আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শাকিব খানের প্রতি অশোভন বিশেষণ প্রয়োগ এবং অশ্লীল ভাষা ব্যবহার বন্ধ করুন।-গনসচেতনতা তৈরি মূলক পোস্ট

জ্ঞানের সাগরের এক ফোঁটা জল এখনো গ্রহণ করতে পারিনি। তবুও নিজেকে সবজান্তা বলি। সকলকে কিছু জানাতে পারার জন্যই লিখে থাকি। শুরুতেই বলে রাখা ভালো, যে সকল মানুষ শাকিব খানের নামের সাথে ‘হিজড়া’ অপরিহার্য অংশ হিসেবে যুক্ত করেন আমি তাদের মধ্যে নই। শাকিব খানকে আমি সিনেমার একজন কুশলী হিসেবে দেখি – তিনি অভিনেতা এবং তিনি নায়ক।

শাকিব খানকে হিজড়া হিসেবে ট্যাগ করার ফলে একটা জিনিস ফুটে উঠে। সেটা হল- আমরা মানবতা, মানবিক অধিকার ইত্যাদির কথা বলে মুখে ফেনা তুলে ফেললেও হিজড়াদেরকে এখনো ক্ষুদ্র এবং নিকৃষ্ট জ্ঞান করি এবং কাউকে গালি দেয়ার সময় সমাজেরই আরেকটি অংশের দিকে আঙ্গুল তুলে দিই। তাকে হিজরা বলে প্রায়ই উল্লেখ করা, যেই বিশেষণের মাধ্যমে একজন পুরুষকে গালাগাল করা হয়ে থাকে, এর কারণটা কি? গত ২১শে মার্চ ২০১২ তারিখে সরকার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১০ ঘোষনা করেছে। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে ২০১০ সালের সেরা অভিনেতা শাকিব খান। ‘ভালোবাসলেই ঘর বাধা যায় না’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য শাকিব খান এই পুরস্কার পেয়েছেন।

ত্রিভুজ প্রেমের গল্প নিয়ে নির্মিত এই সিনেমায় শাকিব খানের বিপরীতে অপু বিশ্বাস এবং রোমানা অভিনয় করেছেন। ১৯৯৯ সালের ২৮ মে সোহানুর রহমান সোহানের পরিচালিত সিনেমা ‘অনন্ত ভালোবাসা’ সিনেমার মাধ্যমে সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে প্রবেশ করার এক যুগ পরে তিনি রাষ্ট্রীয় ও সর্ব্বোচ্চ খেতাব জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। শাকিব খানকে অভিনন্দন। শাকিব খানের এই পুরস্কার প্রাপ্তিতে প্রশংসার পাশাপাশি নিন্দা ও ব্যঙ্গাত্মক বিভিন্ন মন্তব্য আলোচনা পড়ার সুযোগ আমার হয়েছে। শাকিব খানের নামের সাথে অপরিহার্য অংশ হিসেবে ‘হিজড়া’ যোগ করে বিভিন্ন মন্তব্যগুলোর মধ্যে একটি বিষয়ই বেশ ভালো ভাবে ফুটে উঠেছে, তা হল – শাকিব খান এই পুরস্কারের যোগ্য ছিলেন না, এই পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে দেশের চলচ্চিত্রে দুর্দশার চিত্র আরেকটু স্পষ্টভাবে ফুটে উঠল ইত্যাদি ইত্যাদি।

এই ধরনের মন্তব্যগুলোর বিপরীতে চিন্তা ভাবনা করতে গিয়ে কিছু প্রশ্ন মাথায় আসল। তাদের মধ্যে সবচে’ গুরুত্বপূর্ণ হল - ১. শাকিব খানকে কেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দেয়া যাবে না? ২. শাকিব খানকে বাদ দিয়ে কাকে পুরস্কার দেয়া যেত? ৩. শাকিব খানকে বাদ দিয়ে যদি অন্য কাউকে চলচ্চিত্র পুরস্কার দেয়া যেত তবে কেন দেয়া হল না? ৪. শাকিব খান কি ভালো সিনেমার অন্তরায়? ৫. শাকিব খান যদি ভালো সিনেমার অন্তরায় হয় তবে সমাধানের উপায় কি? আপনারা নিজেই বিচার করে বলুন, উপরের প্রশ্নগুলোতে আপনাদের বিবেচ্য উত্তর বসিয়ে চিন্তা করুন, বাংলাদেশের সিনেমা জগতের বর্তমান দুর্দশার পেছনে শাকিবের কোনো দোষ রয়েছে কিনা। শাকিবের দোষ কি এটাই যে, এফডিসির চরম দুর্দশাই তিনিই এফডিসিকে লাভের মুখ দেখাচ্ছেন? তাঁর দোষ কি এটাই যে, একটি দুটি ছবি না করে তিনি প্রচুর ছবি করেছেন? তবে জেনে রাখুন, তাঁর প্রত্যেকটি ছবিতে অভিনয় করার মাধ্যমে তিনি লাখো দর্শককে আনন্দ দিয়েছেন। তাঁর অভিনয়ের ফলেই অসংখ্য কলাকুশলী জীবিকা নির্বাহ করতে পারছেন। তিনি একাই যেমন এফডিসিকে টিকিয়ে রেখেছিলেন এতদিন তেমনি আনন্দ দিয়ে গেছেন শ্রমিক শ্রেণীকে।

বর্তমানে যারা চলচ্চিত্রের মুল দর্শক। তিনি এতদিন অভিনয় না করলে বন্ধ হয়ে যেত চলচ্চিত্র শিল্প। বছরে দু-একবার মনপুরা-গেরিলা এরকম সিনেমার জন্য নিশ্চয়ই হল মালিকেরা হল খুলে সারা বছর মাছি মারবে না আরেকটি ব্যাপার উল্লেখ্য যে, একজন অভিনেতার অভিনয় কতটা ভাল হবে তার পেছনে মূল অবদান থাকে চিত্র পরিচালকের। যেমন, শাকিব খান "সুভা" সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন আবার প্রচুর নিম্নমানের ছবিতেও অভিনয় করেছেন। তেমনি, রিয়াজ "দারুচিনি দ্বীপ" সিনেমাতে করেছেন অনবদ্য অভিনয়।

আবার আমরা তাকে অনেক সিনেমাতেই দেখেছি যেখানে তাকে অভিনেতা মনে হত না, অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে ব্যস্ত থাকতেন সিনেমাজুড়ে। অতএব, শাকিব খানের প্রতি এরুপ অশোভন আক্রমণ বন্ধ করুন। ব্লগে উল্টা-পাল্টা পোস্ট দেওয়া বন্ধ করুন। অকারনে একজন মানুষকে যে কিনা চরম প্রয়োজনে দেশের সিনেমাশিল্পকে ছেড়ে যায়নি তাকে নিয়ে এরুপ করার কোনো মানে নেই। মনে রাখুন, তিনি আমাদের সিনেমা শিল্পকে কি দিয়েছেন।

তাঁর এরুপ কর্মে তাকে ধন্যবাদ প্রদান বাদ্ধতামূলক। উল্লেখ্য, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দুস্থ তহবিলে শাকিব খানের ২৫ লাখ টাকা প্রদান করেন। গেল ঈদে দেশটিভিতে প্রচারিত ‘কে হতে চায় কোটিপতি’-এর বিশেষ পর্বে শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস যৌথভাবে অংশ নিয়ে জিতে নেন সাড়ে ১২ লাখ টাকা। এর সঙ্গে শাকিব খান যোগ করেন তার ব্যক্তিগত উপার্জনের সাড়ে ১২ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে ২৫ লাখ টাকা দুস্থ শিল্পীদের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করেছেন তিনি।

এ সময় চলচ্চিত্রের সিনিয়র শিল্পী ও সমিতির অন্য সদস্যদের উপস্থিতিতে শাকিব খান বলেন, "চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের আগে আমি অঙ্গীকার করেছিলাম- দুস্থ শিল্পীদের অনাহারে-অর্ধাহারে বিনা চিকিৎসায় মারা যেতে দেবো না। তাদের কল্যাণের জন্য ৫০ লাখ টাকার একটি তহবিল গঠন করবো। আমার এই প্রতিশ্র“তিকে কেউ কেউ তখন আকাশ-কুসুম কল্পনা বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, সদিচ্ছা থাকলে আকাশ-কুসুম কল্পনাও বাস্তবায়ন করা সম্ভব। শাকিব খান আরও বলেন, আমি আমার অঙ্গীকার পূরণের জন্য আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছি।

আপাতত শিল্পী সমিতির দুস্থ কল্যাণ তহবিলে ২৫ লাখ টাকা জমা হলো। আমি প্রতিশ্র“তি অনুযায়ী তহবিলে ৫০ লাখ টাকা পূরণ করার জন্য কাজ করছি। এ উদ্দেশ্যে দাতা ও স্পন্সরদের সঙ্গে কথাবার্তাও বলেছি। তারা আমাকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। এ ছাড়াও দুস্থ শিল্পীকল্যাণ তহবিলের জন্য শিল্পী সমিতির উদ্যোগে একটি চ্যারিটি কালচারাল শো করার পরিকল্পনা আমাদের আছে।

" শাকিব খান সম্পর্কিত দুটি উল্লেখযোগ্য পোস্ট- দয়া করে শাকিব বিরোধীরা দেখবেন না, নিজেকে হেয় লাগবে। শাকিব খানের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্তি এবং কিছু প্রশ্ন শাকিব খান- জীবন বিত্তান্ত, আজকের নায়ক ও তার প্রোফাইল পরিশেষে, কিছু অংশ দারাশিকোর ব্লগ থেকে নেওয়া, কপি-পেস্ট। ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার আহ্বান। এবং এই পোস্টটি নির্বাচিত পোস্ট করা হলে অনেকেই এর ব্যাপারে জানতে পারবেন। ভাল লাগলে কমেন্ট ও লাইক দিয়ে জানাতে পারেন।

 ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।