আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলার প্রাচীনতম বিজ্ঞাপন ফলকটি দেখতে চান? সাথে জেনে নিন বাংলায় দুধ চা প্রচলনের ইতিহাস!!!

সকাল বেলা যাদের চা ছাড়া চলে না, আজ তাদের জন্যে চা নিয়ে মজাদার একটি পোষ্টঃ ব্রিটিশদের বিনা পয়সায় চা পান করানোর ঘটনা এখনো ইতিহাস হয়ে আছে। ব্রিটিশ আমলেই চায়ের সঙ্গে এ দেশের মানুষের পরিচয় হয়। আজ থেকে ১৫৪ বছর আগে ১৮৫৪ সালে সিলেটের মালনিছড়ায় প্রথম চা বাগান প্রতিষ্ঠা করা হয়। শুরু হয় বাণিজ্যিকভাবে চা উৎপাদন। এরপর থেকে একের পর এক চা বাগান প্রতিষ্ঠা পেতে থাকে।

১৮৮০ সালে শ্রীমঙ্গলেও চা বাগান প্রতিষ্ঠার জোয়ার শুরু হয়। বৃটিশরা প্রথমে রফতানীর উদ্দেশ্যে বাংলায় চা চাষ শুরু করে, মূলত তখনই ভারতবর্ষে চা পরিচিতি পায়। তার আগে মানুষ পানীয় বলতে যা বুঝত তা হল গরুর খাটি দুধ। কমবেশি সকল বাঙ্গালীর ঘরেই গরু থাকতো এবং সকলেই চেষ্টা করতো প্রতিদিন তার পরিবারের সদস্যরা দুধ পান করার সুযোগ পাক। বৃটিশরা দেখলো যে যদি এ দেশে চা উতপাদন করে এ দেশেই বানিজ্য করা যায় তবে সেটা অনেক ব্যবসা সফল হবে।

কিন্তু তারা এও জানতো যে বাঙ্গালির ঐতিহ্যবাহী পানীয় দুধ এর যায়গায় চা পান করানোটা অনেক কঠিন হয়ে যাবে, তাই তারা বিজনেস ষ্ট্র্যাটেজি হিসেবে প্রথমে বাঙ্গালীদেরকে ফ্রি ফ্রি চা পান করানোর চেষ্টা করা শুরু করলো। কিন্তু এভাবেও তারা সফল হচ্ছিল না, কারণ বাঙ্গালী মানুষেরা অত্যন্ত পুষ্টিকর দুধ এর বদলে চা খেতে খুব একটা আগ্রহ প্রকাশ করতো না। তারপর তারা শুরু করলো বিজ্ঞাপন দেয়া, সেই ব্রিটিশ আমলে চা-কে জনপ্রিয় করে তুলতে রেলস্টেশন, লঞ্চঘাট, স্টিমার ঘাটসহ পাবলিক প্লেসে বিজ্ঞাপন-ফলক লিখে প্রচার শুরু করে। ব্রিটিশরা এতে কিছুটা সফলও হয়। কিন্তু তারা তখন পর্যন্ত পুরোপুরি সফল হয়ে উঠছিল না, তাই ভেবে দেখলো দুধ যেহেতু বাঙ্গালীর এতই প্রিয় পানীয় তাই দুধের সাথেই চা মিশিয়ে দাও।

এবং এরপর থেকেই বৃটিশরা বাংলায় চা কে পানীয় হিসেবে চালু করতে গিয়ে আস্তে আস্তে পুরু সফলতা পেল। সেই থেকেই ভারতবর্ষে দুধ চায়ের প্রচলন শুরু হয়। এজন্যেই দেখবেন ভারতবর্ষ বাদে বিশ্বের অন্যান্য জায়গায় দুধ চায়ের প্রচলন নেই বললেই চলে। সেই তখন থেকে ব্রিটিশদের শেখানো চা পানের অভ্যাস দ্রুত এ অঞ্চলে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এক সময় চা হয়ে ওঠে সবার প্রিয় পানীয়।

আর তখনকার এসব বিজ্ঞাপন ফলক এখন স্থান পেয়েছে শ্রীমঙ্গলে স্থাপিত দেশের একমাত্র চা জাদুঘরে। নিউ সমনবাগ চা বাগানের সিনিয়র ম্যানেজার মো. শাহজাহান আকন্দ জানান, 'সেই ব্রিটিশ আমলে দেশে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে রেল ও জলপথ ব্যবহার করা হতো। তাই ব্রিটিশরা বিভিন্ন জলযানসহ স্টেশন, বন্দরগুলোতে এসব বিজ্ঞাপন ফলক ব্যবহার করত চায়ের ব্যাপক প্রসারের জন্য। ' বাংলাদেশ চা বোর্ড এই দুর্লভ বিজ্ঞাপন ফলকগুলো দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সংগ্রহ করে চা জাদুঘরে নিয়ে আসে। শ্রীমঙ্গলের টি রিসোর্ট অ্যান্ড মিউজিয়ামের এক্সিকিউটিভ ইনচার্জ এ কে এম রফিকুল হক বলেন, চা-শিল্পের ইতিহাস দেড়শ বছরের পুরনো।

চায়ের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এখানে স্থান পেয়েছে শতাব্দীর প্রাচীন চা-শিল্প সংশ্লিষ্ট অর্ধশতাধিক সামগ্রী। প্রতিদিন পর্যটকরা এ জাদুঘর দেখতে এসে মুগ্ধ হন। ছবি নিয়ে এরকম মজার এবং ভিন্নধর্মী তথ্য জানতে ছবির কথা, কথার ছবি ফেসবুক পেজটি ঘুরে আসতে পারেন http://www.facebook.com/epm33 ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.