আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফস্কা গেরোর আশঙ্কায় কাঁটা ব্রিটেন

বেশি কিছু চাই না, চাই শুধু মনের কথা বলতে এলিজাবেথের দেশে অলিম্পিকের আসর শুরু আর মাত্র বারো দিন পর। নির্বিঘ্নে তা সম্পন্ন করতে সব ব্যবস্থাই পাকা। অথচ দুশ্চিন্তায় জেরবার সংগঠকরা। গেমসের নিরাপত্তা নিয়ে কিছুতেই পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারছেন না তাঁরা। নজরদারির জাল কেটে বেশ কিছু সন্দেহভাজন জঙ্গি ইতিমধ্যেই দেশে ঢুকে পড়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে অভিবাসন দফতর।

ফলে ঘুম উড়েছে আয়োজকদের। অথচ নিরাপত্তার আয়োজনে প্রায় কোনও খামতিই ছিল না। শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র থেকে শুরু করে অত্যাধুনিক সেনা হেলিকপ্টার, নৌ সেনার বৃহত্তম জাহাজ এইচ এম এস ওশান গেমসের নিরাপত্তা নিশ্ছিদ্র করতে আসরে নামানো হয়েছিল সব কিছুই। তা হলে ফাঁকটা কোথায়? নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্তারা বলছেন, গলদটা গোড়াতেই! গেমস ভিলেজের নিরাপত্তা যতই আঁটোসাঁটো হোক, অলিম্পিক স্টেডিয়ামের আকাশকে যতই ‘নো-ফ্লাই জোন’ ঘোষণা করা হোক, খোদ হিথরো বিমানবন্দর-সহ ব্রিটেনের বিভিন্ন ‘প্রবেশপথে’ যে অভিবাসনকর্মীরা সদ্য মোতায়েন হয়েছেন, তাঁদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণটুকুই নেই। আকাশপথে হামলা রুখতে লন্ডনে অলিম্পিক স্টেডিয়ামের বাইরের মাঠে সমস্যা অবশ্য একাধিক।

গেমসের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সংস্থাটি সম্প্রতি জানিয়ে দিয়েছিল যে, তারা যথেষ্ট সংখ্যক প্রশিক্ষিত রক্ষী জোগান দিতে অপারগ। এই অবস্থায় যেখান থেকে সম্ভব, লোক জোগাড় করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা শুরু করে সরকার। গেমসের নিরাপত্তার জন্য জরুরি ভিত্তিতে সাড়ে তিন হাজার সেনাকে ডেকে পাঠাতে হয়। এঁদের অনেকেই সদ্য আফগানিস্তান থেকে ফিরেছেন, ছুটি বাতিল করে তাঁদের ডাকা হয়। এ দিকে অলিম্পিকের ভিড়ের কথা মাথায় রেখে তড়িঘড়ি বিমানবন্দরের অভিবাসন বিভাগে বসাতে হয় বিরাট সংখ্যক অনভিজ্ঞ কর্মীকে।

বড় চিন্তা এই অভিবাসন নিয়েই। ব্রিটেনের একটি সংবাদপত্রের দাবি,অভিবাসনের কাজে গতি আনতে মাত্র দু-এক দিন প্রশিক্ষণ দিয়ে বিমানবন্দরে লোক মোতায়েন করা হয়েছে। কিন্তু বিমানবন্দর দিয়ে জঙ্গি অনুপ্রবেশ ঠেকাতে যতখানি খুঁটিয়ে যাত্রীদের পাসপোর্ট এবং অন্য কাগজপত্র পরীক্ষা করা প্রয়োজন, এই কর্মীদের সেই অভিজ্ঞতাই নেই। কোনও যাত্রীর নাম ‘সন্দেহ-তালিকা’র সঙ্গে মিলে গেলে যে তখনই সন্ত্রাস-দমন বিভাগকে সতর্ক করা প্রয়োজন, সেটা তাঁরা জানেন না। অথচ এই সন্দেহভাজনদের বিমানবন্দরেই ‘শনাক্ত’ করতে না পারলে দেশের ভিতরে এদের উপরে নজর রাখা এক রকম অসম্ভব।

বিমানবন্দরের এক নিরাপত্তা-অফিসার জানান, কর্মীদের এই অনভিজ্ঞতার সুযোগ নিয়েই অন্তত তিন জন সন্দেহভাজন জঙ্গি লন্ডনে ঢুকেছে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন। আগামী সপ্তাহেই এ দেশে আসতে শুরু করবেন প্রতিযোগীরা। অথচ হিথরো সূত্রের খবর, সে সময় বিমানবন্দরে অনভিজ্ঞ কর্মীই থাকবেন অর্ধেকের বেশি। দেশের ভিতরে নিরাপত্তার বজ্র আঁটুনি সত্ত্বেও তাই কপালে ভাঁজ আয়োজকদের! লিখেছেন • শ্রাবণী বসু • লন্ডন • সৌজন্যে • আনন্দবাজার পত্রিকা •  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।