আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আজ শুক্র বার । বন্ধের দিন ।

বেচেঁ থাকার স্বাদ নিচ্ছি... আজ শুক্র বার । বন্ধের দিন । আমারা জাতি হিসেবে খুব ই আরাম প্রিয়। তাই বন্ধের দিন আমাদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ন বিষয় (আমার মতো ফাকিবাজের জন্য তো ঈদের দিন) । আজকে সকালবেলা ঘুম থেকে উঠলাম, অন্তরের ঘরটাতে চাপা যন্ত্রনা নিয়ে যা আগের দিনে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় সাথী করে ঘুমিয়েছি।

চমতকার রোদেলা সকালে ভাবছি, আজকের দিনটা কতো সুন্দর হতে পারত । হতে পারত অস্বাধারন একটা দিন । ফুলে ফুলে বাগান ভরে থাকত । সৌরভে মৌ মৌ করত পথ ঘাট । ঈদের মতো এক জন আরেক জনকে শুভেচ্ছা জানাতো, একে অন্যের কাছে ছুটে যেতো ।

বুক মিলাতো । ভালবাসায় সিক্ত থাকত পুরো নগড়ী । কিন্তু না তা হল না । হয়েছে ঠিক যা হবার ঠিক তাই । সকাল থেকে কাজে ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করছি , কিন্তু অন্তরের ঘরের সেই চাপা যন্ত্রনার হাত থেকে রেহাই পেতে পারছিনা।

কালরাতে অনেকক্ষন ফেসবুকে ছিলাম, বন্ধদের সাথে ফোনে কথা বল্লাম, সামুতে ছিলাম । একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম, সবার অবস্থা একি। ঘুমাতে যেতে ভয় লাগছিল কারন কাজে ব্যস্ত থাকলে যন্ত্রনাটা কম নারা দেয় । ঘুমাতে গেলে সব মনে পড়ে যাবে। যা হবার তাই হলো।

জীবনে প্রথম খেলার কারনে বাচ্চাদের মতো কানলাম (আল্লাহ রক্ষা করছে আল্লাহ ছারা কেউ দেখে নাই) । এর আগে বাংলাদেশের খেলার কারনে প্রজন্ড মন খারাপ হয়েছিল, মনে পড়ে যায় ২০০৩ সাল বিশ্বকাপে ঈদের আগের দিন রাতে বাংলাদেশ কানাডার কাছে হেরে যায় । মানুষের যে কি শোক, যে না দেখেছে বিশ্বাস করতে পারবেনা । প্রত্যেক এর ঈদের আনন্দ মাটিতে মিশে গিয়েছিল। একটা জিনিস বুঝতে পারলাম, জাতী হিসেবে আমার কতো আবেগী।

সামান্য একটা খেলার কারনে আমরা কান্নাকাটি করি। আমি সামন্য ই বলছি কারন জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ন বিষয়ের কাছে ক্রিকেট খেলা একটা ছেলে খেলা মাত্র। আমরা পুরো বাঙালী জাতী সব কাজ ছেরে ছুরে দিয়ে সেই ছেলে খেলায় মেতে উঠেছি । পরে ভেবে দেখলাম। বড়ই অভাগা জাতী আমারা ।

হতাভাগা এই জাতীর জীবনে আনন্দ করার মতো কিছুই নেই । আমারা অর্থীনতিতে অতি দরীদ্র একটি দেশ । প্রাকৃতীক দু্র্জোগ যে জাতীর নিত্যসংগী । রাজীনিতীতে অদক্ষ্য, অযোগ্য নেতা, নেত্রীতে ভরপুর (বঙ্গবন্ধু থেকে শুরু করে জিয়া, এরশাদ, শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়া সবাই)। দুদিন পর পর দর্ঘটনায় মানুষ মারা যায় পাখির মতো।

সেই অভাগা দেশের মানুষ আমারা । আমাদের এতো দু:খের মাঝে মনে একটু খানি সুখ এনে দিয়েছে এই ক্রিকেট খেলা । আমেদের আবেগের এক মাত্র যায়গা যখন সাকিব, তামিম ব্যাট হাতে ক্রিজে দারায়, মাশরাফি চমতকার রান আপ নিয়ে নতুন বল করার জন্য ঘুরে দারায় । তখন পুরো জাতী চেয়ে থাকে এ কয়টা মানুষের দিকে। সৃষ্টিকর্তার কাছে সাহাজ্য চায় তাদের জন্য।

কখনো তারা আমাদের মনের দাবী মিটাতে সক্ষম হয়, কখোনো হয় না । কখোনো ব্যর্থতা, গ্লানীর মাত্রাটা একটু বেশি ই হয়ে যায়। রাজনীতিবিদ দের কাছে প্রশ্ন কয়টা মানুষের সত্যিকারের ভালোবাসা পেয়েছেন ? আমার মনে হয় স্বন্দেহে পড়ে যাবেন। কারন আপনাকে যদি কিছু মানুষ ভালোও বাসে তা কেবল মাত্র আপনার টাকা আর ক্ষমতার জন্য । মন থেকে নয় ।

কাল খেলার পর দেখলাম, সাকিব, মুশফিকের চোখে পানি । কান্নায় ভেঙে পড়ছে একেকজন। শুধু একটাই কথা বন্ধু আমার, এ পানি তোমার চোখ থেকে ঝরছেনা তা যেনো ১৬ কোটি বাঙালীর অন্তেরের অন্তরে ছুরি চালানো ক্ষত-বিক্ষত হৃদয় থেকে রক্তের এক একটি ফোটা । সাকিব খুব গোছানো, এবং ব্যালেন্সড একটা মানূষ। খুব বেশি আবেগি দেখিনি মাঠে তাকে আমি ।

সেই সাকিব এর কান্নায় কোনো পাষানের পক্ষ্যে চোখের পানি ধরে রাখা সম্ভব নয় । একটা জিনিস ভালো লাগছে এই ভেবে । আজ পুরো জাতীর অন্তরে একি জ্বালা বইছে । যে জ্বালা চৈত্রের প্রখর রোদকেও পুরিয়ে দিচ্ছে। এখন সময় আমাদের সামনের দিকে তাকনোর।

যে জ্বালা আমাদের অন্তরে বইছে তা দিয়ে পুরিয়ে ছারখার করে দিতে হবে বাংলার সব প্রকাশ্য এবং অপ্রকাশ্য সব অশুভ শক্তিকে। ভালো থেকো সাকিব, তামিম, মুশফিক বন্ধুরা, ভালো থেকো সবাই । গুড লাক বাংলাদেশ। ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।