আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভালোবাসার গল্প

দ্বিধা-দ্বন্দের সমীকরণ ! দরোজা খুলে দাঁড়াতেই চমকে গেলো আবির । চমকালো খুব করে । রুমগুলো সাজানো, গোছানো, ছিমছাম তখন ! ঠিক যেন পরিপাটি একদম । তাকাতেই সে দেখলো ডাইনিং টেবিলটায় দুটো মোমবাতি জ্বলছে । জ্বলছে আসন্ন উৎসবের অভিপ্রায়ে, একটা ছোট্ট কেক তাঁর সামনেই ! ব্যাপারটা বুঝেই দুষ্টুমি খেলে যায় তাঁকে ।

আহা, আজ যে বিয়ে বার্ষিকী তাঁদের । আহা, আজ যে ! সে ভাবে, ধ্যাত এই কর্পোরেট ব্যাস্ততার যুগে বউয়ের সাথে খুনসুটি করার সময় মেলানোও কষ্টের বড় । ব্যাস্ততা কতইনা এই সেই ! তবে খানিকটা হয়ে যাকনা আজই, যাকনা হয়ে তবে এক্ষুনি ! আকাশনীল রঙা শাড়ি পড়েছিলো বৃষ্টি । কপোলে টিপ, ঠোঁটে লিপস্টিক । নেশা ছুঁয়ে যায় আবিরকে, ধরে যায় সৌন্দর্যের মাদকতা ।

ভাবে, ধ্যাত । বাদ দেইনা ওসব । বাদ-, তারচে ছুঁয়ে দেই, যাই ছুঁয়ে ছুঁয়ে বউটাকে । দেইনা ছুঁয়ে এক্ষুনি ! দুষ্টুমিটাও খেলে যায় আবার, খেলে যায়..., উচ্ছ্বাসটুকু আড়াল করে বলে ফেলে সে, ক্যানো যে এ টাইপের ছেলেমানুষিগুলো করে যাচ্ছো । ক্যানো যে করে যাও এখনো ! শুনে, স্তব্ধ হয়ে যায়, যায় বৃষ্টি ।

স্তব্ধ হয়ে যায় কিছু না বুঝেই ! দুটো মোমবাতি, নীলাভ মোমবাতি, আসন্ন উৎসবের অভিপ্রায়ে জ্বলে জ্বলে নিঃশেষ হচ্ছিলো তখন, হচ্ছিলো কেকটার একটু সামনেই ! সে কী অভিমান অভিমানীর এরপর । অভিমান সে কী তাঁর ! সারারাত ফুঁপিয়ে কাঁদলো সে । কাঁদলো সারারাত । সে কী প্রচণ্ড অভিমান অভিমানীর ! বার কয়েক সরি বললো আবির । বললো বৃথাই ।

হাত ধরতে চাইলো, চাইলো অভিমান ভাঙাতে । হাত সরিয়ে ও বললো, আমাকে ছোঁবে না । ছোঁবেনা কখনোই । এরপর, খুব সকালে কিছু না বলেই, না বলে কাউকেই, চলে গেলো বাবার কাছে । চলে গেলো না বলেই ।

কী হয়েছে জানতে চাইলে, কিচ্ছু বলেনি কাউকে, বলেনি বাবা কিংবা ভাইকেও । কেবল রুম লক করে কাঁদলো, কাঁদলো শুধুই । কাঁদলো ফুঁপিয়ে । কাঁদলো না বুঝতে দিয়েই কাউকেই । খানিক বাদেই আর ভাবছিলো, এই বুঝি আবির বলছে, অপ্সরী, সরি ।

সরি, চল বাসায় যাই । বুঝি এই আবির বলছে ! অথচ, কেউই আসেনি, বলেওনি কেউ। ফোন কিংবা এস এম এসও নয় কোনো । নয় ফোন কিংবা আসেনি কেউ ! কেবল যখন সন্ধ্যেবেলা দক্ষিণের জানালাটা খুলে ও তাকিয়ে ছিলো বাইরে, তাকিয়ে ছিলো আনমনে । তখন-, কাজের বুয়াটা ফোনে বললো, ‘আফা তাড়াতাড়ি আইয়েন, স্যারতো অসুস্থ মেলা ।

আফনে আইয়েন তাড়াতাড়ি !’ খানিক বাদে বাসায় ফিরেই অবাক হয়ে যায় বৃষ্টি । অবাক হয়ে যাচ্ছে ক্রমশই । দু’চোখে তাঁর একের বিস্ময়ের পর বিস্ময় তখন । বিস্ময় একের পর এক ! অসংখ্য মোমবাতি সারা ঘরময় ওদের, যেন আলোর জোনাকি তাঁরা । প্রতিটা মোমবাতির পেছনে টেডি বিয়ার ।

প্রতিটির পেছনেই একটি করে । মোমবাতিগুলোকে পাহারা দিচ্ছে বুঝি ওরা ! ডাইনিং টেবিলটায় বিশাল কেক এক । টেবিলটায় শোভা পাচ্ছে তখন । বৃষ্টির টেডি বিয়ারটা ওটার পেছনেই । হাতে একটা কার্ড ।

আবির লিখেছে-, অপ্সরী জানি, ক্যান্ডেল-লাইট আর টেডি বিয়ার তোমার পছন্দ খুব । জানি, পছন্দ খুব । দুটো ক্যান্ডাল আর একটা টেডি বিয়ারে বড্ড বেমানানই লাগছিলো তোমার পাশে । বড্ডই বেমানান ! খানিকটা কষ্ট দিলাম তাই । সরি, সরি অপ্সরী, সরি ফর এভরিথিং ।

বৃষ্টির চোখ বৃষ্টিতে ভরে গেছে ততক্ষণে । এ বৃষ্টি ভালোবাসায় ! এ বৃষ্টি পরম সুখে । মুখ ঘুরিয়ে পেছনে তাকাতেই সে দেখতে পেলো, আবির তাঁর দিকে চেয়ে মুচকি মুচকি হাসছে !  ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.