আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শিক্ষকদের প্রাইভেট পড়ানো এবং কোচিং সেন্টার প্রসঙ্গ

কোনো এক শিক্ষক সমিতি প্রেস কনফারেন্স করে বলেছে শিক্ষকদের প্রাইভেট পড়ানো বন্ধ করলে কোচিং সেন্টারগুলোও বন্ধ করতে হবে। এক্ষেত্রে তারা বলেছেন কোচিং বা প্রাইভেট বন্ধ হলে জাতি মেধাশুণ্য হয়ে পড়বে। তারা কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ করারও দাবি করেছেন। সরকার কোচিং বন্ধের যে উদ্যোগ নিয়েছে এ বিষয়ে আমি আগেও লিখেছি। অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধি না পেলে শিক্ষকদের মধ্যে কোচিং এর প্রবণতা থাকবে-- এটা সত্যি।

কিন্তু পুরো জাতি মেধাশুন্য হয়ে যাবে এটা মানা যায় না। যে শিক্ষক ক্লাসে পড়াচ্ছেন সেই শিক্ষকই আবার কোচিং করাচ্ছেন। তাহলে তিনি কি ক্লাসে বোঝাতে পারছেন না? না কি বোঝাচ্ছেন না? তাহলে ছাত্রদের কেন আবার কোচিং সেন্টারে যেতে হবে? বলা যেতে পারে প্রাইভেট কোচিং এ ছাত্রদের নিবিড় পরিচর্যা করা যায়। আমি যতটা জানি ক্লাসে যতটা ছাত্র থাকে অনেক শিক্ষক তার চেয়েও বেশি সংখ্যক ছাত্র নিয়ে ব্যাচ পড়ান। সেখানে নিবিড় পরিচর্যা হবে কেমন করে? ভাল ছাত্ররা ভাল ফলাফল করার জন্য কোনো শিক্ষকের সহায়তা নিতে পারে।

কিন্তু সেই ছাত্রদের ফলাফল যাতে ভাল হয় সেটাতো শিক্ষকদেরই চ্যালেঞ্জ। শিক্ষকরা পিতৃতুল্য। সেই শিক্ষক নিজের ছাত্র বা সন্তানকে নিয়ে ব্যবসা করবেন তা হয় কিভাবে? তাহলে শিক্ষকরা কি খাবেন না? তাদের অভাব লেগেই থাকবে? সেটাই আসল কথা। এর জন্য সরকারকে আরো বেশি আন্তরিক হতে হবে। শিক্ষকদের আর্থিক সক্ষমতা কিভাবে বাড়ানো যায় তার চেষ্টা নিতে হবে।

তা না হলে প্রাইভেট টুইশনি বন্ধ করাটা কঠিন হবে। শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগটাও কম নয়। তারা নিজের ছাত্রদের বিভিন্ন সুবিধা দেন, প্র্যাকটিকালে নম্বর বেশি দেন, অনেক সময় প্রশ্নটাও বলে দেন যেটা বলা হয় সর্ট সাজেশন। এগুলো অনৈতিক। কোচিং সেন্টারগুলোর সাথেও শিক্ষকরা জড়িত।

আবার অনেক বেকার তরুন এই কাজে নেমে পড়েছে। স্কুল বা কলেজ যদি সঠিকভাবে পড়ায়, ক্লাস রুমগুলো যদি সত্যিই জ্ঞানচর্চার কেন্দ্রে পরিণত হয় তাহলে কোচিং সেন্টারগুলোও শুকিয়ে যাবে। আর কোচিং সেন্টার এর উত্থান কিন্তু শিক্ষকদের ব্যর্থতার সুযোগে-- এটা শিক্ষকদের ভুলে গেলে চলবে না। তবে স্কুল কলেজের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে সরকার যুদ্বংদেহী হলেও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষকদের বিষয়ে নিরব। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াচ্ছেন।

কারো কারো মূল পয়সাটা সেখান থেকেই আসে। এসব কারণে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক শিক্ষক নিয়মিত ক্লাস নেন না। এক বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেওয়াটা নৈতিকতার মধ্যে পড়ে না। এ বিষয়গুলোও ভাবা দরকার। প্রাইভেট পড়ানো বন্ধ করতে হবে-- এজন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরো শিক্ষাবান্ধব করতে হবে।

শিক্ষকদের আর্থিক সক্ষমতা ও মর্যাদা বাড়াতে হবে, প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিবেশ আধুনিক ও উন্নত করতে হবে। সকল শিক্ষকদের প্রতি সম আচরণ করতে হবে। সবার করণীয় নির্ধারণ না করে এবং এক্ষেত্রে একটি ঐকমত্য সৃষ্টি না করে টুইশনি বন্ধ করা যাবে না এটা বলা যায়। এই বিষয়ের আমার আরেকটি লেখা Click This Link ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.