আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্র : মার্টি

গল্পের রাজত্বে বসবাস করছি আপাতত মুক্তি : ১১ এপ্রিল ১৯৫৫ দৈর্ঘ : ৯৪ মিনিট রঙ : সাদাকালো পরিচালনা : ডেলবার্ট মান প্রযোজনা : ঞ্যারল্ড হেখ্ট চিত্রনাট্য : প্যাডি চাইফস্কি অভিনয় : আর্নেস্ট বর্গাইন, বেস্টি ব্ল্যায়ার, জো মানটেল, ফ্রাঙ্ক সোটেন, কারেন স্টেল, ইস্থার মিনকিয়োটি, অগাস্ট কিয়োলি সঙ্গীত : রয় ওয়েব চিত্রগ্রহণ : জোসেফ লা শ্যালে সম্পাদনা : এলান ক্রসল্যান্ড জুনিয়র ১৯৫৩ সালের একই নামের একটি টিভি নাটকের গল্প থেকে এ ছবি তৈরি হয়েছে। মুক্তির সাথে সাথে এ ছবি আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করে। কান ফিল্ম ফ্যাস্টিভালে এটি পাম ডি’অর (সেরা ছবির পুরস্কার) জিতে নেয়। এটি দ্বিতীয় মার্কিন ছবি যা একই সঙ্গে কানে ও অস্কারে সেরা ছবির পুরস্কার পেয়েছে। অস্কারে সেরা ছবি ছাড়াও এ ছবি সেরা পরিচালক, সেরা অভিনেতা ও সেরা চিত্রনাট্যের পুরস্কার পায়।

১৯৯৪ সালে লাইব্রেরি অব কংগ্রেসের ন্যাশনাল ফিল্ম রেজিস্ট্রি বিভাগ ‘সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক অথবা নান্দনিক গুরুত্বের’ কারণে সংরক্ষণের জন্যে নির্বাচিত করে। ’ প্রথমেই বলে নেয়া ভালো হলিউডের প্রচলিত ছবির গল্প আর ধরণের সঙ্গে মার্টি’র কোন মিলই নেই। হ্যান্ডসাম হিরো, সুন্দরী নায়িকা, জৌলুসময় কাহিনী এই সব কিছু এ ছবিতে নেই। নিউ ইয়র্কে বসবাসরত মার্টি পিলেটি একজন কসাই। ৩৪ বছরের মোটাসোটা মার্টি মোটেও সুদর্শন নয়।

সে তার মাকে নিয়ে থাকে। মা তাকে নিয়ে চিন্তিত। পরিবারের অন্যান্যরা, এমনকি তার বন্ধুরাও তাকে নিয়ে চিন্তিত। বয়স হয়ে যাচ্ছে অথচ সে প্রেমও করছে না, বিয়েও করছে না। মায়ের এক আত্মীয়র বুদ্ধি আর মায়ের পিড়াপিড়িতে মার্টি সেটারডে নাইটে (শনিবারের রাতটি পাশ্চাত্তে বিশেষ রাত, কারণ রবিবার ছুটি থাকে, তাই ছুটির আগের রাতে ব্যাপক ফূর্তি আর হৈ হুল্লুড় করা যায়) স্টারডাস্ট বলরুমে যায়।

এখানে প্রচুর মেয়েরা আসে। মার্টির সঙ্গে কারো না কারো পরিচয় হবে এই আশায় তাকে এখানে পাঠানো হয়। মার্টির সঙ্গে ঘটনাক্রমে এখানে পরিচয় হয় সহজ সরল এক স্কুল শিক্ষিকা সারা’র। সারাকে তার বয়ফ্রেন্ড এখানে রেখে চলে যাওয়ায় সে কাঁদতে থাকে। মার্টি আর সে গল্প করে, একত্রে নাচে, ডিনার করে এবং এক সাথে হেঁটে বাড়ি ফেরে।

এক রাতের পরিচয়েই তারা ঘণিষ্ট হয়ে যায়, একে অপরকে পছন্দ করে। মার্টি তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে। মার্টি তার নতুন ভালবাসার মানুষ পেয়ে উৎফুল্ল। সে তাকে বাসে উঠিয়ে দিয়ে আসে এবং কথা দেয় পরদিন তাকে ফোন করবে। এদিকে মার্টির বিধবা খালা তাদের বাড়িতে এসে ঠাঁই নেয়।

সে বোনকে বোঝায়, সন্তানের বিয়ে হয়ে গেলে বিধবা মায়ের নিয়ত হয়ে ওঠে নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করা। মার্টির মা ভয় পেয়ে যায় যে, মার্টি বিয়ে করলে সে নিঃসঙ্গ, একা হয়ে যাবে। মার্টির মায়ের অনুরোধেই তার বন্ধুরা তাকে বোঝায়, ক্লারাকে ভুলে যেতে। সে রাতে মার্টি আবার আগের মতোই একা ও বিষন্ন হয়ে ওঠে। এক সময় সে উপলব্ধি করে, যার সঙ্গে সময় কাটাতে তার ভাল লেগেছে, যাকে প্রথম দেখায় তার ভাল লেগেছে, তাকে ভুলে যাওয়া মানে, ভালবাসাকেই ফিরিযে দেয়া।

এক পর্যায়ে মার্টি সিদ্ধান্ত নেয় ক্লারাকে ফোন করার। সে তার বন্ধুকে বলে, ‘‘তুমি তাকে পছন্দ করো না, আমার মা তাকে পছন্দ করে না। ও একটা কুকুর আর আমি একটা মোটকা কুৎসিত পুরুষ। বেশ, আমি যা জানি তা হলো, গতরাতে আমি সুন্দর সময় কাটিয়েছি। যদি আমরা একত্রে যথেষ্ট সুন্দর সময় কাটানোর সুযোগ পাই, আমি তাহলে হাঁটু গেড়ে তার সামনে বসবো এবং আমাকে বিয়ে করার মিনতি জানাবো।

’’ মার্টি বেরিয়ে যায়। টেলিফোন বুথে আসে। ফোন তোলে। ছবির শেষ সংলাপ শোনা যায়, কাঁপা কাঁপা গলায় মার্টি বলছে, ‘হ্যালো...হ্যালো, ক্লারা?’’ গ্লামারহীন এই সরল গল্প নিয়ে মাত্র তিন লাখ ৪৩ হাজার ডলার বাজেটের এই ছবি শুধু মাত্র আমেরিকাতেই ৩০ লাখ ডলার ব্যাবসা করেছিলো।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।