আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছিনতাইয়ের কবলে পড়ার কিছু তিক্ত এবং মজার অভিজ্ঞতা!! সাথে সবার প্রতি কিছু অনুরোধ।

গান পাগলা সহজ সরল মন ভোলা তবে অন্যায়ে প্রতিবাদী ঢাকা শহরে ছিনতাই খুবই কমন একটা ব্যাপার, কিন্তু যে একবার খপ্পরে পড়ে সে বুঝে কতটা আনকমন। ছিনতাইয়ের পয়জন টা এখন মহামারিতে রূপ নিয়েছে, প্রশাসনের নিরব ভুমিকাই এর প্রধান কারন, এমনওতো আছে সারা মাষ কষ্ট করে বেতনের টাকা নিয়ে বাসায় যাচ্ছে কিন্তু পথিমধ্যে একটা.................. অনেক কষ্টে টাকা জমিয়ে একটা ল্যাপটপ আথবা অফিস থেকে ব্যাবহার করার জন্য দেওয়া ল্যাপটপ নিয়ে বাসায় যাচ্ছে ........................... যদি এমন কিছু হয় ঐ লোকের অবস্হা একবার চিনতা করুন। ইদানিং ঢাকার রাস্তায় প্রায়ই দেখা যায় একটা মটর সাইকেল সাঁই করে চলে গেল, এর কিছু দুরে একটা রিকসা আসছে , রিকসায় অসহায় একজন চিৎকার করছে, কিন্তু ততক্ষনে তার ব্যাগ সহ মটর সাইকেল পগারপার। রাস্তার মধ্যে দেখছি একটা লোককে ৮-১০ জন ঘিরে রেখেছে, এর কিছুক্ষন পর দেখলাম লোক গুলো চলে গেলো আর লোকটা কাঁদছে অথবা আপসোস করছে, তার সব নিয়ে গেছে, আসলে এসব ব্যাপারে আপনি কিছু জিজ্ঞেস করবেন বা কিছু করতে যাবেন , আপনি নিজেই বলির পাঁঠা হয়ে যাবেন, এমনও দেখেছি একজনকে কয়েকজন মিলে চোর বলে মারছে, কেউ ধরছেনা, সিনেমার শেষ দৃশ্যে জানলাম উনি চোর বলে চিৎকার দিয়েছিলেন, উলটো চোর বলে ওনাকে মেরেছে এবং সব নিয়ে গেছে। আমি বেশী দিন হয়নি বিগত ৮-১০ বছর যাবৎ ঢাকায় আছি, সঙ্গত কারনে সপ্তাহে ৩-৪ দিন বাসায় ফিরতে বেশ রাত হয়, এরই মাঝে কয়েক বারই মামুদের সাথে সাক্ষাত হয়েছে, তবে আল্লাহর অশেষ রহমতে এখন পর্যন্ত কোন সমস্যা হয়নি।

প্রথম যে অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা গত বছরের শেষের দিকের ঘটনা, আমি আর আমার একটা বন্ধু নিউ এলিফ্যান্ট রোড দিয়ে বাটা সিগনাল যাচ্ছিলাম হঠাৎ আমি ওর থেকে একটু সামনে এগিয়ে গেলাম, কিছুক্ষন পর বুঝলাম ও আমার পাশে নেই, দেখলাম ও একটা লোকের সাথে কথা বলছে, আমি ভাবলাম ওর মনে হয় পরিচিত কেউ, কিন্তু ওদের পাশে আমি তিন চার জনকে ঘোরাপেরা করতে দেখলাম, আমার সন্দেহ হল, কারণ আমি আগে থেকেই জানি এলিফ্যান্ট রোডে হাজার হাজার মানুষের মধ্যেও ছিনতাই হয়, যাই হোক কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম এবং শুনলাম বড় ভাই বলছেন তোর বাসা কই???? রাস্তায় কেমনে চলতে হয় জানস না??? কেউ লাত্তি খাইলো না উস্টা খাইলো দেখবিনা?? এর মধ্যে দেখি পাশের লোক গুলাও সক্রিয় হয়ে উঠছে, আমি তখন আমার ফ্রেন্ডকে জিজ্ঞেস করলাম কি সমস্যা, তখন ঐ লোকটা আমাকে প্রশ্ন করলো, ওওওও দুজন এক লগে???? আমি বললাম হ্যাঁ, উনি বললেন তুই কই থাকস?? আমি বললাম কি আমার বাসায় যাবেন নাকি??? তখন আমার ফ্রেন্ড বললো উনার পায়ের সাথে একটু টাচ লাগসে আমি সরি বললাম তাও উনি উল্টা পাল্টা কথা বলতেসে, আমি বললাম ঠিক আছে ভাই আমিও সরি, ও খেয়াল করেনি, তখন উনি বললো তুই কি করস? আমি বললাম এইতো ঘুইরা ফিরা খাই আপনে কি করেন? পড়াশোনা করেন? কোথায় করেন ঢাকা কলেজ না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়? আপনার পায়ের সাথে একটু লাগসে এজন্য সরি কইলাম, তারপরেও আপনে চোদ্দগুষ্টির বায়োডাটা নিচ্ছেন,পায়ে ধইরা মাফ চাইতে ওইবো নাকি? আমি কে জানাটা কি বেশী জরুরী? অবশ্যই, আপনে আমারটা জানসেন না? তখন উনি আমার আর আমার ফ্রেন্ডের ঘাড়ে হাত দিয়ে আমার দিকে ফিরে বললেন এনে ৫০-৬০ টা দোকান দেখতাসস না, যাইয়া জিগা স্বাধীন ভাই কেডা? ...কির পোলা এন দিয়া সিশা ভইরা দিমু ওইহান দিয়া বাইর ওইয়া যাইবো, চিনস? আমি তখন ক্ষেপে গেলাম, বললাম ধুর মিয়া সিশার ভয় দেখান বাইর করেন দেখি, শুরু করলাম চিল্লা চিল্লি তখন পাশের থেকে একজন আইসা বললো ভাই অরা এলাকার ছোট ভাই আপনারে চিনে নাই, ছাইরা দেন, আমি বললাম আমারে ধরেই তো নাই ছাড়বো কেমনে কতা কইবি না বাইচা গেসস। আমি আর কিছু বলি নাই। ওরা গলির ভিতর ঢুকে গেল। এর পররের ঘটনা আমি সন্ধা ৮.৩০-৯টার দিকে আসাদ গেইট দিয়ে মো:পুর যাচ্ছিলাম,কানে হেডফোন ছিল, গান শুনতে শুনতে রিলাক্সে হাঁটছিলাম,যখন আমি গীরজাটা ক্রস করলাম হঠাৎ আমার কাঁধে একজন এসে হাত দিলো এবং শক্ত করে ধরে বললো তোমার বাসা কোন যায়গায়? আমি ওর চেহারার দিকে তাকালামনা আমি মনে করলাম হয়তো আমার কোন ফ্রেন্ড হবে, কিন্তু সাথে সাথে ওর হাতের দিকে আমার নজর যায়, দেখলাম ও যেই হাতে আমাকে ধরেছে সেই হাতেই একটা ক্ষুর, তখনই আমি বুঝে ফেললাম এবং তার চেহারা দেখলাম অপরিচিত একটা ছেলে, আসে পাশে আরও ৩-৪ জন, আমি ভয় পাইসি তবে সেটা প্রকাশ করি নাই, এক ঝাড়া দিয়ে আগে ওর হাত থেকে ছুটলাম এবং বললাম তুই গায়ে হাত দিসস ক্যান? ...রের বাচ্ছা গায়ে দিলি ক্যা? ও তখন ক্ষুরটা পকেটে নিয়ে বললো সুমন না? আমি তো সুমন মনে করছিলাম, আমি বললাম তোর বাপ সুমন এনে মরতে আইসে? পাসের থেকে ওদের একজন আমাকে বললো ভাই আপনে গালি দিচ্ছেন ক্যান উনি তো আপনারে চিনে নাই, এর মধ্যে আমি তো আমার চিল্লা ফাল্লা, গালা গালি কইরা মানুষ জড় করে ফেলছি, আমার ফ্রেন্ডের নাম্বারে ফোন দিচ্ছি, পুরাই ক্রেজী............., তখন ওদের একটা আমারে বলে সমস্যা কি এত ফাল পাড়তাসস ক্যান, আমি ফকিরনির বাচ্ছা কইয়া তেড়ে গেলাম, ওরা সবাই মিলে দিলো দৌড়। কাহিনি শেষ রিসেন্টলি যেটা হয়েছে আমি আর আমার একটা ফ্রেন্ড রিকসা নিয়ে রাত ১২.১৫ দিকে আসাদ গেইট থেকে সেন্ট্রাল রোড যাচ্ছিলাম, আমাদের দুজনেরই হাতে মোবাইল ছিল, হঠাৎ একটা বাইক আমাদের ডান পাশে এসে স্লো করলো, দুজনই দেখতে শুনতে বেশ, চোখ গুলা লাল লাল, বললো এই আপনারা এত রাতে কোথায় গেছেন?? এই রিকসা সাইড কর, আমি তো যা বুজার বুজলাম, আমি বললাম আমরা কোথ্তেকে আসলাম সেইটা আপনারে জিগাইতে অইবো, রিকসাওয়ালাকে খুব জোরে ধমক মেরে বললাম তোরে থামতে কইছি টান দে ব্যাটা, ওদের একজন বললো এই ওরে নামা তো, তবে বাইক থেকে একজনও নামলোনা, আমি তো সেই আগের থিউরি কাজে লগালাম কোন ভয় পামুনা, আগের মতই, তবে এবার উলটা জেরা করা শুরু করলাম, বললাম এত রাইতে জালাইতেসেন ক্যান, বাসা কোন জায়গায়?........আর এটা বেশ কাজে দিলো, বাইকের গতি বাড়িয়ে রাস্তা পার হয়ে ধনমন্ডির দিকে ঢুকে গেল।

যাওয়ার সময় একজন মাথা নেড়ে নেড়ে বলে গেল বাইচা গেসো মামু সদকা দিয়া দিয়ো। যাই হোক হয়তো ভাগ্যের জোরে আমার কিছু হয় নি তবে আপনাদের প্রতি আমার কিছু কথা আছে। ১। রিকসা যোগে রাতে কোথাও গেলে সাবধানে থাকবন, চোখ কান খোলা রখবেন কারন রতের বেলাই বেশী ছিনতাই হয়, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সেল ফোন বের বের করবেন না। ২।

রিকসায় থাকা অবস্হায় যদি ল্যাপটপ ব্যাগ সথে থাকে, তবে অবশ্যই ব্যাগের বেল্ট টা কাঁধে জড়িয়ে নিবেন। ৩। যদি ওদের পল্লায় পড়েই যান, সাহস ধরে রাখার যথেষ্ঠ চেষ্টা করবেন, কারন আপনি যতটুকু ভয় পাবেন, তার চাইতে ওরা কয়েকগুন বেশী ভয়ে থাকে, ভয় পেলেও বুঝতে দিবন না, আর যাই হোক সে যতই ভয় দেখাক সে অন্তত আপনাকে খুন করবে না। ৪। সবশেষ কথা হল টাকা-পয়সা ও সম্পদের চাইতে, জীবনের মূল্য অনেক, শেষ পরজন্ত হয়ত সব নিয়ে যাবে বাট আপনি সাবধান থাকবেন, কারন অনেক সময় ওরা যাওয়ার সময় ক্ষতি করে দিয়ে যায়, যাতে আপনি চিৎকার না করতে পারেন।

জানি লেখায় অনেক ভুল আছে, ভুল ত্রুটি মাফ করবেন, বাংলা লিখতে পারিনাতো, ফোনেটিক দিয়ে লিখেছি।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ৩৮ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.