আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের আহবান- ৩১ মে ২০১২ তামাক কোম্পানীর কুটকৌশল ও অপপ্রচার প্রতিরোধ করতে হবে

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আন্তজার্তিক চুক্তি এফসিটিসিতে তামাক কোম্পানিগুলোকে তামাক নিয়ন্ত্রণে বড় হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কোম্পানিগুলো তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রনয়ণ, সংশোধন, বাস্তবায়ন, কর বৃদ্ধি, তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণে বাধাগ্রস্ত করতে বিভ্রান্তকর প্রচারণা চালায়। এছাড়া বিভিন্নভাবে সরকারের কার্যক্রমে এবং জনমনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে। কোম্পানিগুলোর এধরনের কুটকৌশল হতে তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতিকে রক্ষায় এফসিটিসি-র ৫.৩ বিধানযুক্ত করা হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই বিষয়ের গুরুত্ব তুলে ধরতে এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারন করেছে Tobacco Company Interference বাংলায় “তামাক কোম্পানীর কুটকৌশল ও অপপ্রচার প্রতিরোধ করতে হবে”।

কোম্পানিগুলো কিভাবে প্রভাব বিস্তারে কাজ করে: সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচী জনগন ও নীতিনির্ধারকদের প্রভাবিত করতে কোম্পানিগুলো শক্তিশালী। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বৃক্ষরোপন, কম্পিউটার প্রশিক্ষন, পানি সরবরাহ ইত্যাদি কার্যক্রম সামাজিক কর্মসুচীর অন্যতম প্রদান কাজ। এ ধরনের কাজ বাস্তবায়নের পর কোম্পানিগুলো বিপুল টাকা খরচ করে পত্র পত্রিকায় তাদের সামাজিক কার্যক্রমের প্রচার করে থাকে। এছাড়া জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ, যৌথ অনুষ্ঠান আয়োজন, উপহার বা উপঢৌকন প্রদানের মাধ্যমে তারা নীতিনির্ধারনের সাথে জড়িতে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। কোম্পানিগুলো কখনো কখনো তামাক নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে বিভ্রান্ত ছড়ানোর মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতিকে বাধাগ্রস্ত করে।

যেমন কর বৃদ্ধি বা আইন হলে শ্রমিকদের কর্মসংস্থান হ্রাস পাবে, চোরাচালান বৃদ্ধি পাবে এবং সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে। আর্টিকেল ৫.৩ অনুসারে যে সকল কাজ নিষিদ্ধ করা হয়েছে: ১. কোন অংশীদারিত্ব, কোন বাধ্যকতা বা বাস্তবায়নযোগ্য নয় এমন কোন চুক্তি ২. তামাক কোম্পানি হতে কোন অনুদান সরকারীভাবে গ্রহণ করা; ৩. তামাক কোম্পানিতে সরকারীভাবে কোন বিনিয়োগ করা; ৪. কোম্পানি করা খসড়া কোন আইন বা পলিসি বা স্বেচ্ছায়কৃত কোড অব কনডাক আইনের বিকল্প হিসেবে গ্রহণ করা; ৫. তামাক কোম্পানির সাথে যৌথভাবে কোন কার্যক্রম গ্রহণ করা; ৬. তামাক কোম্পানির কোন প্রতিনিধিকে সরকার কোন সংস্থা বা এফসিটিসির ডেলিগেশনে সম্পৃক্ত করা; স্বচ্ছতার জন্য এই চুক্তিতে যে সকল বিষয়গুলো বলা হয়েছে: ১. সরকারের সাথে তামাক কোম্পানির আলোচনার বিষয়সমূহ পাবলিক হিয়ারিং, নোটিশ এবং রেকর্ড প্রকাশের করা; ২. তামাক কোম্পানির কার্যক্রমের তথ্য প্রকাশ (উৎপাদন, তৈরি, মার্কেটিং, আয়, মাকেটিং ব্যয়, দাতব্য খরচ), ৩. তামাক কোম্পানির সহযোগি প্রতিষ্ঠান এবং পক্ষে লবিং করে এধরনের সংগঠনের পরিচিত প্রকাশ করা ইত্যাদি সামাজিক দায়বদ্ধতা এমন একটি কার্যক্রম যার মাধ্যমে তামাক কোম্পানিগুলো তাদের নিজেদের অপকর্মকে আড়াল করে। এধরনের কার্যক্রমের মাধ্যমে তারা মানুষের সহানুভুতি আদায় এবং নীতিনির্ধারকদের উপর তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক নীতি গ্রহণে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। তামাক কোম্পানীগুলো বিভিন্ন কুটকৌশলে নীতিনির্ধারক ও প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদেরও প্রভাবিত করছে। কখনো কখনো প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়ে তাদের ইমেজকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন সরকারী সুবিধা লাভের জন্য চেষ্টা চালায়।

কোম্পানীগুলোর এধরনের প্রভাবকে যদি আমরা নিয়ন্ত্রণ না করতে পারি তাহলে তামাক নিয়ন্ত্রণে যে নীতিগুলো রয়েছে সেগুলো শক্তিশালী করা সম্ভব হবে না। এ জন্য এফসিটিসি-র আর্টিকেল ৫.৩ আলোকে নীতি প্রনয়ণ জরুরী। কোম্পানিগুলো কিভাবে কার্যক্রম করবে সে বিষয়ে সরকারের সুস্পষ্ট নীতি থাকা প্রয়োজন। এধরনের নীতি তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সরকারের নীতিকে কোম্পানির প্রভাবমুক্ত রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.