আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হিন্দুর গলে “আল্লাহু ” তাবিজ !!!

বুধবার থেকে সোমবার ক্যাম্পাস বন্ধ। লম্বা ছুটি পেয়ে রুমমেটরা সব যার যার গন্তব্যস্থলে গো। পরীক্ষার কারণে বাসায় একা থেকে গেলাম আমি। প্রায় ৫ দিন ছুটি। এত বড় ছুটি কাটবে কিভাবে আমার ? মনে পড়ে গেল : ঢাকা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার উদ্দেশ্যে এখানটায় আসার পর থেকে পুরনো দিনের এক বন্ধু তার বাসায় একবার যাওয়ার জন্য খুব পীড়াপীড়ি করছিলো।

সুযোগটা উপযুক্ত মনে হওয়ায় আগের দিন কন্টাক্ট করে বলে দিলাম কাল আসছি। পরদিন ক্যাম্পাসের গাড়ি মিস করায় লাইনের গাড়িতে করে পকেটের ভাড়া দিয়ে যেতে হলো বন্ধুটির বাড়ি। এমনিতেই বহু পীড়াপীড়ির পর আসা , তার উপর আবার দীর্ঘদিন পর সাক্ষাত। খুব খুশি হলো কাছে পেয়ে। অনেক কথা-বার্তা, গল্প-গুজব ও জম্পেস খাবারের আয়োজনে সময়টা ভালোই কেটে গেল।

এবার ফেরার পালা। বন্ধুর বাসা থেকে বের হতেই আষাঢ়ের আকাশ কেঁদে উঠলো। কি আর করা ! উপায় না দেখে পাশের এক ঝুপড়ির নীচে দাড়াতেই ১৪-১৫ বছরের এক ছেলে হাঁক দিলো “ ভাই ভেতরে এসে বসুন ! ভিজে যাবেন তো !!” সেলুনের দোকান। এই বয়সে বয়স্ক এক লোকের চুল কাটছে। দাড়িয়ে থাকতে দেখে টেবিল পরিস্কার করে দিয়ে আমাদের বসতে দিল।

বসে বসে বন্ধুর সঙ্গে আষাঢ়ের কান্না বন্ধের অপেক্ষা করছি। হঠাৎ ছেলেটি আমাদের গন্তব্যের কথা জানতে চাইল। আমিও এক দুই কথায় জানতে পারলাম সে তার চাচার সেলুনে কাজ করে। ক্লাস ফাইভে পড়াকালীন এক্সিডেন্টে তার এক হাত ভেঙ্গে যায়। হাতে রড ঢোকানো।

দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর ১ বসর যাবত সেলুনের নাপিত হিসেবে কর্মরত। চাচা কোথায় জানতে চাইলাম। প্রশ্ন শুনে মনে হয় ছেলেটি একটু ভড়কে গেল। ভীত কন্ঠে বলল: আমার চাচা হিন্দু থেকে মুসলমান হবে ১৫-২০ দিনের মধ্যে। এলাকার লোকজন জানাজানি হওয়ায় চাচা একটু আড়ালে থাকেন।

কখন কি হয় কে জানে!!! ছেলেটির কথায় বুঝলাম ওরা হিন্দু ধর্মাবলম্বী। ইতিমধ্যে বৃষ্টি থেমে গেছে। দোকান থেকে বের হওয়ার মুহুর্তে লক্ষ করলাম ছেলেটির বুকে একটি তাবিজ ঝুলছে। যাতে খোদাই করে লেখা “আল্লাহু” । বললাম: এটা কি? লজ্জাবনত কন্ঠে “তাবিজ” বলে লুকিয়ে ফেলল।

বললাম: এটা কেন? ছেলেটি বলল: আমি একটি মান্নত করেছিলাম। মান্নত পূর্ণ হওয়ার জন্য অমুক হুজুর আমাকে তাবিজখানি দিয়েছেন। বললাম: তাবিজ পড়ার আগের কাজ না করে তাবিজ পড়লে তো কোন লাভ হবেনা। সে বলল: না হবে। চাচা মুসলমান হওয়ার পর আমিও মুসলমান হয়ে যাব।

কথাটি খুব দৃঢ়পদে বলল সে। চাচার মাঝে আতঙ্ক কাজ করলেও তাকে সত্য ধর্ম গ্রহণে খুব নির্ভীক মনে হল। তার মাঝে লোকের জানাজানি হওয়ার কোন ভয়-টয় দেখলাম না। আকাশ তখনো মেঘালয়। উভয়ের শুভ কামনা করে সামনে পা বাড়ালাম।

মনে মনে বললাম আল্লাহ তুমি এদের সহায় হও........................!!! ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.