শঙ্খচূড় (ইংরেজি: King Cobra) (বৈজ্ঞানিক
নাম — Ophiophagus hannah)
হচ্ছে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ বিষধর সাপ। যার দৈর্ঘ্য
সর্বোচ্চ ৫.৬ মিটার (১৮.৫ ফুট) পর্যন্ত
হতে পারে। [১] এটি মূলত সম্পূর্ণ দক্ষিণ এশিয়ার
বনাঞ্চল জুড়ে দেখা যায়।
ইংরেজি নামে কোবরা শব্দটি থাকলেও
এটি কোবরা বা গোখরা নয়। এটি সম্পূর্ণ আলাদা
গণের একটি সাপ।
এই সাপের আকার পর্যবেক্ষণ
এবং ফণার পেছনের অংশ পর্যবেক্ষণের
মাধ্যমে গোখরার সাথে এটির পার্থক্য খুব সহজেই
নির্ণয় করা সম্ভব। গোখরার তুলনায় শঙ্খচূড়
আকৃতিতে যথেষ্ট পরিমাণ বড়। এর ফণার
পেছনে প্রচলিত গোখরা বা খড়মপায়া গোখরার
মতো চশমা বা গোক্ষুর আকৃতি চিহ্ন থাকে না।
শঙ্খচূড়ের গণের নাম হচ্ছে Ophiophagus,
যার আক্ষরিক অর্থ "সাপ খাদক",
এবং প্রাথমিকভাবে এটি অন্যান্য সাপ ভক্ষণ
করেই তার খাদ্য চাহিদা মেটায়। যেসকল সাপ
এটি ভক্ষণ করে তার মধ্যে আছে র্যাট সাপ,
এবং ছোট আকৃতির অজগর।
এছাড়াও অন্যান্য
বিষধর সাপও এটি ভক্ষণ করে, যেমন: ক্রেইট,
গোখরা, এবং নিজ প্রজাতিভুক্ত অন্যান্য ছোট
সাপ। এই সাপের বিষ মূলত নিউরোটক্সিক, অর্থাৎ
এটির বিষ আক্রান্ত প্রাণীর
স্নায়ুতন্ত্রে আক্রমণ করে। শঙ্খচূড়ের
একটি সাধারণ দংশন-ই
যেকোনো মানুষকে মেরে ফেলার জন্য যথেষ্ট। [২]
এর কামড়ের ফলে সৃষ্ট মৃত্যু হার প্রায় ৭৫%।
[২][৩][৪] বাংলাদেশের সুন্দরবনের গভীরে এই
সাপ দেখতে পাওয়া যায়।
[৫]
প্রজনন
ডিম পাড়ার আগে স্ত্রী শঙ্খচূড় তা শরীর
পাকিয়ে কুণ্ডুলী তৈরি করে, এবং তা মৃত
পাতা ব্যবহার করে উঁচু ঢিপির মতো তৈরি করেন।
পরবর্তীকালে সেখানে ২০ থেকে ৪০টির
মতো ডিম পাড়া হয়।
কুন্ডুলী পাকানো দেহটি ইউকিউবেটরের মতো কাজ
করে। বাচ্চা ফোটার আগ পর্যন্ত শঙ্খচূড় তাঁর
ঢিপিটিকে বিরামহীনভাবে পাহার দিতে থাকে,
এবং কোনো প্রাণী যেনো কাছে আসতে না পারে,
সেদিকে লক্ষ্য রাখে। [৬]
ঢিপির মধ্যে প্রায় ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস
তাপমাত্রায় ডিমগুলোকে তা দেওয়া হয়।
বাচ্চা ফোটার পর তা নিজে নিজেই ডিমের খোলস
ভেঙে বেরিয়ে যায় এবং নিজেই নিজের শিকার
খুঁজতে থাকে, এজন্য মাকে তাঁর নিজের
বাচ্চা ভক্ষণ করতে হয় না। [৭] শিশু শঙ্খচূড়ের
দৈর্ঘ হয় প্রায় ৫৫ সেন্টিমিটার এবং এদের বিষ
প্রাপ্তবয়স্কদের মতোই মৃত্যুঘাতী।
সম্পর্কিত প্রজাতি
শঙ্খচূড় এলাপিডি পরিবারভুক্ত একটি সাপ।
ইউরোপ ও এন্টার্কটিকা ব্যতীত এই
পরিবারে সারা পৃথিবীতে প্রায় ২০০-এর
বেশি প্রজাতি দেখা যায়। এদের সবগুলোই বিষধর,
এবং এদের সবারই ছোট, স্থায়ী বিষদাঁত রয়েছে।
কিন্তু অঞ্চলভেদে এদের মধ্যে বাসস্থান, আচরণ,
এবং বর্ণ ও গঠনগত অনেক পার্থক্য দেখা যায়।
এলাপিডি পরিবারভুক্ত চারটি খুবই প্রচলিত সাপ
হচ্ছে কোরাল সাপ, ডেথ অ্যাডার, ব্ল্যাক মাম্বা,
এবং শঙ্খচূড়। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।