আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশের ফিতরা

ফিতরাহ নির্ধারন সম্পর্কিত আমার প্রাসংগিক কিছু ভাবনা এবং কিছু প্রশ্ন আছে.. আশা করি ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা এই সব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করব। প্রথমেই ফিতরাহ সম্পর্কিত হাদীসগুলো নিয়ে কিছুটা আলোকপাত করা যাক.. নিম্নে উল্লেখিত সব গুলো হাদীস সহীহ বুখারিহ শরীফ থেকে নেয়া হয়েছে। ১. হযরত ইবনে উমর (রা) কতৃক বর্ণিত আছে যে, মহানবী মুহাম্মদ (স) ফিতরাহ হিসেবে এক ছা’ খেজুর, অথবা এক ছা’ বার্লি প্রত্যেক মুসলিম নারী, পুরুষ এমনকি নাবালক এর উপর ওয়াজিব করেছেন এবং ঈদ-উল-ফিতরের নামাজের আগেই ফিতরাহ প্রদান এর প্রতি তিনি জোর প্রদান করেছেন। এখানে উল্লেখ্য যে এক ছা’ সমান প্রায় ৩ কেজি হিসাবে ধরা হয়। ২. বুখারী শরীফ এর অন্য একটি হাদিছে হযরত আবু সাঈদ (রা) কতৃক বর্ণিত, “আমরা সাধারনত জনপ্রতি এক ছা’ বার্লি সদকাতুল ফিতরাহ হিসেবে প্রদান করে থাকি।

” ৩. অন্য একটি হাদীস হযরত আবু সাঈদ আল-খুদরী (রা) বর্ণিত, “আমরা সাধারনত এক ছা’ দৈনন্দিন খাদ্য (meal) বা এক ছা বার্লি অথবা এক ছা’ খেজুর বা এক ছা’ পনির বা এক ছা’ কিসমিস যাকাতুল ফিতর হিসেবে প্রদান করি। ” ৪. হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর (রা) কতৃক বর্ণিত, “নবীজী সকল মুসলিমকে আদেশ প্রদান করেন এক ছা’ খেজুর বা এক ছা’ বার্লি যাকাত-উল-ফিতর হিসেবে প্রদান করতে। ” ৫. হযরত আবু সাঈদ আল-খুদরী (রা) কতৃক বর্ণিত যে “নবীজির জীবদ্দশায় আমরা এক ছা’ খাদ্য (food) অথবা এক ছা’ খেজুর অথবা এক ছা’ বার্লি, অথবা এক ছা’ কিসমিস সদকাতুল ফিতর হিসেবে প্রদান করি। ” খলিফা মুয়াবিয়া ইবন আবু সুফিয়ান এর আমলে ফিতরাহ হিসেবে গম এর প্রচলন শুরু হয়। তিনি আরও বলেন যে এক মুদ্দ (mudd) গম সমান উপরে বর্ণিত যে কোনও পণ্যের ২ মুদ্দ (mudd)।

৬. অন্য একটি হাদিছে হযরত আবু সাঈদ আল-খুদরী (রা) বর্ণনা করেন যে, “নবীজী (স) এর জীবদ্দশায় আমরা ‘খাদ্য’ সদকাতুল ফিতর হিসেবে গরিবদের প্রদান করি। আর আমাদের খাদ্য হল সাধারনত বার্লি, কিসমিস, পনির অথবা খেজুর। ” ৭. হযরত নাফি (রা) বলেন যে সে সময় মানুষ খেজুর, বার্লি, কিসমিস, পনির এর পরিবর্তে অর্ধ ছা’ গম ছদকাতুল ফিতর হিসেবে প্রদান করা শুরু করে। তিনি বলেন হযরত ইবনে উমর (র) সাধারনত খেজুর ফিতরা হিসেবে প্রদান করতেন। কিন্তু একবার মদিনা শরীফ এ খেজুর এর আকাল দেখা দিলে তিনি (উমর) বার্লি ফিতরা হিসেবে প্রদান করেন।

সহীহ বুখারী শরীফে ফিতরাহ নিয়ে আমি ১০টি হাদিছ খুঁজে পেয়েছি এবং তার মধ্যে উপরে উল্লেখিত ৭ টি পণ্যসংক্রান্ত। অধিকাংশ হাদিছে নবীজী যেসব পণ্য ফিতরাহ হিসেবে প্রদান করেছিলেন তার কথা বর্ণিত আছে। এখত্রে লক্ষ্যণীয় যে পরবর্তীতে খলিফা আমলে ফিতরাহ এর পণ্য তালিকায় গম এর প্রচলন শুরু হয়। অর্থাত্, এ থেকে একটা বিষয় আমরা বলতে পারি যে, দৈনন্দিন খাদ্য হিসেবে আমরা সচরচর যে খাদ্যকে প্রধান খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে থাকি, তার মূল্যমান ধরে ফিতরা প্রদান করা যেতে পারে। যাকাত-উল-ফিতরাহ সংক্রান্ত কয়েকটি মুসলিম ওয়েবসাইট ঘেঁটে আমি যা পেলাম তার সারাংশ হল যে মুসলিম স্কলারগণ যে দেশের যা প্রধান খাদ্য তাকে তার উপর ফিতরাহ প্রদান করার জন্য তাঁদের মতামত প্রদান করেছেন।

যার দেশে রুটি প্রধান খাদ্য সে গম এর উপরে, যার দেশে বার্লি সে বার্লির উপরে, আর যেখানে ভাত সেখানে চালের উপর ফিতরাহ নির্ধারিত হওয়ায়ই যুক্তিসঙ্গত। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.