আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শোলাকিয়ার ইমাম মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসুদকে একহাত নিলেন হেফাজত , সত্যিই কি তাই ?

" শোলাকিয়ার ইমাম মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসুদকে একহাত নিলেন হেফাজত " এই শিরোনামে একটি পোস্ট দেখলাম । এই পোস্টের মাধ্যমে উক্ত পোস্টদাতা যে মুফতি (?) সাহেবের প্রশংসা করলেন আসুন দেখা যাক সে প্রশংসা না নিন্দার যোগ্য । ঘটনাটা জানার জন্য আসুন উল্লেখিত পোস্ট থেকেই উল্লেখ করি । "হেফাজতে ইসলামের লংমার্চের একদিন অথবা দুই দিন পর হতে পারে ঘটনাটি। আমার এই মুহুর্তে স্মরণে আসছে না।

ঘটনাটি ঘটেছে একটি সংবাদ ভিত্তিক টিভি চ্যানেলের টকশোতে। তার আগে বলে নেয়া ভালো, এই টিভি চ্যানেলটি সংবাদ প্রচারের সময় এবং টকশোগুলোতেও এতো একপেশে সংবাদ ও উপস্থাপনা করে থাকে, কোন সুস্থ মস্তিস্ক সম্পন্ন লোকই এটা পছন্দ করেন না ((অন্তত আমার যাদের যাদের সাথে কথা হয়েছে। )) সেদিন টক শোতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসুদ এবং হেফাজতের একজন মুফতী। সঞ্চালক মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসুদ কে প্রশ্ন করলেন হেফাজতের ১৩ দফা সম্পর্কে আপনি কি বলেন? তিনি উত্তর দিলেন, ১৩ দফার আগে আমি বলতে চাই, আমি গত ২ মাস আগে হেফাজতের প্রধান নেতা আল্লামা শাহ্ আহমদ শফি সাহেবকে একটি চিঠি লিখেছিলাম। কিন্তু তিনি এই পর্যন্ত আমার চিঠির কোন জবাব দেন নাই।

তারপর সঞ্চালক উনার কাছথেকে মাইকটি কেড়ে নিয়ে হেফাজতের মুফতী সাহেবের কাছে জানতে চাইলেন, আপনাদের নেতা কি কারনে জবাব দেননি? জবাবে মুফতী সাহেব বললেন, মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসুদ একজন বিজ্ঞ আলেম। কিন্তু হেফাজতে ইসলামের সম্মানিত আমীর আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী সাহেব তাঁর চিঠির জবাব না দিয়ে এদেশের ষোল কোটি তৌহিদী জনতার প্রানের কাজটিই কেরেছেন। মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসুদ ইদানিং কালে বিভিন্ন টকশোগুলোতে বেশ ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন আর আবোল তাবোল বক্তৃতা দিচ্ছেন। আমি বলতে চাই এদেশ থেকে তসলিমা নাসরিণকে বিদায় করে দেয়ার পরে দীর্ঘদিন তসলিমা নাসরিণের চেয়ারটি খালি ছিলো। মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসুদ সম্প্রতি সেই চেয়ারটি অলংকৃত করেছেন।

এটা বলার পরপপরই মুফতী সাহেবকে আর কোন কথা না বলতে দিয়ে সঞ্চালক ওনার কাছ থেকে মাইক কেড়ে নিয়ে গেলেন। " পোস্ট দাতা নাম না উল্লেখ করলেও বুঝতে পারছি ৭১ টিভির কথা বলেছেন । ৭১ টিভি একটা নীতিমালা অনুসরণ করে সেটা আমার পছন্দ না হলে আমি বলে দিব যারা পছন্দ করে তারা মানসিক ভাবে অসুস্থ । এটার মাধ্যমে পোস্ট দাতাই কি তার মানসিক অসুস্থতার পরিচয় দেয় না । ৭১ টিভির টক শো তে বিভিন্ন মতাবলম্বী লোকদের দেখা যায় ।

মুফতি সাখাওয়াতের উপস্থিতিই তার প্রমান । অবলীলায় সে তার মতামত রাখতে পারলেন । কিন্তু পক্ষান্তরে আপনি দিগন্ত টিভির টক শো গুলিতে দেখেন একই মতাবলম্বী লোকদের একপেশে আলোচনা ,যেখানে ভিন্ন মতাবলম্বী লোকদের ডাকাই হয়না , সেটাকে আপনি কি বলবেন ? আপনি যাদের সাথে আলাপ করেছেন বুঝতে পারছি তাদের ৭১ নামেই গাত্রদাহ । মাওলানা ফরিদ উদ্দীন মাসুদের কর্মকাণ্ডে তাকে তসলিমা নাসরিনের পর্যায়ভূক্ত ক্রা যায় কিনা সে আলোচনায় না গিয়ে আমি বলব এই ধরনের লাইভ টক শো তে প্রতিপক্ষের আলোচক কে এভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ করাটা কতটা যুক্তিসঙ্গত ? তার এই আক্রমণে সঞ্চালক সহ উপস্থিত সবাই বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যান । সঞ্চালক মাইক কেড়ে নেন নি বরঞ্চ তার প্রত্যুৎপন্নমতিতে অবস্থা সামাল দেন এবং মাওলানা ফরিদ উদ্দীন মাসুদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন ।

মাওলান ফরিদ উদ্দীন মাসুদ তার আত্মপক্ষ সমর্থন করে যে বক্তব্য দিয়েছে সেটা আপনার কাছে কেন গ্রহন যোগ্য নয় সে তর্ক থাক ,কিন্তু মুফতি সাখাওয়াত কে প্রশ্ন করা হল কেন মাওলানা শফি মাওলানা ফরিদ উদ্দীন মাসুদের চিঠির জবাব দিলেন না,আর সে প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে উনি মাওলানা মাসুদ কে মুরতাদ ঘোষণা দিয়ে দিলেন । কিছু দিন আগে কতিপয় ব্লগার যখন হেফাজতে ইসলামের সাথে আলাপ করতে চাইলেন তখনও তারা আলাপে অস্বীকৃতি জানায় । একজন ধর্ম বিশারদের সাথে কি একজন বিধর্মী , একজন নাস্তিক কি দেখা করতে পারেন না । আমি মনে করি একজন ধর্মবেত্তা একজন মুরতাদ , বিধর্মী , নাস্তিকের চিঠির উত্তর দিয়ে তার ভ্রম দূর করা তার কর্তব্য । তাদের সাথে দেখা না করা , উত্তর না দেয়া সাধারন সৌজন্যের মধ্যেও পড়েনা ।

গতকাল মুফতি সাখাওয়াত জিটিভির টক শো তে উপস্থিত ছিলেন । সেখানেও তার অসহিস্নু , উদ্বত চরিত্রের পরিচয় পাওয়া যায় । আলোচনার এক পর্যায়ে সে বলে যে আশরাফ( তখন সঞ্চালক উল্লেখ করেন সৈয়দ আশরাফ , তখন সেও নিজেকে সংশোধন করে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সম্বোধন করে ) আমাদের বিরুদ্বে ৮৫ কোটি টাকার লেনদেনের অভিযোগ আনে । অত্যন্ত হাস্যকর ভাবে সে বলতে থাকে অর্থমন্ত্রীর কথা অনুযায়ি হলমার্কের ৪০০০ কোটি টাকার কাছে এই ৮৫ কোটি টাকা যৎসামান্য । এই কথায় সঞ্চালক এবং অন্যান্য আলোচক বৃন্দকে কষ্ট করে হাসি চাপতে দেখা যায় ।

তার বক্তব্য অনুযায়ী হলমার্ক ৪০০০ কোটি টাকা লেনদেন করতে পারলে তারা কেন এই সামান্য টাকা লেনদেন করতে পারবে না ? আজকেও ৭১ টিভির টক শোতে সে ছিল । সেখানেও তাকে উদ্বত আচরণ করতে দেখা গেল । বাধ্য হয়ে এক পর্যায়ে সঞ্চালক তাকে অনুরোধ করে কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমন পরিহার করে বক্তব্য দিতে । এই মুফতি সাহেবরা বুঝতেও পারছে না এই টিভি চ্যানেল গুলি কিভাবে নানা রকম প্রশ্ন করে ফাদে ফেলছে এবং তারা তাদের এই অর্বাচীন উত্তরের মাধ্যমে তারা নিজেদেরেকে কতটা খেলো করে তুলছে এবং তাদের মুফতি টাইটেল কে হাস্যকর করে তুলছে । যতটুকু জানি মুফতি একটি অতি সন্মানিত এবং ইসলাম ধর্মে বিশেষ ব্যুৎপত্তিগত জ্ঞানের অধিকারীকে এই অভিধায় অভিহিত করা হয় ।

পাশাপাশি কওমি মাদ্রাসা সম্পর্কে সাধারন্যে সত্য মিথ্যা কিছু ধারনা প্রচলিত আছে । এরা সমাজের অনগ্রসর অংশ থেকে উঠে এসে যাকাত ফেতরা লিল্লাহ চামড়ার টাকায় , অনুদানে পড়াশুনা করে । সমাজের আলোকিত অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন থেকে তারা সমসাময়িক বৈশ্বিক ধ্যান ধারনা থেকে পিছিয়ে আছে । মুফতি সাহেবের এই উদ্বত , অসৌজন্যমূলক আচরণ যদি উপরে উল্লিখিত বিষয় গুলি তাদের বৈশিষ্ঠ্য বলে সাধারন মানুষ মনে করে তবে সাধারন মানুষকে কি দোষ দেয়া যাবে ? আরও বিস্ময়কর ব্যাপার হল মুফতি সাহেবের এই বালখিল্য আচরণকে যুক্তিযুক্ত বলে পোস্ট দেবার মত লোকও আছে । ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৪ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।