আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মধ্যরাতেও থাকছে না বিদ্যুত, দুর্ভোগে নগরবাসী

মাঝে মাঝে মনে হয় আত্মহত্যা করি। এত কষ্ট আর ভালো লাগে না। সারাদিন পরিশ্রম করে বাসায় ফিরে শান্তিতে ঘুমাতে পারি না। কোথায় গেলে শান্তি পাব তাও জানি না। মাঝ রাতে শিশু সন্তান নোমানকে কোলে নিয়ে বাস্তায় দাড়িয়ে থাকা শেখ রিয়াতকে রাস্তায় দাড়িয়ে থাকার কারণ জানতে চাইলে এভাবেই খেদোক্তি করেন তিনি।

৭৭ সিদ্ধেশ্বরীর বাসিন্দা রিয়াত জানান, সন্ধ্যা কিংবা গভীর রাত কোন সময়েই মানছে লোডশেডিং। সব সময় চলছে আসা যাওয়ার খেলা। একবার গেলে কমপক্ষে ১ঘণ্টা। লোডশেডিং নিয়ম মানলেও বিদ্যুৎ স্থায়ী হওয়ার নির্দিষ্ট কোন টাইম ফ্রেম নেই। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে কয়েক দফায় বিদ্যুৎ আসা যাওয়া করেছে এখন রাত ১ টায় আবার বিদ্যুৎ চলে গেছে।

গরমে গা জ্বলে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে রাস্তার উপর নেমে এসেছি ছেলেকে নিয়ে। এ ভাবে কি মানুষ বাঁচতে পারে ? টাকা দিয়ে বিদ্যুৎ কিনব তাও যদি না পাই তাহলে কি করা উচিত। রাতে ঘুমাতে পারি না। পরদিন অফিসে গিয়ে শরীর খারাপ লাগে।

তিনি যে ভবনে থাকেন তার চারদিকে বড় বড় ভবন উঠেছে। জানালা খুললেও বাতাস পাওয়া যায় না। একদিকে একটু খোলা থাকলেও ময়লার স্তুপ। গন্ধের কারণে জানালা খোলা যায় না। অনেক বার সিটি কর্পোরেশনে জানিয়েছি কিন্তু কোন ফল পাইনি।

বাসা পরিবর্তন করলেই তো পারেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভাইরে চাইলে কি সব করা যায়? মেয়ে পড়ে সিদ্ধেশ্বরী গলর্সে। যে বাসায় থাকি সেখানে ভাড়া ১৫ হাজার টাকা। দীর্ঘদিন ধরেই বাসা খুঁজছি। আশপাশে ২৫ হাজার টাকার নিচে কোন বাসা ভাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি নিজেই বলে ওঠেন ব্যাংকে চাকরি করি বেতন পাই ২৫ হাজার টাকা।

বাসা ভাড়াই যদি ২৫ হাজার দিতে হয়ে তাহলে তো না খেয়ে মরতে হবে। আগে দিনে যা হোক রাতে খুব একটা বিদ্যুতের লোডশেডিং দেখা যেতো না। এখন সেই নিয়ম আর নেই। খোদ রাজধানীতেই রাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলছে লোডশেডিং। load shading এদিকে আগারগাও পাইকপাড়া এলাকার অবস্থা আরো ভয়াবহ।

সেখানে দিনে রাতে প্রায় ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং চলছে বলে দাবি করেছে ওই এলাকার বাসিন্দা আব্দুলাহ আল মাসুদ। মাসুদ বাংলানিউজকে জানিয়েছে, মঙ্গলবার থেকে তিনি লোডশেডিং হিসেব করেছেন, প্রতি ৫০ থেকে ৫৫ মিনিট পর পর ১ ঘণ্টার বেশি লোডশেডিং হয়েছে। তার সেই কথার সত্যতা পাওয়া যায় ওই এলাকার বিতরণ সংস্থা ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লি.(ডেসকো) এর ওয়েব সাইটে। সেখানে দেখা গেছে দিনের ১২ টা থেকে শুরু হয়ে রাত ১২ পয়ন্ত ১২ ঘণ্টার মধ্যে ৬ ঘণ্টা লোডশেডিং দেওয়া হয়েছে। ডেসকোর জুনিয়র অ্যাসিসটেন ম্যানেজার (মঙ্গলবার রাতের দায়িত্বে থাকা) কবীর হোসেন বাংলানিউজকে জানান এখন (রাত সাড়ে ৩ টা) আমাদের এলাকায় অনেক লোডশেডিং চলছে।

তবে কত চাহিদা আর কত সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে এ কথা বলা নিষেধ রয়েছে। সেচ মৌসুম শেষ এরপরেও এ ধরনের লোডশেডিং থাকার কথা নয় এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, গরম বেশির জন্য কুলিং (ঠান্ডার) লোড এখন বেড়েছে। একইভাবে ঢাকা পাওয়ার ডিস্টিবিউশন কোম্পানি লি (ডিপিডিসি) কন্ট্রোল রুমও লোডশেডিং সংক্রান্ত কোন তথ্য জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তারা জানিয়েছে এসব তথ্য দিতে পারবে একমাত্র বিদ্যুতায়ন বোর্ড। মঙ্গলবার পিডিবির ওয়েব সাইটে দেখা যায় তারা দিনে ৪ হাজার ৩৯৪ মেগাওয়াট রাতে ৫ হাজার ৪০৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে।

এদিন সর্বোচ্চ চাহিদা দেখানো হয়েছে ৬ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট। তবে পিডিবির উৎপাদনের এই হিসেব অনেকটা জনগণকে ধোকার দেওয়ার কৌশল হিসেবে করা হয়। তারা রাতে কোন এক সময়ে সর্বোচ্চ উৎপাদন করে একটু পরেই কম উৎপাদন করছে। যে কারণে চলছে ভয়াবহ লোডশেডিং। পিডিবির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছে অর্থ সংকটের কারণে কম বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে সরকার।

সরকার চাইলে লোডশেডিং মুক্ত রাখা সম্ভব। ওই কর্মকর্তা দাবি করেন বর্তমানে প্রায় সাড়ে সাত হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা রয়েছে। ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।