আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সন্তানের হাত থেকে ব্যাট কেড়ে নিয়ে শচীন শচীন বলে লাফানো বন্ধ করুন

তন্ময়-অন-রান.ব্লগস্পট.কম আমাদের দেশে এই অবস্থা বিদ্যামান। আমি নিশ্চিত যে পার্শ্ববর্তী ভারতেও এ সমস্যা আছে। সমস্যাটা হলো নিজের ইচ্ছা, ভালোলাগা ইত্যাদিকে সন্তানের উপর চাপিয়ে দেওয়া। যদি আমি বলি যে তোমাদের মতো বাবা-মা এর জন্যই আমাদের দেশে বিল গেটস, মার্ক জুকারবার্গ বা শচীন তৈরী হচ্ছে না বা এই সম্ভাবনা গুলো শুরুতেই মরে যায় তো তারা বলেন, সবাই কি আর তাদের মতো হতে পারে নাকি। তাদের কথায় ভুল নেই।

হয়তোবা সবাই শচীন বা বিল গেটস বা মার্ক জুকারবার্গ হতে পারবে না কিন্তু তার মানে কি এই যে নিজের স্বপ্নকে বলি দিয়ে অন্যদের স্বপ্নকে লালন করতে হবে? ছোট্ট মার্ক জুকারবার্গ যখন গণিতের বই ছুড়ে ফেলে প্রোগ্রামিং শিখতো তখন তার বাবা যদি তাকে কান ধরে পড়তে বসাতো তাহলে আজকের মার্ক জুকারবার্গকে আর দেখা যেতো না। ছোট্ট শচীনের ক্রিকেটার হবার ইচ্ছাকে যদি দমিয়ে দেওয়া হতো রক্তচক্ষু দিয়ে তাহলে আজ ক্রিকেটবিশ্বও পেত না শচীনকে। এই তো, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে আমার একজন পরিচিত পড়ে যার নূন্যতম ইচ্ছাও ছিলো না ডাক্তার হবার। কিন্তু তার বাবা-মা এর ইচ্ছা মেয়ে ডাক্তার হবে। তার ইচ্ছা ছিলো সে আর্কিটেকচার হবে।

কিন্তু তার মা আর বাবা মেয়েকে এমন ভাবে ইমোশনার ব্ল্যাকমেইল করছে যে মেয়েটির আর কিছু করারই ছিলো না। উপরে উপরে মেয়েটি ডাক্তারী তো পড়ছে কিন্তু ভেতরে ভেতরে মাত্র এই ৩ মাসেই দুমড়ে-মূচড়ে গেছে। ডাক্তার তো সে হয়তোবা হয়ে যাবে কিন্তু সারা জীবন সে এই অত্যাচারের কথা মনে রাখবে। তার ভেঙ্গে যাওয়া স্বপ্নের কথাও মনে রাখবে। জন্মের পর থেকে সময়ের সাথে সাথে মনের মধ্যে যে স্বপ্নগুলো গ্রো করে সেগুলোকে গলা টিপে হত্যা করে নিজেদের স্বপ্নগুলোকে সেখানে বসিয়ে দেওয়াই যেনো অধিকাংশ পরিবারের মূল কাজ।

এর পেছনে অবশ্য একটা বিশেষ কারণ আছে আর তা হলো আর্থিক অনিশ্চয়তা (সব ক্ষেত্রে নয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই)। আমাদের দেশের লেখাপড়ার উদ্দেশ্যই চাকুরী পাওয়া। এর বেশি কিছু নয়। কারণ ঐ একটাই, বেঁচে থাকতে তো হবে। স্বপ্নের পথে ছুটে চলাটা রিস্কি।

তাই বাবা-মা এরা চান না তাদের সন্তানের ভবিষ্যতটা অনিশ্চিত হয়ে পড়ুক। কয়জন বা চান্স পাবে ন্যাশনার ক্রিকেট, ফুটবল টিমে, কয়জনই বা হতে পারবে বিল গেটস বা মার্ক জুকারবার্গ বা স্টিভ জবস...ইত্যাদি অনেক কিছু চিন্তা করে বাবা মা এরা সন্তানের স্বপ্নকে কখনো রক্তচক্ষু, কখনো বা ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে হত্যা করে তাকে একটি গতাণূগতিক ধারায় ফেলে দেন। আর সেই যাতাকলে পড়ে রোবট এর মতো বের হয়ে আসে অনুভূতি আর স্বপ্নহীন একজন। কিন্তু এতে করে কিছু কর্মী তৈরী হলেও পুরো একটি ক্রিয়েটিভ দেশ তৈরী হচ্ছে না। অবশ্য সেই পর্যায় পর্যন্ত চিন্তা করে এই পোস্ট আমি লিখতেও বসি নাই।

লিখতে বসেছি শুধু এটা চিন্তা করে যে এভাবে হত্যা না করেও হত্যা করা কি বন্ধ হবে না? ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।