আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কতটুকু এগিয়েছে দেশ

লিখে খাই, সবার ভাল চাই স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪১ বছরে দেশ কতটুকু এগিয়েছে। কত কিলোমিটার এগিয়েছি আমরা। রাজনীতি, অর্থনীতি বা সমাজনীতি কোন দিক দিয়ে এগিয়েছে দেশ। নাকি বারবার হোঁচট খাচ্ছে আর যতটুকু এগিয়েছে তার চেয়ে ঢের পিছিয়েছে? হ্যাঁ আমরা এগিয়েছি অনেক। তবে পিছিয়েছি তার চেয়ে বেশি।

স্বাধীনতার সময় কোটিপতি যদি ছিলেন জনা বিশেক, এখন এসে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে কম করে হলেও লাখ বিশেক। এদিকে আমরা এগিয়েছি অনেক। আগে ঘুষ দুর্নীতি শূন্যের কোঠায় থাকলেও এখন তা ছড়িয়েছে চক্রবৃদ্ধি হারে। এমন কোন সেক্টর নেই যেখানে দুর্নীতি নেই। নেই ঘুষ।

দিন দিন এর হার বাড়ছে। এদিকেও আমরা এগিয়েছি দ্রুতগতিতে। আর হিংসা, নিন্দা আক্রোশে তো এগিয়েছি হাজার গুণ। কে কাকে পেছনে ফেলতে পারে এ প্রতিযোগিতা প্রতিনিয়ত। রীতিমতো যুদ্ধ।

আসলে নৈতিক অবক্ষয়ে আমরা বেশ এগিয়েছি। স্বাধীনতার স্বপ্ন এখানে ভূলুণ্ঠিত। টাকা হলে বাঘের দুধও পাওয়া যায় এদেশে। অনিয়ম পরিণত হয় নিয়মে। আর জোর যার মুল্লুক তার নীতি তো এখন সবখানেই চলছে।

ক্ষমতা এমন এক জিনিস যেখানে সবাই পরাস্ত। গাঁও-গেরামের মোড়ল বলেন আর প্রশাসন বলেন, সবখানেই ক্ষমতার দম্ভ। রাজপথে, জনসমাবেশে কে কাকে হেয় করতে পারে এর প্রতিযোগিতা দেখতে দেখতে কান্ত সবাই। তারপরও রক্ষা নেই। রাজনীতিবিদদের তরতাজা কথা কতটুকু বিশ্বাসযোগ্য তা আমজনতা সঙ্গে সঙ্গেই বুঝতে পারেন।

শুধু বুঝতে পারেন না রাজনীতিকরা। কেন তারা দিন দিন দেশটাকে পেছনের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন? আমরা স্বল্প সময়ে মুক্তিযুদ্ধ করে দেশটাকে স্বাধীন করেছি। আবার স্বল্প সময়েই শান্তিতে নোবেল এনে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছি। পুরুষের পাশাপাশি এদেশের নারীরাও আজ এভারেস্ট জয় করছে। তারপরও আমরা কেন পেছনে ফিরে যাবো? আর কত সময় গেলে এ থেকে বেরিয়ে আসতে পারবো? হিংসা আর ক্রোধ মানুষকে ধ্বংস করে দেয়।

জীবনকে বিনাশ করে দেয়। এ কথা জানার পরও কেন আমরা সেদিকে ছুটছি? কেন মনটাকে সুন্দর করতে পারছি না? কোথায় বাধাÑ জানতে বড় ইচ্ছে করে। নাকি সেই বৃদ্ধার মতোই এগিয়ে গিয়েও আমরা পিছিয়ে পড়বো বারবার। এক বৃদ্ধা রোগে আক্রান্ত। গ্রামের ছোটখাটো ডাক্তার শেষ করে এখন এসেছেন ঢাকায় বড় ডাক্তার দেখাতে।

লম্বা সিরিয়াল শেষে ডাক্তারের দেখা পেলেন ওই বৃদ্ধা। ডাক্তারও তাকে মনোযোগ দিয়ে দেখলেন। নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করালেন। জেনে নিলেন কোথা থেকে এসেছেন। আজই ফিরবেন কিনা? এরপর প্রেসক্রিপশন লিখে বিদায় দিলেন।

এর আগে ডাক্তার বললেন, এখন দু’টি ট্যাবলেট খাবেন আর এখন থেকে এক ঘণ্টা পর আর দু’টি ট্যাবলেট খাবেন। বৃদ্ধা বললেন, বাবারে আমার কাছে তো ঘড়ি নেই। আমি কিভাবে ঘণ্টা হিসাব করবো? ডাক্তার বললেন, আপনি তো ময়ময়নসিংহ যাবেন। মহাখালী থেকে বাস ছাড়লে ময়মনসিংহ যেতে ৩ ঘণ্টা লাগবে। এর মধ্যে ভালুকা যেতে লাগবে ঘণ্টা দেড়েক।

গাড়ি যখন ভালুকায় যাবে তখন দু’টি ট্যাবলেট খেয়ে নেবেন। বৃদ্ধা ডাক্তারের চেম্বার থেকে সোজা মহাখালী। টিকিট কেটে ময়মনসিংহের বাসে চড়ে বসলেন। উঠেই কন্ডাক্টরকে বললেন, বাবা ভালুকা গেলে আমাকে বলবে। গাড়ি চলছে শ্রীপুর যাওয়ার পর আবারও বৃদ্ধা কন্ডাক্টরকে বললেন, বাবা ভালুকা এসেছে? কন্ডাক্টর বললেন, মা আপনি চিন্তা করবেন না।

ভালুকা এলে আমি অবশ্যই বলবো। গাড়ি চলছে তো চলছে। ভালুকা আর আসে না। আসলে কন্ডাক্টর ভুলে গেছে। গাড়ি ভালুকা ছেড়ে চলে গেছে ত্রিশাল।

এ সময় বৃদ্ধা আবার বললেন, বাবা ভালুকা এসেছে? কন্ডাক্টর তো একেবারে থ। আশপাশের যাত্রীরাও কন্ডাক্টরকে চেপে ধরেছে। ভালুকা পার হয়ে এলে কেন বৃদ্ধাকে বললে না। এ নিয়ে হইচই। গাড়ি থামানো হলো।

সিদ্ধান্ত হলো গাড়ি ফের উল্টোপথে ভালুকা যাবে। তা-ই করা হলো। গাড়ি দ্রুতবেগে ভালুকা গিয়ে থামলো। বৃদ্ধাকে বলা হলোÑ মা ভালুকা এসেছে। বৃদ্ধা সঙ্গে সঙ্গে কাছে থাকা ওষুধ খুলে মুখে দিলেন।

কিন্তু গাড়ি থেকে নামছেন না। আরে হলো কি? সব যাত্রী বৃদ্ধাকে বলতে লাগলেন, আপনি নামুন ভালুকা এসেছে। বৃদ্ধা বললেন, আমি তো ভালুকা নামবো না। আমি যাবো ময়মনসিংহ। ডাক্তার বলেছে, ভালুকা গেলে যেন দু’টি ট্যাবলেট খাই।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.