আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হলুদ সাংবাদিকতার পদধ্বণী

হলুদ সাংবাদিকতার পদধ্বণী বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পথে হাঁটার অভিজ্ঞতা অনেক বেশি না হলেও কম নয়। যদিও হাঁটার সময় মাঝে মাঝে বাংলাদেশের গনতন্ত্র হুঁচুট খায়। তর পরও এই দেশের মানুষ গণতন্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার বাইরে অন্য কোন শাসন ব্যবস্থা মানতে মোটেই অভ্যস্ত নয়। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান অংঙ্গ হচ্ছে মুক্ত সংবাদ মাধ্যম। বাংলাদেশ যতটুকু সময় গণতন্ত্রের পথে হেঁটেছে তত টুকু সময় মুক্ত সংবাদ মাধ্যমকে সাথে রেখেছে এবং এখনও পর্যন্ত আব্যাহত আছে।

চলার পথে সংবাদ মাধ্যমও গণতন্ত্রের স্বার্থে বাংলাদেশের সাথে বন্ধুত্ব সুলভ আচরণ করে যাচ্ছে, যা সবাই এক বাক্যে স্বিকার করে নেয়। সংবাদ মাধ্যম বন্ধু সুলভ আচরণ করবেইনা কেন, কারন গনতন্ত্রের সাথে বন্ধুত্বই সংবাদ মাধ্যমের ধর্ম। এই ধর্ম পালন করাতে গিয়ে মাঝে মাঝে সংবাদ মাধ্যমকে অনেক বেগ পেতে হয়। তার পরও সমস্ত প্রতিকুলতাকে পাশকাটিয়ে সংবাদ জনগণের কাছে ছুটে চলেছে তার আপন গতিতে। ছুটার পথে অনেক সংবাদ কর্মী বলি দিয়ে দিচ্ছে নিজেদের প্রান।

যে বলি তালিকার সর্বশেষ দুটি নাম হল “সাগর সরোয়ার ও মেহেরোন রুনি”। গণতন্ত্র তথা জনগণের সাথে বন্ধুত্ব বজায় রাখতে গিয়ে তরা আজ বলির পাঁটা হচ্ছে। যাদের কারনে সংবাদ কর্মিরা অকালে প্রান দিচ্ছে তাদের কি আমরা কোনদিন খুঁজে বের করতে পারব না ? এই ঘাতক দের খুজে বেরকরা একটি গণতান্ত্রিক সরকারের দ্বায়িত্বের মধ্যেতো পড়েই, সেই সাথে সাংবাদিকদেরও সমান দ্বায়িত্ব, কে তাদের সহপাঠির ঘাতক তা খুঁজে বের করে জনগণের সামনে তুলে ধরা। কিন্তু সরকারের আচরণ খানিকটা প্রশ্নবৃদ্ধ। তাই বলেকি সংবাদ কর্মিরাও কি তাদের দ্বায়িত্ব পালন করবেননা ? এই সাংবাদিক সম্প্রদায়ই এক দিন আবিষ্কার করেছিলেন শায়ক আব্দুর রহমান ও বাংলা ভাই এর মতো কুক্ষাত জঙ্গী দের।

যারা এত বড় কৃতিত্বের অধিকারী তারা কেন আবিষ্কার করতপারবেনা কে তাদের সহ কর্মি সাগর–রুনির হত্যাকারি ? তারা অন্তত এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজ এর চেয়ারম্যান মাহাফুজুর রহমানের লন্ডনে দেয়া বক্তব্যের সূত্র ধরেই এগুতে পারে। কি প্রমান তার কাছে আছে ? মাহাফুজুর রহমান লন্ডনে যে বক্তিতা দিয়েছেন তা যদি আজ দেশের কোন রাজনৈতিক নেতা দিতেন, তাহলে সংবাদ মাধ্যম তাদের স্বাধীনতা বলে রাত দিন ২৪ ঘণ্টা টকশো করে ও নানান ধরনের সম্পাদকীয় লিখে ঐ নেতার চরিত্র ও নেতৃত্বের বারটাতো বাজিইয়ে দিতই সেই সাথে তাঁকে জেলেও পাঠিয়ে দিত। যেমন- বর্তমান নৌ পরিবহণ মন্ত্রীকে বিভিন্ন সড়ক দূর্ঘটনার প্রসঙ্গে মন্তব্য করার জন্য এই সংবাদ মাধ্যম একেবারে তুলোধুনু করে ছেড়েছে। অভিযোগ ভুল প্রমানিত হওয়া সত্বেও বাদ যাইনি এই সরকারের সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী ও রেল মন্ত্রীও। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে শান্তি দিচ্ছেনা তাঁর ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম তত্ত্বের বাস্তবায়নের জন্য।

বিএনপি সরকারকে নাহই বাদ দিলাম। কিন্তু মাহাফুজুর রহমান সাগর –রুনির হত্যা সম্পর্কে এত বড় বাজে মন্তব্য করার পরও সংবাদ মাধ্যম কেনযানি নিরবতা পালন করছে। ভাটা পড়েছে সাগর–রুনির হত্যাকারির গ্রেপ্তার ও বিচারের আন্দোলন। কোথাই গেল মুন্নি শাহার NEWS HOUR EXTRA র চুল ছেড়া বিশ্লেষন? কোথাই গেল জিল্লুরহমানের তৃতীয় মাত্রার বিশ্লেষণ ? কোথাই গেল ক্রাইম ওয়াচ? কোথাই কেল তালাশ ? সবার মুখে তালা। কিন্তু কেন ? সাংবাদিক দের নিরবতা দেখে দেশের মানুষ আজ এটাই অনুমান করছে যে, তাঁরাও আজ সত্য সাংবাদিকতার নামে ধনি লোকের বুর্যুয়া গিরি করে।

সত্তোর, আশি ও নব্বইইয়ের দশকের সাংবাদিকরা সত্য ও জনগণের পক্ষ নিয়ে সাংবাদিকতা পেশাটিকে এই দেশের মানুষর কাছে যে সম্মান জনক অবস্থানে নিয়ে গেছে তা আজ হলুদ সাংবাদিকতার পদধ্বনিতে আনেকটা ম্লান হয়ে যাচ্ছে। সাংবাদিকরা আজ কাল টাকা ও বিশেষ সুভিধর বিনিময়ে অসত্য ও মনগড়া সংবাদ প্রকাশ করেন এবং প্রকৃত সত্য আড়াল করেন। আনেকেই হইত এই কথা মানতে চাইবেননা। তাহলে নিজের বিবেক কে একবার প্রশ্ন করেন, মাহাফুজুর রহমানের ঐ বক্তব্যের মাঝে কি অনেক প্রশ্নের উত্তর লুকিয়ে রইনি? সাংবাদিকরা প্রথম প্রথম মাহাফুজুর রহমানের গ্রেপ্তার দবি করেছিল, কিন্তু এখন কোন এক অজ্ঞাত কারনে তারা এই দাবি থাকে পিছু হটেছে। তাঁরা মাহাফুজুর রহমানকে গ্রেপ্তার করার জন্য প্রশাসনের উপর চাপ দিচ্ছেনা।

অথচ মাহাফুজুর রহমানের বক্তব্যের সূত্র ধরে তাকে গ্রেপ্তার করলেই সাগর–রুনি হত্যার প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসত। সাংবাদিকদের এমন লজ্যা জনক হলুদ সাংবাদিকতাই দেশের মানুষ আজ হতভম্ব। সাংবাদিক দের এমন আচরণ পরিত্যাগ করতে হবে। সাংবাদিকের কলমের দিকে এই দেশের মানুষ চেয়ে থাকে। এই কলম দিয়ে যদি সত্য বের নাহয়, তাহলে এই দেশের মানুষ সাংবাদিক দের কোন চোখে দেখবে তা নিশ্চই ওনারা সময়ে তা বুঝতে পারবেন।

( তরুণ লেখক মোঃ মিনহাজ উদ্দীন ) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।