বসন্তে মাতাল আমি এক অপূর্ণতা ... এবার এ্যাপোলো হাসপাতালে রোগীর
পেটে কাপড় রেখেই সেলাই করায় অভিযুক্ত হয়েছেন তখাকথিত আন্তর্জাতিক মানের চিকিত্সক নামধারী কসাইরা। জরায়ুতে টিউমার ধরা পড়ার পর নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বাঁশবাড়ী এলাকার আবদুল মজিদ মণ্ডলের মেয়ে রিপা সরকারকে ভর্তি করা হয়েছিল ঢাকার অভিজাত এ্যাপোলো হাসপাতালে । এটা প্রায় চার বছর আগের ঘটনা। সেখানে অস্ত্রোপচারে টিউমার অপসারণের পর কিছুটা সুস্থ হলে রিপাকে ছাড়পত্র দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কিছুদিন পর আবার পেটে ব্যথা শুরু হয় রিপার।
নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষায়ও কোনো রোগ ধরা পড়ছিল না। পেটের ব্যথা দিন দিন বাড়তেই থাকে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুরের আইডিয়াল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় রিপাকে। সেখানে পরীক্ষায় রোগীর পেটে গোলাকার কিছু একটা থাকার অস্তিত্ব ধরা পড়ে। এরপর অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে যেটি অপসারণ করা হয়েছে, সেটি আসলে এ্যাপোলো হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের সময় পেটের ভেতর রেখে দেওয়া কাপড় (মপ)।
এ্যাপোলো হাসপাতালের দেওয়া ছাড়পত্র থেকে জানা যায়, ২০০৯ সালের ১৮ আগস্ট সেখানে ভর্তি হয়েছিলেন রিপা। পরদিন ১৯ আগস্ট ডা. মৃণাল কুমার সরকার তাঁর অস্ত্রোপচার করেন। তাঁর সহকারী ছিলেন ডা. বিলকিছ ও ডা. আরিফা। পরে আরেকবার চেকআপের পরামর্শ দিয়ে ২৩ আগস্ট হাসপাতাল থেকে রিপাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। রিপার স্বজনরা জানান, ডা. মৃণালের পরামর্শ অনুযায়ী পুনরায় এ্যাপোলো হাসপাতালে গিয়ে রোগীর চেকআপ করানো হয়।
কিন্তু বাড়িতে ফিরে আসার কিছুদিন পর থেকেই পেটের ব্যথায় অসহ্য যন্ত্রণায় ভুগতে থাকেন রিপা। কিছু ধরা না পড়ায় এভাবে কেটে যায় প্রায় চারটি বছর। গত বৃহস্পতিবার রংপুরের আইডিয়াল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। সেখানে রংপুর মেডিক্যাল কলেজের সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা.
সৈয়দ মো. আবু তালেব গত রবিবার রাত ১০টা থেকে দেড় ঘণ্টাব্যাপী অস্ত্রোপচার করে রিপার পেট থেকে মপ বের করেন। এ্যাপোলো হাসপাতালের ডাক্তারদের ভুলের কারণে রিপার মরে যাওয়ার মত অবস্থা হয়েছিল।
' রিপার বড় ভাই মো. বাদল স্হানীয় সংবাদমাধ্যম ও সংবাদকর্মীদের জানান, 'ডাক্তারের ভুলের কারণে আমার বোনকে চারটি বছর সীমাহীন কষ্ট ভোগ করতে হয়েছে। এ্যাপোলো হাসপাতালের
মতো দেশের এত নামকরা হাসপাতালে গিয়েও রোগীর এমন অবস্থা হলে মানুষ চিকিৎসার জন্য কোথায় যাবে?' এই ঘটনার জন্য তিনি দোষী ডাক্তারদের বিচার দাবি করেন। রংপুরের আইডিয়াল জেনারেল হাসপাতালে রিপার অস্ত্রোপচার করা ডা. সৈয়দ আবু তালেব বলেন, 'আধুনিক চিকিৎসাব্যবস্থায় চিকিৎসকদের এমন ভুল মানা যায় না।
পেটে থেকে যাওয়া মপ গোলাকৃতি ধারণ করে শরীরের সঙ্গে মিশে থাকায় বোঝা যাচ্ছিল না। দিন দিন রোগীর অবস্থা অবনতির দিকে যাচ্ছিল।
তবে পেট থেকে সেটি বের করে ফেলায় এখন আশা করছি, আর কোনো সমস্যা হবে না। 'সাংবাদিকরা গতকাল ঢাকায় এ্যাপোলো হাসপাতালে অনেকবার ফোন করে গাইনি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মৃণাল কুমার সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। একপর্যায়ে রাত ৯টায় ওই বিভাগের কর্মী শাকিলা বলেন, 'স্যার এখন রোগী দেখছেন, তিনি পরে ফোন করে আপনাদের সঙ্গে কথা বলবেন। ' তবে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও ওই ডাক্তারের কোনো কল না পেয়ে পুনরায় কালের কণ্ঠের পক্ষ থেকে ফোন করা হলে শাকিলা একই কথা বলেন। পরে ওই চিকিৎসক কল করেননি।
এ ছাড়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার জন্য ওই হাসপাতালের নিয়ম
অনুযায়ী জনসংযোগের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা মাসুদের মোবাইল ফোন নম্বরে বারবার রিং করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এ্যপোলো হাসপাতালের বিরুদ্ধে ইতোপুর্বে বেশকিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে যা একবার আমার ব্লখেও লিখেছিলাম। এদের কাছে মানবিকতা বলতে কিছুই নেই সবার আগে বানিজ্য। গরীব সিরিয়াস রোগীদেরও এরা বারান্দার কাছে অগ্রিম টাকা ছাড়া ভিড়তে দেয় না। কিন্তু টাকা দিয়েও যখন আন্তর্জাতিক মানের এইসব কসাইদের হাতে জীবন দিয়ে দিতে হয় তাহলে দরকার কি এইসব চিকিত্সা বানিজ্যের পশরাওয়ালাদের।
ভারতীয় এই হাসপাতালকে এই দেশ থেকে বিতাড়ন অত্যাবশ্যক। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।