপের বর্তমান মুসলিম দেশ আলবেনিয়া। অথচ এটিই ছিল পৃথিবীর প্রথম এবং একমাত্র নাস্তিক দেশ। যার আয়ুস্কাল ছিল ১৯৬৭সাল থেকে ১৯৯১সাল পর্যন্ত। বিশ্বাস নিজস্বতা ছাড়িয়ে কিভাবে রাষ্ট্রযন্ত্র দখল করে আলবেনিয়া তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। এবার দেখি নাস্তিকতা কোন্থেকে এলো।

মুসলিম সভ্যতার পরাজয়ের পর থেকে ইউরোপের পাদ্রী শাসিত সমাজ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ফ্র্রান্স বিপ্লব (১৭৮৯-১৭৯৯) ও রেঁনেসা আন্দোলনের ফলে পশ্চিমা বিশ্বে শুরু হয় সেকুলার চিন্তাভাবনার গোড়া পত্তন যার পরিনতি হল বর্তমান ভোগবাদী সম্পূর্ণ ধর্ম বিমুখ বস্তুতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা। অবশ্য এর পিছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন নাস্তিক বায়োলজিষ্ট বিবর্তনবাদী বৈজ্ঞানিকরা যাদেরকে আলবার্ট আইনস্টানের ভাষায় বলা যায় খোঁড়া বিজ্ঞানি । বিবর্তনবাদ এতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল যে বিজ্ঞানের কিছূই জানেনা তারাও বলতে পারে "ডারউইন বলেছিল, মানুষ তো বাঁদর ছিল" । স্কুল কলেজের পাঠ্য পুস্তকেও বিবর্তনবাদকে বিজ্ঞানিক সত্য বলে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে। স্কুল জীবনে বিজ্ঞান শিক্ষকের মুখে শুনেছি “মানুষ বানর শ্রেণীর নব সংস্করণ।

কেবল প্রবাহমান কালের ধারায় আমরা আমাদের পিছনের লেজটা হারিয়েছি”। অথচ খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখনো চার্লস ডারউইনের বিবর্তনবাদ পড়ানো নিষিদ্ধ হয়ে আছে। কারণ, এই মতবাদকে মনে করা হয় খ্রিষ্টান ধর্মের পরিপন্থী। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান তার নির্বাচনী প্রচারাভিযানে বলেছিলেন, তিনি ডারউইনের বিবর্তনবাদে বিশ্বাস করেন না। তিনি হলেন একজন খাঁটি খ্রিষ্টান।

আধুনিক সভ্যতার এই যুগে যে দেশ প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানে যত বেশি ঊন্নত সে দেশ সামরিক শক্তিতেও তত বেশী দানব। পারমানবিক বোমা, ক্লাষ্টার বোমা আর প্রাণঘাতি রাসায়নিক অস্ত্রসহ গণ বিধ্বংশী অস্ত্র তৈরীতে তারা যতটা অগ্রগামী,শান্তি প্রতিষ্ঠায় ততটা নয়। বরং শান্তি ও গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে লাখো কোটি নিরাপরাধ মানুষ হত্যা করতে তাদের বিবেকে বাঁধেনা। বিংশ শতাব্দীর বিভিন্ন যুদ্ধ বিগ্রহে মানুষ হত্যার হলি খেলার বিভিন্ন পরিসংখানেই এ কথার প্রমান মিলে। প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ (১৯১৪ - ১৮) মৃত্যু সংখ্যা ১৫ মিলিয়ন রাশিয়ার গৃহ যুদ্ধ (১৯১৭ - ২২) মৃত্যু সংখ্যা ৯ মিলিয়ন সোভিয়েট ইউনিয়নে স্টেলিনের রাজত্বে (১৯১৭ - ৫৩) মৃত্যু সংখ্যা ২০ মিলিয়ন ২য় বিশ্ব যুদ্ধ (১৯৩৭ - ৪৯) মৃত্যু সংখ্যা ৫৫ মিলিয়ন চিনের গৃহ যুদ্ধ (১৯৪৫ -৪৯) মৃত্যু সংখ্যা ২.৫ মিলিয়ন এভাবে বসনিয়া, সোমালিয়া, কোম্বডিয়া, ভিয়েতনাম, আফগানিস্থান, বাংলাদেশ, কোরীয়া, ইরান ইরাক, গ্রীসের গৃহযুদ্ধ সহ আরো অনেক দেশের নাম উল্লেখ করা যায় যেখানে লাখো কোটি মানুষ প্রান হারিয়েছে ও আজও হারাচ্ছে।

সবচেয়ে পরিতাপের বিষয় ধর্মের লীলাভূমি খ্যাত মধ্যপ্রাচ্য ক্রুসেড পেরিয়ে আজ জিঘাংসার প্রলয় চত্বরে নিজের স্থান ক্রমশ পাকা করে নিচ্ছে। শক্তির কাছে ধর্মের এরকম অসহায়ত্বও নাস্তিকতা তৈরীতে উদ্দীপকের ভূমিকায় কাজ করছে। একটা বিষয় লক্ষ্যনীয যে নাস্তিকরা কিন্তু আলাদা কোন জাতি নয় বা ভিন গ্রহ থেকে আগত কোন পঙ্গপালের দলও নয়। তারা আমাদের সমাজেই কোথাও ধর্মের শিকড়ে জন্ম নেয়া আবার সেখানেই বেড়ে উঠা আমাদেরই সন্তান,ভাই-ভগ্নি আত্মীয়। পিতামাতার পারিবারিক অসহিন্ঞুতা দেখতে দেখতে সন্তান যেমন বখে যায় ধর্মের গোড়ামী,বিভিন্ন উপবিভাগে বিভক্তি ও কোথাও কোথাও নিজস্ব মতবাদের প্রাবল্যতার ধাক্কায় নিকটজনকে পরিণত বয়সে নাস্কিকতায় মোহবিষ্টে পতিত হতে দেখি।

কেনই বা নয়?ইহুদী ধর্ম একটা অথচ শ্রেণী-উপশ্রেণী অনেক। ধর্মগ্রন্থ "তোরাহ"ও (Torah)। কিন্তু তাকে জানতে জেনেসিস, এক্সোডাস, লেভিটিকাস, নাম্বার্স, ডিউটেরোনমি পড়তে হয়। পৃথিবীর বৃহত্তম ধর্ম খ্রিস্ট ধর্ম। ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থ তানাখ বা হিব্রু বাইবেলকে খ্রিস্টানরা পুরাতন বাইবেল বলে থাকে।

আর খ্রিস্ট ধর্মের শিক্ষা নতুন টেস্টামেন্ট বা নতুন বাইবেলে এ গ্রন্থিত হয়েছে। এখানেই শেষ নয়। ভ্যাটিকান হচ্ছে সারা পৃথিবীর ক্যাথলিক খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মক্কা। কিন্তু প্রটেস্টান্ট খ্রিষ্টান,পিউরিটান খ্রিষ্টানও খ্রিষ্ট ধর্মের বিভাজিত নীতি। অধিকন্ত ক্যাথলিকদের সাথে প্রটেস্টান্টদের যুগ স্বীকৃত বিভেদ রয়েছে।

ইসলাম এ পৃথিবীর সবচাইতে আলোড়িত ধর্ম। এক কোরআনে বিশ্বাসী মুসলমান সম্প্রদায়। কোরআন কেবল গ্রন্থ নয়। এটি পরিপূর্ণ জীবন বিধান। কিন্তু শিয়া, সুন্নি, কাদিয়ানী,খারেজী ইত্যাদি বিভিন্ন মতবাদ এর প্রসারণে ক্রমান্বয়ে পাথর হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

এর মাঝেও আছে মৌলবাদ,জঙ্গিবাদ,সাম্প্রদায়িকতার কালো ছায়া। হিন্দু ধর্ম,বৌদ্ধ ধর্মসহ প্রায় সকল ধর্মই শ্রেণী স্বাতন্ত্রতায় বিভাজিত হয়ে আছে। ধর্ম বিভাজনের এই জটিল সমীকরণ মুক্ত বুদ্ধি চর্বনে নাস্তিকতা তৈরীতে পাথেয় হয়ে আছে। এখন ভাবতে পারেন এই যদি হয় ধর্ম তবে ধর্মহীন হয়ে থাকাটাই ভালো। জটিল বিভাজন ও নৃশংসতা ছাড়া ধর্ম আর কি দিল! আগেই বলেছি সকল সৃষ্টির মধ্যে মানুষই সর্বোত্তম, সুন্দর ও বিবেকবোধ সম্পন্ন।

বিবেক কখনো খণ্ডিত বিষয়ে আস্থাশীল হতে পারে না, পরিতৃপ্তিও পেতে পারে না। মানব জীবনের পূর্ণ বিকাশের জন্যে দরকার বিশ্বাস এবং স্থিতিশীল আস্থা। ধর্মীয় বিশ্বাস ও সংস্কৃতি মানুষের জীবনে সংহতি তৈরি করে এবং সৎ কাজের অনুভুতি প্রদান করে। কেবল ধর্মীয় দর্শনের মাধ্যমে মানুষ নিজে নিয়ন্ত্রিত থাকার প্রচুর মনোবল পায়, শান্ত থাকে মানুষের আত্মা। মানুষের মনোজগতের প্রবণতাসমূহ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়,-যারা সত্য বিশ্বাস করে, আত্মার শক্তিতে আস্থাশীল, আত্মাকে পরিশুদ্ধ রাখে এবং মহান প্রভুর সন্তুষ্টি পাওয়ার আশা করে, তাঁর অধীনস্ততা স্বীকার করে নেয় এবং নিজের ধর্মদর্শনে অটল থাকে, তাদের দ্বারা খুব কমই অন্যায়, অবিচার, হানাহানি সংঘটিত হয়।

যা হোক যেহেতু ধর্ম মানুষের প্রতিটি ক্রিয়াকর্মের সাথে নিবিড় সম্পর্ক রাখে এবং একে প্রভাবিত ও নিয়ন্ত্রণ করে, তাই আর মানুষের পক্ষে ধর্মকে উপেক্ষা করা সম্ভব নয়। আজকের সমাজের সকল অন্যায়, অত্যাচার, শোষণ, নির্যাতন, অনিয়ম প্রভৃতি অপকর্মকে চির ধ্বংস করার অঙ্গিকার নিয়ে প্রতিটি মানব সন্তানের উচিৎ নিজ ধর্মের অনুশাসনের প্রতি দৃঢ় আনুগত্য স্বীকার করা। স্মরণ রাখতে হবে, একমাত্র ধর্মই পারে মানব সমাজে সুখ-শান্তি, নিয়ম-শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে। তাই সমাজের প্রতিটি স্তম্ভে আজ ধর্মের গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি। নাস্তিক অবিশ্বাসীদের আচরণের প্রতি সকলের সতর্ক দৃষ্টি থাকা উচিত।

কারণ, একমাত্র অবিশ্বাসীদের দ্বারাই সম্ভব মানবতার স্বার্থ বিরোধী কাজে সংগঠিত হওয়া, মানুষকে অত্যন্ত কৌশলে পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ করা। শোষণ, নির্যাতন, খুন, রাহাজানির মতো অপকর্ম করতেও তাদের না আছে কোনো কিছুর ভয়, না আছে কোন প্রকার লজ্জা। ওরা ‘মানুষ সকল শক্তির উৎস’ বলে বিশ্বাস করে বলেই মানুষের উপর মানুষের প্রভুত্ব সৃষ্টি করে বসে। এসব তাদের কর্মকাণ্ড এবং দর্শন থেকেই স্পষ্ট। ইদানিং এদের কিছু অংশের মধ্যে দেশে দেশে দিনদিন মুক্ত চিন্তা, সংশয়বাদী চিন্তাধারা এবং ধর্মসমূহের সমালোচনাসহ উগ্র আক্রমন ব্যাপকভাবে প্রসার ঘটছে।

বিশ্ববাসীর সামনে এটাই এখন চিন্তার কারণ। এদের লক্ষ্য হচ্ছে মানুষকে সষ্ট্রার ব্যাপারে বিভ্রান্ত করা। মুক্ত চিন্তার আড়ালে ধর্মদ্রোহীতা। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন " আমি আকাশ, পৃথিবী এবং এ উভয়ের মধ্যবর্তী স্থানে যা কিছু আছে কোন কিছূই অনর্থক সৃষ্টি করি নাই। অনর্থক সৃষ্টি করার ধারনা উহাদের যাহারা কাফির (স্রষ্টাতে অবিশ্বাসী), সুতরাং কাফিরদের জন্য রহিয়াছে জাহান্নামের দুর্ভোগ।

-সুরা সোয়াদ,সুরা নং-৩৭ আয়াত নং-২৭। লেখাটি সাজাতে সহায়তা নিয়েছি- (১)Childish superstition: Einstein's letter makes view of religion relatively clear the guardian/2008/may/12/ Click This Link (২)ইহুদি ধর্ম উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে পৃষ্ঠাটির শেষ পরিবর্তন হয়েছিল ১৫:৫৫টার সময়, ১২ মার্চ ২০১৩ তারিখে। Click This Link (৩)খ্রীস্ট ধর্ম উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে পৃষ্ঠাটির শেষ পরিবর্তন হয়েছিল ০৮:২৮টার সময়, ১১ মার্চ ২০১৩ তারিখে। Click This Link (৪)জীবন ধর্ম সংস্কৃতি By : syed mobnu Click This Link (৫)বিজ্ঞান ও ধর্ম by Nil Akaser Nirupoma Niru Click This Link (৬)মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশীদের ভবিষ্যৎ – এবনে গোলাম সামাদ Written by Tanvir Hasan Oct 30, 2012 Click This Link (৭)ভ্যাটিকানের বাতাসে অদ্ভুত এক পুরোনো গন্ধ লতিফুল ইসলাম শিবলী দৈনিক ইত্তেফাকশুক্রবার, ৮ মার্চ ২০১৩ Click This Link (৮)কোরআন শরিফ সহজ সরল বাংলা অনুবাদ আল কোরআন একাডেমী, লন্ডন W1B 2QD (৯)বাইবেল কোরআন ও বিজ্ঞান ডা: মরিস বুকাইলি (১০)নাস্তিক্যবাদ উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে পৃষ্ঠাটির শেষ পরিবর্তন হয়েছিল ২২:০৭টার সময়, ৮ মার্চ ২০১৩ তারিখে। Click This Link (১১)পৃথিবীর প্রথম নাস্তিক দেশটি কেমন ছিল? by মাহিরাহি পোস্ট কাল ০৫ ই অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৫:২১ Click This Link (১২)State atheism From Wikipedia, the free encyclopedia The page was last modified on 20 April 2013 at 01:21. http://en.wikipedia.org/wiki/State_atheism ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ২০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.