আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কচ্ছপ কাহিনী

আমি সততা ও স্বচ্ছতায় বিশ্বাস করি। গাড়িতেই পরিচয়। পাশাপাশি আসনে বসেছিলেন তারা দু’জন। ব্যাগের ভেতরে তিনটি কচ্ছপ দেখে পাশের জনের মনে মনে লোভ হয়। এক পর্যায়ে দু’জনের মধ্যে কচ্ছপ কেনাবেচার জন্য দর কষাকষি হয়।

অবশেষে সন্তোষজনক দাম না হওয়ায় কচ্ছপ কিনতে ব্যর্থ হয়ে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাজারে কচ্ছপ বিক্রি অবৈধ বলে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দিলেন একজন আরেকজনকে। প্রশ্ন হলো কচ্ছপ বাজারে বিক্রি করা আইনত দণ্ডনীয় কি না তা নিয়ে স্থানীয় মৎস্য বিভাগ ও বন বিভাগে দ্বিমত কেন? আর পুলিশই বা কোন আইনের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করেছিলেন? যেহেতু কচ্ছপ এক ধরণের জলজ প্রাণী সেহেতু যদি মৎস্য আইনেই কেস বাঁধা হয়ে তাকে তাহলে তাকে ছেড়ে দেওয়াটাই পুলিশের জন্য উত্তম ছিল। কেননা মৎস্য আইনে কচ্ছপ কেনাবেঁচায় কোন অপরাধ নেই। যেহেতু সাধারণভাবে ছড়া ও নদীর পানিতেই কচ্ছপের বিচরণ, সেহেতু কোন কোন ক্ষেত্রে বনের ভেতরের জলাভূমিতেও কচ্ছপের আবাস দেখা যায়। কথা হচ্ছে- কচ্ছপ বন্যপ্রাণী না জলজ প্রাণী? যদি জলজ প্রাণী হয়ে থাকে তাহলে বন আইনে কেন কচ্ছপ আটকানো হয়।

আবার যদি বন্য প্রাণী হয়ে তাকে তাহলে জলেই বা কেন তার বাস? গাছের লতা পাতায় নয় কেন? গত ২৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দুপুরে মৌলভীবাজার থেকে ছেড়ে আসা একটি লোকাল বাস শ্রীমঙ্গলে প্রবেস করতেই তাৎক্ষনিক এক অভিযানে ট্রাফিক সার্জেন্ট সালাউদ্দিন কাজল ৩ টি কচ্ছপসহ সুব্রত নমসুদ্র নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেন। পরে স্থানীয় মৎস্য বিভাগের সাথে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি মামলিক বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে বন বিভাগের সহায়তায় বন আইনের অধীনে মামলা দিয়ে কচ্ছপসহ আটককৃত ব্যক্তিকে আদালতে প্রেরন করা হয়। এ ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শীদের মনে কচ্ছপ কাহিনী নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দেয়। অনেকে আবার অভিযোগ করে বলেন, গাড়ির ভেতরে একজন লোক সুব্রতের ব্যাগের ভেতরে কচ্ছপ তিনটিকে দেখতে পেয়ে কেনার উদ্দেশ্যে এগুলোর দামদর করেন।

কিন্তু বিক্রেতা সুব্রত অতিরিক্ত দাম চাওয়ায় তখন তিনি কচ্ছপ কিনতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। এদিকে কচ্ছপ বিক্রেতা সুব্রত নমসুদ্র পুলিশকে জানায়, সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার আলুখাল নদী থেকে কচ্ছপগুলোকে ধরেছেন। পরে এগুলোকে বিক্রির উদ্দেশ্যে বাসযোগে তিনি শ্রীমঙ্গলে আসেন। তিনি নিজ ভাষায় বলেন, ইরকম তো সবসময়ই বেচি, আর কোনসময় তো কেউ আটকাইছে না। আর কচ্ছপ বেচা যে অবৈধ ইতাও তো জানিনা।

বাজারো তো হক্কলেই ইলাখান বেচইন। আমি বেচলে দোষ কিতা। বাজার থাকি দেখি আপনেরা ইতা ধরইন না। ইকানো আমারে গাড়ি আটকাইয়া ধরি লাইলা। ” সুব্রত নমসুদ্রের এই উক্তির সাথে কচ্ছপ কাহিনী নিয়ে সাধারণ জনগণের ও প্রশ্ন একটাই কোনটি বৈধ আর কোনটি অবৈধ।

মৎস্য বিভাগ না বন বিভাগ। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।