আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শুশিল, দলদাশ আম্বা দালালদের বলছি- বিএনপি যেভাবে ফেরত গেল হরতালের রাজনীতিতে। দ্বিতীয় পর্ব

ভাল থাকতে চাই প্রথমত বিএনপি প্রধান বেগম খালেদা জিয়া হরতলের মত কর্মসূচী দেয়ার পক্ষপাতী ছিলেন না। যার করনে হাজারো কারন থাকা সত্বেও আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম ১৮ মাস কোন হরতাল দেন নি। প্রানান্তর চেষ্টা করেছেন হরতাল বিহীন রাজনৈতিক প্রথা চালু করতে। আওয়ামী লীগ সরকার, আওয়ামী মিডিয়া ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক খ্যাত শুশীল সমাজ (আওয়ামী দাশ) কোন পক্ষথেকেই কোন রকম সহযোগী তা পান নি। আর এভাবেই দেশ ফিরে যায় হরতালের রাজনীতিতে।

২৭ জুন ২০১০ বিএনপি ডাকা প্রথম হরতালেই বেপরোয়া ছিল ছাত্রলীগ ও পুলিশ। ছাত্রলীগ ও পুলিশের আক্রমনে রক্তাক্ত হয় রাজপথ, গ্রেফতার হয় হাজারো নেতা কর্মী, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ অনেক নেতা কর্মীর বাড়ীতে হামলা ও লুটপাট হয়। (ছাত্রলীগ এতটাই বেপরোয়া ছিল যে পরদিন আস্রাফুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলন করে জানান ছাত্রলীগের কোন কর্মকান্ডের দায় তারা নিবে না। ) হরতালে পুলিশ ও ছাত্রলীগের হামলা ভাংচুর, লুটপাটের প্রতিবাদে পরদিন বিভাগীয় শহরগুলোতে বিক্ষোভ মিছিল ডাকা হয়। বিক্ষোভ মিছিল শেষে গ্রেফতারকৃত নেতাদের মুক্তির দাবীতে ঘোষনা করা হয় ৭ জুলাই মানবন্দন কর্মসূচী।

এভাবেই অব্যহত থাকে হরতাল বিরোধী রাজনীতিক সাংস্কৃতি গড়াতে বিএনপির একক ও সর্বাত্তক প্রচেষ্টা। পুলিশের অপতৎপরতায় ৭ জুলাইয়ের নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবীতে মানববন্ধনে বিএনপির নেতা কর্মীরা রাস্তায় দাড়াতেই পারে নি। যে হারে লাঠিপেটা ও ধরপাকর হয়েছে তাতে হরতাল ও মানববন্ধনের মধ্যে পার্থক্য বুঝার মত লোক সরকার ও পুলিশের মধ্যে ছিল বলে মনে হয় না। সেদিন নওগায় মনববন্ধনে পুলিশের আক্রমনে নিহত হন যুবদল নেতা। নিচে কালের কন্ঠের শিরোনামই বলে দেয় তারা রাজনীতিতে বানববন্ধনের মত কর্মসূচীকেও তারা গ্রহন করে নি।

এ ধরনের শন্তিপূর্ন রাজনীতিক কর্মসূচিকে সেদিন তারা উৎসাহিত করে নি। শুধু কালের কন্ঠই না প্রথম আলো, সমকাল, যায় যায় দিন, ইত্তেফাক সহ প্রতিটি আওয়ামী দালালই বিরোধী দল বিএনপির সেই মানবন্দন কর্মসূচীকে বিভিন্নভাবে তাচ্ছিল্য করেছে। সেদিনের মানববন্ধনে পুলিশের দানবীয় ভুমিকা প্রশ্ন তোলা হয় নি কোন পত্রিকায়, হয় নি কোন টকশো। তবে ফেসবুক-পত্রিকায় টিপ্পুনির কমতি ছিল না। আওয়ামী লীগ ও তার সঙ্গপাস দাশ-দাশীদের সমস্যা আসলে হরতাল, বিক্ষোভ মিছিল বা মানববন্দন নয়, সমস্যা বিএনপি অর্থাৎ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দলের অস্তিত্ব।

আওয়ামীলীগ ছাড়া দ্বিতীয় কোন রাজনৈতিক দলের অস্তিত্ব তারা সহ্য করতে পারে না, কখন পারেনি। আজকের আওয়ামী লীগ নেতা ও তথ্য মন্ত্রী ইনুর মুখে শুনুন মুজিবর রহমানের বহু দলীয় রাজনীতির ভীতির কথা। তারপর কয়েক মাস বলতে গেলে তেমন কোন কর্মসূচি দেয় নি বিএনপি। কিন্তু অক্টোবর আসতেই যেন রক্তের নেশায় উম্মত হয়ে উঠে আওয়ামী লীগ। ৮ অক্টোবর ২০১০ নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা বিএনপির মিছিলে হামলা করে হায়েনার দল।

প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা করা হয় হন জনপ্রিয় বিএনপি নেতা ছানাউল্লাহ নূর বাবু (মৃত্যু কালীন সময় উপজেলা চেয়ারম্যান)। আহত হন স্থানীয় পৌর মেয়র সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক। ঐ ঘটনায় বিচারের মুখোমুখি হতে হয় নি কাউকেই বিচার পান নি বাবুর পরিবার। হত্যাকান্ডের ভিডিও এখনো আছে ইউটিউবে। এই দানবীয় হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে একদিনের হরতাল ডাকে নাটোর জেলা বিএনপি।

এসরকারের সময়েই নিহত হন আওয়ামীলীগের আওয়ামীলীগ সমর্থিত পৌর মেয়র লোকমান। নিচের ছবিটি মেয়র লোকমান হত্যার পর আওয়ামী নেতা কর্মীদের তান্ডব ট্রেনে আগুন। পরদিনের প্রথম আলো কাগুজে পাঠকদের বুঝার উপায় নেই কি কোন রকম তান্ডব চালিয়ে ছিল লোকমান অনুসারীরা। এই ছবিটি নাটোরের: বাবু হত্যার শোকে কিলোমিটার ব্যাপী রাস্তায় শুয়ে এভাবেই আহাজারি করে নাটোরবাসী। শোকে ভারী নাটোরবাসী একদিনের জন্যে এভাবেই থেমে গিয়েছিল।

টিভি পত্রিকার শিরোনাম গতানুগতিক বিএনপি ও তার সমর্থকদের দানবপ্রমানের চেষ্টা। (সে দিনের শিরোনাম থমথমে নাটোর) বাংলা ভাষায় শব্দের অভাব নাই অনেক ভাবেই শিরোনাম করা যেত কিন্তু না তা কেন করব? তা করলেই তো ফুটে উঠবে পজিটিভ বিএনপি। ২০১০, ১৩ই নভেম্বর খুনতি হাতুরী দিয়ে পিটিয়ে দরাজা ভেঙ্গে খালেদা জিয়ার মইনুল রোডের বাসা ডুকে সেনা বাহীনির কিছু কাপুরুষ, ঈদের মাত্র তিন দিন আগে খালেদা জিয়াকে বাড়ী থেকে জোড়পুর্বক উচ্ছেদ করা হয়। আওয়ামী লীগের এই সরকারের সময়ে ও আওয়ামী সমর্থীত ১-১১ সরকার বিচার বিভাগ চরম দলীয় করন করেছে জেনেও হরতাল অবরোধের মত ধংসাত্বক কর্মসূচীতে না গিয়ে বেগম জিয়া আদালতের দ্বারস্ত হন। অথচ আওয়ামী সরকার আদালতে বিচারাধীন মামলায় হস্তক্ষেপ করে মুলত আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বর্বর কায়দায় বেগম জিয়াকে সেদিন বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করে।

এ বর্বর ঘটনায় তিনদিন হরতাল দেয় বিএনপি। ২০১০ শেষ শেয়ার বাজার ধসের মধ্য দিয়ে। এরপর ২০১১ এর শুরুতে সীমান্ত হত্যা, আড়িয়াল বিল দখলের ঘটনায় দেশের রাজনীতি তখন টালমাটাল। এর মধ্যে আড়িয়াল বিল দখলের প্রতিবাধে একদিনের হরতাল ডেকেছিল বিএনপি। যা পরবর্তীতে বাতিল করা হয় সরকারের প্রকল্পবাতিলের মধ্য দিয়ে।

শেষোক্ত তিনটা ইস্যুতে হরতাল না দেয়ার জন্যে বাম বুদ্ধিজীবি আসিফ নজরুল বিএনপির সমালোচনা করেন। তার সাথে পরবর্তিতে আরো অনেকে সুর মিলালেও এসব ইস্যুতে দ্বায়িত্বশীল ভুমিকার জন্যে প্রশংসা মিলেনি কোথাও। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।