আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সুরত মন্দ ছিল না

আমি একজন পর্যটন কর্মী। বেড়াতে, বেড়ানোর উৎসাহ দিতে এবং বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি। কিস্তি-২৬ ক্যাম্পাস বন্ধ করে দেয়ার পর বিপদে পড়েছিল সবাই। তবে সবচেয়ে বেশি বিপদে ছিল ক্যাম্পাস রিপোর্টাররা। কারণ তাদের ক্যাম্পাস বন্ধ হলেও খবর সংগ্রহের জন্য ঢাকাতেই থাকতে হয়েছে।

অনেকে আত্মীয় স্বজনের বাসায় উঠেছিলেন। আবার কয়েকজন সাংবাদিক সমিতিতে মানবেতর দিনযাপন করেছিলেন। তাদের মধ্যে আবদুল্লাহ জুবেরী ভাই অন্যতম। জাকিও ছিল সে দলে। ছিল আরো ক'জন।

সবার নাম মনে পড়ছে না এ মুহুর্তে। হল বন্ধ হওয়ার পর আমি ফুপাতো ভাইয়ের নাখালপাড়ায় আস্তানা গাঁড়লাম। সেখানে প্রায় মাসখানেক ছিলাম। কিন্তু এক বাসায় এতদিন থাকতে ভালো লাগছিলো না। তাই বাসা ত্যাগ করলাম।

প্রতিদিন সকালে বের হয়ে রাত ১১ টায় ফিরি। এতে করে সময় কেটে যাচ্ছিলো। শামসুন্নাহার হলের আন্দোলনের সময় সম্রাট ভাই(এটিএননিউজের বড় কর্তা), নূরনবী ভাই (লন্ডন প্রবাসী)ও হৃদয় ভাই(নিউএজের ডেপুটি চিফ রিপোর্টার)সহ কয়েকজন পুলিশের হাতে মার খেয়েছিলেন। এরপর তারা ছুটিতে। তাদের পত্রিকার পক্ষ থেকে সিনিয়রদের নিউজ করার জন্য দায়িত্ব দেয়া হলো।

সে সময় বড় পত্রিকা বলতে প্রথম আলো, যুগান্তর ও ইত্তেফাক। প্রথম আলো থেকে শহিদুজ্জামান ভাই(বর্তমানে নিউ এজের চিফ রিপোর্টার), যুগান্তরের শাহেদ চৌধুরী (এখন সমকালের চিফ রিপোর্টার) এবং ইত্তেফাকের হয়ে সালেহউদ্দিন ভাই (এখনো ইত্তেফাকেই আছেন) তদন্ত কমিশণ কভার করতেন। মানবজিমন থেকে আমি ও কাজী হাফিজ ভাই (বর্তমানে কালের কণ্ঠের স্পেশাল করেসপনডেন্ট) কাজ করতাম। দুতিন পরে তাকে তুলে নিলে আমি একাই সামলেছি। বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টারদের এমনতর দুর্দিনে অফিস থেকে কোনো ছাড় ছিলনা।

নিউজ কভার করতে হবে। কবির ভাই, আমি , শামীম , সাজু ভাই ও ফয়জুল্লাহ মাহমুদ ভাই আড্ডা দিতাম। খবর সংগ্রহ করতাম। রাতে অফিস থেকে যে যার গন্তব্যে। যার জন্য আগের শেয়ারিংটা সেভাবে ছিল না।

আমি মাসখানেক ভাইয়ের বাসায় থাকার পর শামীমের সাথে ওর বড় মোমিন ভাইয়ের বাসায় উঠলাম। রাতে ওখানে থাকতাম। সকালে উঠে সরাসরি তদন্ত কমিশনে। এভাবে রাত দিন পার হচ্ছিল। তদন্ত কমিশনের অফিস ছিল ঢাকা কলেজের পাশে নায়েমে।

আমরা সেখানে থাকতাম সারাদিন। দুপুরের দিকে খেতে যেতোম ল্যাব এইড থেকে সেন্ট্রাল রোড যাওয়া দিকে গাছতলার এক রেস্টুরেন্টে। খুব মজা করে খেতাম। সালেহ উদ্দিন ভাই ও শহিদুজ্জামান ভাইও আমাদের সাতে প্রায় যেতেন। অন্য সব দিন আমরা খেলাম নীলক্ষেতে।

বইয়ের বাজারের ভেতরের দিকে কয়েটা ভাতের দোকান ছিল। ১৮ টাকায় আস্ত একটুকরো ইলিশ মাছ, সাথে একটা পোড়া মরিচ দিয়ে ভালোই খাওয়া হতো। খাবারের এ জায়গা আবিষ্কার করেছিলেন ফয়জুল্লাহ মাহমুদ ভাই। তদন্ত কমিশনের সামনে অলস সময়টা খারাপ কাটতো না। ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের যে সব নেত্রী আসতেন তাদের প্রত্যেকের সুরত মন্দ ছিল না।

তাদের সাথে আলাপ করে সময় ভালো কেটে যেতো। নীপা তাদের অন্যতম। শরীরের গড়নের জন্য সবার কাছেই জনপ্রিয় ছিল। তনুশ্রী হোড়সহ আরো কয়েকজন ছিল যাদের কথা অনেকের এখনো মনে আছে। একদিন সকালে আমি ছাত্রলীগের নেত্রীরা সবাই একসাথে আমাকে জেরা শুরু করলেন।

এর সূত্র হলো মানবজমিন এক রিপোর্টে বলেছে আন্দোলনের নেপথ্যে ছাত্রলীগ। সত্য কথা এটা। কিন্তু ছাত্রলীগের সে সব নেত্রীরা সব ক্ষেপে গেলেন। আমাকে সবাই ধরলেন কেন এ রিপোর্ট। আমি বললাম এটা তো আমি করিনি।

আজহার ভাই করেছিলেন। ভুল থাকলে সংশোধনী দেবো। কিন্তু ওরা ভুল প্রমাণ করতে পারছে না। তাই আর কিছু করার ছিল না। শিক্ষকদের পার্টিজান ভূমিকা নিয়ে পরের কিস্তি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।