আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

থাইল্যান্ডের টাইগার টেম্পল

অভদ্র লোক বিষয়টি সত্যিই অবিশ্বাস্য। থাইল্যান্ডের কাঞ্চনাবুরি প্রদেশের সাইয়ক জেলা। মিয়ানমার সীমান্ত থেকে মাত্র ৩৮ কিঃ মিঃ উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত টাইগার টেম্পল যা আঞ্চলিক ভাষায় বলে ওয়াট ফা লুয়াং টা বুয়া। স্থানীয় ভাষায় ‘থেরাভাদা বৌদ্ধ মন্দির’ নামেও পরিচিত পশ্চিম থাইল্যান্ডের এই মন্দিরটি। সেখানে গেলে দেখা যায় বাঘ এবং মানুষের সখ্য।

১৯৯৪ সালে জঙ্গলের মন্দির হিসেবে আবিষ্কার করা হয় এ ধর্মীয় স্থানটি। বন্য জন্তুদের আবাসনের জন্য এটি একটি বিখ্যাত জায়গা। বিশেষত বিভিন্ন ধরণের বাঘের আবাসনের জন্য এ স্থানটি জনপ্রিয়। এখানে বেশিরভাগ বাঘই ইন্দো-চীনা প্রজাতির। ১৯৯৯ সালে এক গ্রামবাসী একটি বাঘ শাবক নিয়ে আসেন মন্দিরে।

তার কিছুদিন পরেই শাবকটি মারা যায়। এরপর গ্রামবাসীরা বিভিন্ন সময় বাঘ শাবক নিয়ে এসেছে- দুষ্কৃতকারীদের হাতে মা- বাঘ মারা যাওয়ার পরে। এই বাঘগুলো বড় হতে থাকে মানুষের সংস্পর্শে, বৌদ্ধ মঙদের (ধর্মগুরু) ভালবাসায়। ২০০৭ সাল পর্যন্ত ২১টিরও বেশি বাঘ শাবক জন্ম নেয় এই মন্দিরে। ২০১১ মার্চের শেষের দিকে মোট বাঘের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৯০-এ।

পশ্চিমের তুলনায় কিছুটা রক্ষণশীল দর্শনের চর্চা হয় টাইগার টেম্পলে। সন্ন্যাসীদের কারণে বনের ভেতরে অ্যালকোহল নিয়ে প্রবেশ নিষেধ। পোশাক-পরিধেয়ের ক্ষেত্রে বিশেষতঃ মেয়েদের হালকা রঙের কাঁধ থেকে হাঁটু পর্যন্ত ঢাকা সেলাই ছাড়া স্কার্ট পরা বাধ্যতামূলক। মন্দিরে প্রবেশের জন্য ৬০০ বাথ দিয়ে টিকেট নিতে হয় আর এই টাকা থেকেই বাঘ এবং অন্য পশুদের পরিচর্যা করা হয়। প্রতিদিন প্রায় ৩০০ থেকে ৬০০ পর্যন্ত দর্শনার্র্থী ভিড় জমায় টাইগার টেম্পলে।

মন্দিরের ভেতরে রয়েছে একটি দানবাক্স। কথিত আছে এই পবিত্রস্থানে কিছু আশা করে দান বাক্সে দান করলে মনের আশা পূর্ণ হয়। এছাড়াও রয়েছে টিকেট কেটে বাঘ শাবকের সঙ্গে কুস্তি করার সুযোগ। তবে একসঙ্গে ২০ জনের বেশি নয়। সাধারণতঃ থাইল্যান্ডের স্থানীয় মেয়েরাই বাঘের যত্ন করে থাকেন।

দর্শনার্থীগণ অন্যভাবেও বাঘের সঙ্গে ব্যস্ত থাকতে পারেন। শিশু বাঘকে ফিডার খাইয়ে, কিশোর বাঘের সঙ্গে কুস্তি করে, বুড়ো বাঘকে ঘুম পাড়িয়ে অথবা হাতে করে খাবার খাইয়ে সঙ্গ দেয়া যায়। এসব বাঘের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন থাই সন্ন্যাসী, আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক এবং স্থানীয় থাই কর্মীগণ। দর্শনার্থীর সংখ্যা বেশি হলে নিরাপত্তার জন্য বড় বাঘগুলোকে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। গাইড সব সময় সঙ্গে থেকে লক্ষ্য রাখেন দর্শনার্থীর দেখে বাঘ যেন ক্ষিপ্ত না হয়।

মন্দিরের পাশে একটি বৃহৎ এলাকা বনায়ন করা হচ্ছে- যার নাম দেয়া হয়েছে ‘বৌদ্ধ উদ্যান’। সম্ভবত পরবর্তীকালে বাঘের সংখ্যা বেড়ে গেলে কিছু সংখ্যক বাঘ বনে ছেড়ে দেয়া হবে। এজন্য তৈরি করা হয়েছে এই উদ্যান। বাঘের প্রসবের জন্য বিস্তীর্ণ এলাকা না থাকায় এদের বংশ বিবরণ জানেন বৌদ্ধ ধর্মগুরুরা। ধারণা করা হয়- অধিকাংশ বাঘই ইন্দো-চীনা প্রজাতির।

এছাড়া আছে মেক জাতীয় বাঘ। এটি হল বাংলাদেশি বাঘের জাত। সম্প্রতি ‘মালয়ান’ নামের বাঘ প্রজাতি আবিষ্কৃত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, শংকরায়ণের মধ্য দিয়ে এ বাঘের জন্ম হয়েছে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.