আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অন্য শাকিব খান

হঠাৎ চিৎকার! ঘরের মধ্যে আগুনে আটকা পড়েছে একটি মেয়ে। বাঁচানোর জন্য ছুটল তার প্রিয় মানুষ—একটি ছেলে। একপর্যায়ে আর পা চলে না ছেলেটির। দাঁড়িয়ে গেল সে। সে কি হেরে যাবে? না, এ চ্যালেঞ্জে হার মানা চলবে না।

এর মধ্যে সে পান করল একটি পানীয়। এরপর তেলেসমাতি কাণ্ড—নিমেষেই জেগে উঠল সে! বীরদর্পে আগুনের মধ্যে ঝাঁপ দিয়ে মেয়েটিকে বের করে আনল ঘর থেকে। —পুরো ঘটনাটি ক্যামেরাবন্দী। এটি একটি চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটি মুক্তির পর প্রেক্ষাগৃহে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে দর্শক।


এতক্ষণে আপনারা নিশ্চয় ধারণা করতে পারছেন, একটি কোমল পানীয়র বিজ্ঞাপনের কাহিনি হুবহু তুলে দেওয়া হয়েছে আপনাদের সামনে। বিজ্ঞাপন হলেও এর মধ্যে আছে চলচ্চিত্রের মজা—বিজ্ঞাপনের কাহিনি ও চিত্রায়ণ একটু সিনেমাটিক। আর হবেই বা না কেন, সিনেমার ‘হিরো’ শাকিব খান যে বিজ্ঞাপনের নায়ক, সেটা একটু সিনেমাটিক না হলে কি জমে! এই বিজ্ঞাপনে শাকিব খান হার না-মানা ছেলে—অ্যাকশন হিরো। অন্যদিকে, খুনসুটি আর ভালোবাসা মিলিয়ে মিশিয়ে রোমান্টিক চরিত্রের মডেলও হয়েছেন ভিন্ন এক বিজ্ঞাপনে। তাই চলচ্চিত্রের শাকিব খান এখন বিজ্ঞাপনের মডেল হিসেবে যেন হয়ে উঠেছেন অন্য এক শাকিব।

ছোট পর্দায় প্রতিদিনই দর্শক দেখছে চলচ্চিত্রের শাকিব খানকে। এখানেই শেষ নয়, এবারই প্রথম বিজ্ঞাপনে মডেল হয়েছেন তিনি। এসব নিয়ে সম্প্রতি এক বিকেলে এফডিসির মান্না সাউন্ড কমপ্লেক্সের সামনে ফুল অ্যান্ড ফাইনাল ছবির শুটিংয়ের ফাঁকে আড্ডা জমে উঠল শাকিব খানের সঙ্গে।
হঠাৎ এই ‘অন্য শাকিব’-এর অনুভূতি কী?
‘ভালো। তবে আমার দুটি বিজ্ঞাপনের গল্পই সিনেমাকেন্দ্রিক।

ফলে কাজটি সহজ হয়েছে। বেশ সাড়াও পাচ্ছি। সত্যিই উপভোগ করছি আমি। আমি মনে করি, এটি আমার ক্যারিয়ারে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ’—বলেন শাকিব খান।


ঢাকাই চলচ্চিত্রে প্রায় সব নায়কই বিজ্ঞাপনে মডেল হয়েছেন। কিন্তু বিজ্ঞাপনে তাঁর লম্বা-চওড়া চাহিদা থাকলেও এত দিন ও পথে হাঁটেননি শাকিব খান। একাধিক পণ্যের মডেল হিসেবে প্রস্তাব পেলেও প্রতিবারই তাঁর মুখ থেকে উচ্চারিত হয়েছে ‘না’ শব্দটি। কারণ?
‘আগে ব্যাটে-বলে মেলেনি। এ ছাড়া আমার ইচ্ছা ছিল নিজের জনপ্রিয়তার একটা পর্যায়ে গিয়ে বিজ্ঞাপনে কাজ করব।

আরও কথা আছে, তখন প্রায় ৩৬৫ দিনই চলচ্চিত্রে শুটিং করতে হয়েছে। ’
তাহলে এ সময়ে এসে বিজ্ঞাপনে আগ্রহী হলেন কেন?—প্রশ্ন শুনে হাসলেন শাকিব। একটু দম নিয়ে এরপর বলতে শুরু করলেন আবার।
‘চলচ্চিত্রে আমার জুনিয়র কয়েকজন হিরো, তাঁরা সবাই-ই বিজ্ঞাপনে কাজ করেন। বেশ কিছুদিন ধরে তাঁরাই আমাকে বিজ্ঞাপনের কাজ করতে উৎসাহিত করে আসছিলেন।

তা ছাড়া আমি নিজেও ছবির কাজ কমিয়ে দিয়েছি। ফলে হাতে ছিল সময়টাও। এ সুযোগে কাজটি করলাম। ’
অনেকেই মনে করেন, দর্শকের কাছে চলচ্চিত্র তারকারা থাকেন স্বপ্নের মতো, ধরাছোঁয়ার বাইরের। ছোট পর্দায়, বিজ্ঞাপনে অহরহ দেখা গেলে তাঁদের জনপ্রিয়তা হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

এ বিষয়ে শাকিব কী বলেন?
‘আমার মনে হয়, বিশ্বায়নের যুগে এই ধারণা ঠিক নয়। সারা পৃথিবীতেই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় তারকারা বিজ্ঞাপনে মডেল হিসেবে কাজ করছেন। পাশের দেশ ভারতের কথাই বলি। ওখানকার সব জনপ্রিয় নায়ক-নায়িকাই অহরহ বিজ্ঞাপনে মডেল হচ্ছেন। কিন্তু দর্শকের কাছে তাঁদের জনপ্রিয়তা কি এতটুকু কমেছে? আমি মনে করি, ভালো পণ্য, ভালো গল্পের বিজ্ঞাপনে মডেল হিসেবে কাজ করতে পারলে জনপ্রিয়তা কমে না বরং বাড়ে।


এর আগে আমাদের এখানে অনেক চলচ্চিত্র নায়ক একাধিক বিজ্ঞাপনের মডেল হয়েছেন। এরপরই চলচ্চিত্রে আগের অবস্থান টলে গেছে তাঁদের, নিজেদের জায়গা ধরে রাখতে পারেননি। এ নিয়ে আপনি কী বলেন?
‘বিষয়টি একদম ঠিক নয়। বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়ার কারণে নয়। আমার মনে হয়, ছোট পর্দায় নাটকে কাজ করার জন্যই চলচ্চিত্রের অনেকে চলচ্চিত্রে পিছিয়ে পড়েছেন।


শাকিব খান কথা বলছেন। এর মধ্যে শুটিংয়ের ফাঁকে আমাদের এই আড্ডার কথোপকথনের ভেতরেই পরবর্তী দৃশ্য ধারণের সংকেত জ্বলে উঠল। তাই ঝটপট শেষ প্রশ্ন, নিয়মিত বিজ্ঞাপনে কাজ করবেন কি?
‘যেহেতু এখন চলচ্চিত্রে কাজ কম করছি, তাই নিয়মিতই ভালো ভালো বিজ্ঞাপনে কাজ করব। ’—শাকিব খানের সরল উত্তর। ।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।