আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঈমাম সাহেব যখন ব্যবসায়ী,মসজিদে তখন ব্যবসা ক্ষেত্র।

শেষ বারের মতো সতর্ক করছি... আমাদের দেশে এখনো মসজিদ ভিত্তিক কিছু শিক্ষা কার্যক্রম আছে। মসজিদে সকালে আরবি পড়ায়,দল বেঁধে ছেলে মেয়েরা সেখানে আরবি পড়তে যায়। আগে ছিল এই শিক্ষা ফ্রি। এখন ঈমাম সাহেব কে টাকা দিতে হয়। ঈমামরা সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলছে।

তারাও এখন বাসায় বাসায় গিয়ে আরবি পড়ায়। বিনিময়ে পূন্যের সাথে মোটা অংকের টাকাও নেন। অবস্থা দেখে মনে হয় দুনিয়ার সুখ শান্তির দিকেই তাদের আগ্রহ ,ঈমাম সাহেবরা বেহেস্তে যাবার ইচ্ছা কিছুটা কমিয়েছেন। এখন আর নামাজ পড়িয়ে পূণ্য অর্জনের জন্য ঈমাম পাওয়া যায় না। ভাল বেতন দিতে হয় সাথে থাকা খাওয়ার সু ব্যবস্থা।

যদি প্রশ্ন করা হয় পূণ্যের জন্য যদি নামাজ পড়ান তবে বেতন নেন কেন? সহজ উত্তর বাড়িতে বউ,পোলাপান আছে না? তাদের তো খাওয়াতে হবে? নাকি তারা না খেয়ে মরবে? কথা সত্য। কিন্তু বউ পোলাপান খাওয়ানোর জন্য একজন চুরি করে একজন পকেট মারে,ছিনতাই করে। তাদেরও তাহলে বৈধতা দিতে হয়। এসব তো তারা বউ পোলাপানের জন্যই করেন। কিন্তু চুরি বৈধ নয়।

বউ পুলাপান খাওয়ানের জন্য যে যুক্তি দেয়া হয় তা একই রকম। সে জন্য অনেক কাজ আছে। আর কাজের ফাঁকে ফাঁকে নামাজ পড়ার কথা তো ঈমাম সাহেবই বলে থাকেন। কিন্তু ঈমাম সাহেব কাজের ফাঁকে নামাজ পড়েন না। নামাজ পড়াই কাজ হিসেবে নিয়েছেন।

ধরে নিলাম একজন ঈমাম সাহেব কোন মসজিদেই চাকরি করেন না। কিন্তু তিনি তো পাঁচ বেলা নামাজ আদায় করেন? পাঁচ বেলা মসজিদে জামাতের সাথে আদায় করার পূণ্য আছে এটাও নিশ্চয় মানেন? এবার আসেন তিনি যখন ঈমামতির চাকরি নিলেন এখানে অতিরিক্ত কোন কাজটা করেন? তিনি তো নামাজের আগে পড়ে কোন মুসল্লিদের জন্য কোন নির্ধারিত কাজ করেন না। তিনি নিজের নামাজ পাঁচ ওয়াক্ত মসজিদে আদায় করেন। তাকে অনুসরন করে সবাই নামাজ পরে। এর জন্য ঈমাম সাহেব কে কোন অতিরিক্ত সময় দিতে হয় না।

অতিরিক্ত শ্রম দিতে হয়না। তবে এই কাজের জন্য তিনি পারিশ্রমিক নেন কি করে? আমি নিজের আনন্দের জন্য ব্লগ লিখি। আমি যদি এজন্য দাবী করে থাকি এজন্য আমাকে বেতন দিতে হবে। থাকা খাওয়া দিতে হবে। আপনারা কি বলেন? অতএব কি দাঁড়াল।

ঈমাম সাহেব নিজের পূণ্যের জন্য কাজ করেন কিন্তু বেতন নেন। অথবা ঈমাম সাহেব টাকার জন্য কাজ করেন কিন্তু পূণ্য প্রত্যাশা করেন। এক সময় ধর্মশালা গুলো ছিল শিক্ষালয়। জ্ঞান বিজ্ঞানে অনেক পাদ্রিরা নাম করেছিলেন। এই সময়ে ধর্মশালা গুলো কেন্দ্র করে বিদ্যালয় গড়ে উঠেনা।

বরং বিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে মসজিদ গড়ে উঠে। কে কার উপর নির্ভরশীল?এটা কি ধর্মশালা গুলোর ক্রমহ্রাসমাণ পতন? অবশ্যই পতন। আগে নতুন কেনা বিষয়ের সত্যতা যাচাই করতে ধর্মের আশ্রয় নিতে হতো। ধর্মের সাথে না মিললে কেউ মানতে চাইতোনা। আর এখন ধর্মনিজেকে টিকিয়ে রাখতে বিজ্ঞানের হাতে পায়ে ধরতে হয়।

এই বিষয়ে লিখতে পারছি কেবল ধর্মশালা ভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা হয়নি বলে। ধর্মভিত্তিক শিক্ষা থাকলে এই ভাবনা আমার মাথায় কখনোই আসতো না। ধর্ম সমাজের আগাছা। আগাছাতে ভর করে তো গাছ বেড়ে উঠতে পারেনা । ধর্মকে সুযোগ দিলে এতদিন সব আগাছায় ভরে যেত,গাছ আর দেখা যেতনা।

গতকাল মসজিদ কমিটির এক লোকের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম। তার মসজিদের ঈমাম সাহেব মাসে৪০হাজার টাকা ইনকাম করেন। আরবি পড়ান,ওয়াজ মাহফিল করেন নিয়মিত, দাওয়াত খেতে গেলে কিংবা কোন দোয়া পড়াতে চাইলেও তাকে কিছু টাকা দিতে হয়। তার পরেও মসজিদ কমিটির কাছে বেতন বাড়ানোর জন্য চাপ দিচ্ছেন। তিনি তো আল্লার খাস বান্দা, অপেক্ষাকৃত ভাল আলেম দেখেই তো মসজিদের ঈমাম নিয়েগ করা হয়।

দুনিয়ার লোভ তো তার নাই তবে এত টাকা দিয়ে তিনি কি করেন? ঈমামসাহেবরা অন্যের বাড়িতে নিয়মিত খেলেও ,নিজেদে বাড়িতে দাওয়াত খাওয়ান খুবই কম। ঈমাম সাহেবদের দান খয়রাতেও খুব কম দেখা যায়। তাহলে? জেলার প্রধান মসজিদ গুলোর প্রায়ই নিজস্ব সম্পতি আছে। দোকান কোঠা আছে। ভাড়া দেয়া হয়।

আমি জানতে চাইলাম মসজিদ কি ব্যসাও করে? মসজিদের ব্যবসা করার কি দরকার? মুসল্লিরা নিজের প্রয়োজনেই তো টাকা দিবে। তারা যদি টাকা না দেয় তবে বুঝতে হবে মসজিদ তাদের দরকার নাই। এমন যদি হয় একটা মসজিদের সমস্ত কার্যক্রম তার নিজস্ব দোকানের ইনকামে হয়। কিন্তু মসজিদে কোন মুসল্লি আসে না তখন কি হবে? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.