আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শুশিল, দলদাশ, দলকানা আম্বা দালালদের বলছি- বিএনপি যেভাবে ফেরত গেল হরতালের রাজনীতিতে।

ভাল থাকতে চাই এই পৃথিবীতে যেই কয়টা কাজ করতে কোন রকম যোগ্যতা লাগেনা তার অন্যতম রাজনীতির সমালোচনা করা। আবাল-বৃদ্ধ্য, শিক্ষিত-মুর্খ সবাই রাজনীতির সমালোচক। এই কাজটা যে যত সাবলীল ভাবে করতে পারে সে তত জনপ্রিয়। রাজনীতির সমালোচনা বলতে দেশের রাজনীতির সাথে জড়িত সকল পক্ষের সমালোচনা বুঝালেও আমাদের দেশে রাজনীতির সমালোচনা বলতে ঠিক রাজনীতির সমালোচনা বুঝায় না বুঝায় বিএনপির সমালোচনা। গত এক যুগ ধরে টিভিতে এবং অর্ধযুগ ফেসবুকে গনমুখী শান্তিপুর্ন কর্মসূচীর তালিম দিয়ে আসছিল তারা ৬মে মধ্যরাতের গনহত্যার পরও বিএনপির দোষ খুজে পান।

সেইসব টিভি ওয়ালাদের কথাবার্তা এমন যে সে রাতে বিএনপি পুলিশকে নির্দেশ দিয়ে ছিল গুলি করতে। ফেসবুক ওয়ালারা তো নোটিস টাঙিয়ে দিয়েছেন এখানে রাজনৈতিক আলাপ নিষিদ্ধ। কেউ আবার লেন্জা বাহির কইরা বলতেছে সে রাতে কিছুই ঘটেনি। ঘটলে সেগুলার ছবি দেখাও ভিডিও কই? পোস্টের বিষয় ৬মে না, এই পোস্টা যারা "বিএনপি কেন হরতাল দেয়" বইলা ম্যাৎকার ধ্বনি দেয় তাদের জন্যে। যারা এখনো জানে না কেন বিএনপি ৯ বছরেরও বেশী সময় পর হরতাল দিল জানে না তাদের জন্যে।

২০০৮ সালে যখন ফকরউদ্দিন ও হাসিনা নিজেদের মধ্যে হাত বদলের নির্বাচন (নাটক পড়তে হবে) করে তখন ও তার পর পৌনে দুই মাস প্রধানমন্ত্রী এত শীতল কন্ঠে বিভিন্ন ব্যাপারে বিরোধী দলের কাছে সমযোতা ও সহযোগীতার আহবান জানান। তখন আমার কলিগ বলতেছিলেন ভাই হাসিনা যদি এই ভাবে দেশ চালায় তাহলেতো বিএনপির কখনো ক্ষমতায় আসবেনা। জাবাব দেই নাই মনে মনে ভাবতেছিলাম অভিনয়টা কত দিন জারি রাখবে হাসিনা। ৫০ দিনের মত ভদ্রলোকী চেহারা বজায় ছিল। এ সরকারের শুরুতেই দেশের ইতিহাসে এক রাতে সর্বাধিক ৫৭ জন অফিসার পরিবার পরিজন নিয়ে ১২৪ জন নির্মম হত্যা কান্ডের স্বীকার হলেন।

জাতীয় নিরাপত্তাকে প্রধান্য দিয়ে মিলাদ মাহফিল ও শোক পালনের মাধ্যমে বিএনপি তাদের কর্মসূচী সমাপ্ত করে। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ প্রথমে সংসদে খালেদা জিয়াকে কুরুচীপুর্ন গালীগালাজ পিন্টুকে গ্রেফতার পরে খালেদা জিয়াকে বাড়ী ছাড়া করে। এভাবেই স্বরুপে ফিরেন হাসিনা। শুরু হল নির্যাতনের স্ট্রীম রোলার জয়ের ভিওআইপি কেলেংকারী প্রকাশ করে জয়নাল আবেদীন ফারুখ দুই ডজন মামলার আসামী। গনতান্ত্রীক দল দাবী করা আওয়ামী লীগ মামলাতান্ত্রীক আওয়ামীলীগের যাত্রা শুরু।

দশট্রাক অস্র মামলা একুশে আগস্ট মামলাসহ তারেক রহমানসহ সিনিয়ার নেতাদের নাম সংযোগ, ফকরউদ্দিনের আমলের দুর্নীতির আওয়ামী লীগের নেতাদের মামলা প্রতাহার করলেও বিএনপি নেতাদের মামলা চালু রাখার পাশাপাশি নতুন নতুন মামলা করা। সেই সাথে এসব মামলায় নেতাদের রিমান্ডে নিয়ে মাসের পর মাস নির্যাতন (সে বছরের প্রায়৬৫ দিন রিমান্ডে ছিলে লুৎফুজ্জামান বাবর। ) এ সরকারের প্রথম বছর জুড়ে প্রায় বিশ হাজার মামলা হয় দেশ জুড়ে। অথচ পুরো বছর জুড়ে বিএনপির কর্মসূচী সীমাবদ্ধ ছিল সংবাদ সম্মেলন আর গোলটেবিলে। গনমাধ্যমের কন্ঠরোধের দেশে ফিরে আসলো ১৯৭৫সাল।

একে একে বন্দ করে দেয়া হয় চ্যানেল ওয়ান, আমারদেশ, শীর্ষনিৃজ.কম, সাপ্তাহিক শীর্সকাগজ, টেলিভিশন টকশো পয়েন্ট অফ অর্ডার। বছর জুড়ে আলোচিত হয় ছাত্রলীগের চর দখলের মত লড়াইয়ে ক্যাম্পাস রক্তাক্ত হওয়ার ঘটনা। কখনো নিজেদের মধ্যে কখনো অন্য সংগঠনের সাথে হানাহানিতে বিশ্ববিদয়ালয় কলেজ বন্দ থাকে মাসের পর মাস। বিরোধী দলের নিরবতাকে কাজে লাগিয়ে শুরু হয় বিভিন্ন খনি লীজের নামে কমিশন বানিজ্য, কুইক রেন্টালের নামে দলীয় লোক লোকদের ব্যাংক লুটের সু্যোগ করে দেয়া, পুর্বান্ঞল মরু প্রকল্প তিপাইমুখের অনুমতি দেয়া, ভারতকে করিডোর দেয়াসহ বিভিন্ন দেশ বিরোদী সিদ্ধান্ত গ্রহন ও বাস্তবায়ন শুরু করে হাসিনা সরকার। বেড়ে চলে বিরোধী দলীয় নেতা কর্মীদের উপর সরকারের নির্যাতনের মাত্রা।

ফলে খালেদা জিয়ার বিভাগীয় সমাবেশ গুলিতে কর্মী সমর্থকরা সমস্বরে আওয়াজ তুলে হরতাল চাই হরতাল চাই বলে। ফলে দীর্ঘ ৯ বছর পর বাধ্য হয়ে ২০১০এর জুনে তিপাইমুখ বাধঁ নির্মান বন্দে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়া, দ্রব্য মুল্যের উর্ধগতি, কুইক রেন্টালের নামে কুইক দুর্নীতির প্রতিবাদে প্রথমবারের মত হরতাল ডাকে বিএনপি। (যদিও এই সরকারের আমলে প্রথম হরতাল করে আনু মোহাম্মদের নেতৃতাধীন বাম দল গুলো। ) শুরু হয় দলকানা, দলদাস আর দালালদের ম্যাৎকার ধ্বনি অর্থনীতি গেল তল। ক্যালকুলেটরে হিসেবে বসে গেলেন সবাই কত টাকা লস হল।

কেউ কি হিসেব করেছেন কত লক্ষ কোটি টাকা চাদাঁ দিয়েছেন এই সাড়ে চার বছরে আওয়ামী গুন্ডাদের? ২৭ জুন মহাজোট সরকারের কর্মকান্ডের প্রতিবাদে বিএনপি ও জোটের প্রথম হরতাল। আর হরতাল প্রতিরোদের নামে আওয়ামী লীগের বর্বরতা। বর্ষীয়ান নেতা মঈন খানের উপর পুলিশি আক্রমন। শাহবাগ এলাকায় ছাত্রলীগ কর্তৃক রক্তাক্ত এমপি এ্যানি চৌধুরী হয়ত কন্পনাও করেন নি তার জন্যে আরো বড় চমক বাকী আছে। আহত এমপি চিকিৎসার জন্যে পিজিতে গেলে সেখানে স্বচিপ নামক ডাক্তারদের (?) কর্তৃক দ্বিতীয়বারের মত জখম হন।

আর সেখান থেকেই পাজাকোল করে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় পুলিশ। পুলিশ বন্দুক উচিয়ে শাসাচ্ছে সাম্মী আখতার এমপিকে। এদিন র‌্যাব, র‌্যাবের ড্রেসে আওয়ামী গুন্ডারা মির্জা আব্বাসের বাসা কি তান্ডাব চালিয়ে ছিল তা সবারই মনে থাকার কথা। না থাকলে ইউটিউবে পাবেন। সরকারের কাছ থেকে এরুপ অগনতান্ত্রীক ও হিংস্র জবাব পাওয়ার পর থেমে থাকে নি বিএনপির শান্তিপুর্ন পথ চলা।

দ্বিতীয় পর্ব আসছে.............. ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।