আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সন্তানের আকীকা

আমি খুবই সাধারণ আকীকা কাকে বলে : আকীকা শব্দের অর্থ কাটা, সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে যে প্রাণীকে জবাই করা হয় তাকে আকীকা বলে। চাই তা ছেলে হোক বা মেয়ে। কেননা, এ প্রাণীর হলক তথা গলা কাটা করা হয়। প্রাক-ইসলামী যুগে আকীকা : আকীকার প্রথা জাহেলী যুগ থেকেই চালু ছিল। মাওয়ারদী বলেন, ‘আকীকা বলা হয় ওই ছাগলকে ইসলাম পূর্বযুগে আরবা যা সন্তান ভূমিষ্ট হলে জবাই করত।

’ আব্দুল্লাহ ইবন বুরাইদা রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু বলেন, আমার বাবা বুরাইদাকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, ‘জাহেলী যুগে আমাদের নিয়ম ছিল, যখন আমাদের কারো পুত্র সন্তান জন্ম নিতো, সে একটি ছাগল জবাই করতো এবং এর রক্ত তার মাথায় লাগিয়ে দিতো। কিন্তু আল্লাহ যখন ইসলাম নিয়ে আসলেন, তখন আমরা একটি ছাগল জবাই করতাম এবং তার মাথা নেড়ে করতাম আর তার তাকে জাফরান দিয়ে মাখিয়ে দিতাম। ’ [আবূ দাউদ : ২৮৪৩; বাইহাকী : ১৯৭৬৬; মুস্তাদরাক : ৭৫৯৪] মা আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহা আকীকা সংক্রান্ত যে হাদীস বর্ণনা করেন, তা থেকেও এমনটি প্রতিভাত হয়। তিনি বলেন, ‘জাহেলী যুগের লোকেরা আকীকার রক্তে তুলা ভেজাতো এবং তা শিশুর মাথায় রাখতো। তাই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দেশ দিলেন তুলার স্থলে জাফরান তথা সুগন্ধি রাখা হয়।

’ [বাইহাকী, সুনান আল-কুবরা : ১৯৭৬৭] আল্লামা সুয়ূতী রহ. উল্লেখ করেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দাদা আব্দুল মুত্তালিব তাঁর জন্মের সপ্তম দিনে তাঁর আকীকা করেন। তিনি বলেন, ‘ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে ইবন আসাকির বর্ণনা করেন, আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুবলেন, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন জন্মগ্রহণ করেন, আব্দুল মুত্তালিব তার আকীকা করেন এবং তার নাম রাখেন মুহাম্মদ। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো কিসে আপনাকে তাঁর নাম বাবা-দাদার নামের সঙ্গে না মিলিয়ে রেখে মুহাম্মদ রাখতে? তিনি বললেন, আমি চেয়েছি যাতে তার প্রশংসা আল্লাহ করেন আসমানে আর মানুষে করে যমীনে। ’ [শাহরহুয যারকানী আলা মুয়াত্তা মালেক, পৃ. ৫৫৮; ইবন আব্দিল বার, আল-ইস্তিয়াব। ] তেমনি মূসা আলাইহিমুস সালামের শরীয়তেও আকীকার প্রচলন ছিল।

হাদীসে যেমন বর্ণিত হয়েছে আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘ইহুদীরা পুত্র সন্তানের আকীকা করতো কিন্তু কন্যা সন্তান হলে তার আকীকা করতো না। অতএব তোমরা পুত্র সন্তানের জন্য দু’টি ছাগল এবং কন্যা সন্তানের জন্য একটি ছাগল দিয়ে আকীকা করো। ’ [বাইহাকী, সুনান আল-কুবরা : ১৯৭৬০; মুসনাদ বাযযার : ৮৮৫৭। ] ইসলামে আকীকা : আকীকার বিধান প্রবর্তিত হয়েছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কর্ম ও উক্তি- উভয়প্রকার হাদীসের মাধ্যমে।

এ সম্পর্কে অনেক ‘আছার’ও বর্ণিত হয়েছে অনেক। নিচে এর কিছু তুলে ধরা হচ্ছে : প্রথমত. সুন্নাহ কাওলী বা মৌখিক হাদীস : ১. সালমান বিন আমের দাব্বী রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, ‘পুত্র সন্তানের সঙ্গে আকীকা রয়েছে। সুতরাং তার পক্ষে রক্ত প্রবাহিত করো এবং তার থেকে কষ্ট দূর করো। ’ [বুখারী : ৫০৪৯; তিরমিযী : ১৫১৫; মুসনাদ আহমদ : ১৭৯০৭। ] ২. সামুরা বিন জুনদুব রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘প্রত্যেক শিশুই তার আকীকা জরুরী।

জন্মের সপ্তম দিনে তার জন্য জবাই করা হবে এবং তার মাথা নেড়ে করা হবে আর নাম রাখা হবে। [আবূ দাউদ : ২৮৪০; মুসনাদ আহমদ : ২০০৯৫। ] ৩. উম্মে কুরয আল-কা‘বিয়া রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহার এক বর্ণনায় রয়েছে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আকীকা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন, উত্তরে তিনি বলেন, ‘ছেলে সন্তানের পক্ষে সমবয়সী দু’টি ছাগল এবং মেয়ে সন্তানের পক্ষে একটি ছাগল (দিয়ে আকীকা দেয়া যাবে) আর ওই ছাগলগুলো পাঠা হোক বা পাঠ তাতে তোমাদের কোনো অসুবিধা নাই। ’ [তিরমিযী : ১৫৯৯; মুসনাদ আহমদ : ২৭৩৭৩। ] ৪. ‘ইউসুফ বিন মাহাক থেকে বর্ণিত যে, তিনি হাফসা বিনতে আব্দুর রহমান রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহার কাছে গেলেন এবং তাঁকে আকীকা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন, তখন তিনি আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহা থেকে জানালেন যে, তিনি তাঁকে এ মর্মে অবহিত করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের ছেলে হলে সমবয়সী দু’টি ছাগল ও মেয়ে হলে একটি ছাগল দিয়ে আকীকা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

’ [তিরমিযী : ১৫১৩। ] এই প্রেক্ষিতে আরো প্রচুর হাদীস অন্য রেওয়ায়েতে এসেছে। ৫. ইয়াযীদ বিন আব্দুল্লাহ মুযানী তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘পুত্র সন্তানের পক্ষে আকীকা করা হবে আর তার মাথায় রক্ত স্পর্শ করা হবে না। ’ [ইবন মাজা : ৩১৬৬; আল-আদাদ ওয়াল-মাছানী : ১১০৮। ] ৬. আমর বিন শুয়াইব তার বাবা আর বাবা তার দাদার সূত্রে বর্ণনা করেন যে, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জন্মের সপ্তম দিবসে নবজাতকের নাম রাখা, তার আবর্জনা দূর করা (তথা নেড়ে করা) ও আকীকার নির্দেশ দিয়েছেন।

’ [তিরমিযী : ২৮৩২। ] ৭. আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহা আকীকা সংক্রান্ত যে হাদীস বর্ণনা করেন, তা থেকেও এমনটি প্রতিভাত হয়। তিনি বলেন, ‘জাহেলী যুগের লোকেরা আকীকার রক্তে তুলা ভেজাতো এবং তা শিশুর মাথায় রাখতো। তাই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দেশ দিলেন তুলার স্থলে জাফরান তথা সুগন্ধি রাখা হয়। ’ [বাইহাকী, সুনান আল-কুবরা : ১৯৭৬৭।

] ৮. হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘ইহুদীরা পুত্র সন্তানের আকীকা করতো কিন্তু কন্যা সন্তান হলে তার আকীকা করতো না। অতএব তোমরা পুত্র সন্তানের জন্য দু’টি ছাগল এবং কন্যা সন্তানের জন্য একটি ছাগল দিয়ে আকীকা করো। ’ [বাইহাকী, সুনান আল-কুবরা : ১৯৭৬০; মুসনাদ বাযযার : ৮৮৫৭। ] দ্বিতীয়ত. সুন্নাহ ফি‘লী বা কর্মগত হাদীস : ১. ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসান ও হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহুমার জন্য দু’টি দু’টি করে ভেড়া দিয়ে আকীকা করেন। ’ [নাসায়ী : ১২১৯।

] ২. আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘হাসান ও হুসাইনের (জন্মের) সপ্তম দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’টি ছাগল দিয়ে আকীকা দেন এবং তার মাথার কষ্ট দূর করার নির্দেশ দেন। আর তিনি বলেন, ‘তাঁর (আল্লাহর) নামে জবাই করো এবং বলো, বিসমিল্লাহি ওয়াল্লাহু আকবার, হে আল্লাহ, আপনার কাছে অমুকের জন্য এ আকীকা। ’ [বাইহাকী : ১৯৭৭২; মুসনাদ আবী ইয়া‘লা : ৪৫২১। ] ৩. আব্দুল্লাহ ইবন উমরা রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসান ও হুসাইন- উভয়ের প্রত্যেকের জন্যই প্রায় একইরকম সমবয়সী দুটি করে ভেড়া দিয়ে আকীকা দেন। ’ [হাকেম, মুস্তাদরাক : ৭৫৯০।

] নেড়ে করতে হবে, কাযা‘ করা যাবে না উপরের হাদীসগুলোতে থেকে আমরা যেমন জানলাম, শিশু জন্মের সপ্তম দিনে তার মাথা নেড়ে করতে বলা হয়েছে। তবে কাযা‘ থেকে নিষেধ করা হয়েছে। আর তা হলো, ‘বাচ্চার মাথা এমনভাবে নেড়ে করা যে তার মাথার বিভিন্ন স্থান অমুণ্ডিত থাকে’। [ইবনুল আছীর, নিহায়া : কাযা‘ অধ্যায়। ] ইবন উমর রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাযা‘ থেকে বারণ করেছেন।

তিনি বলেন, নাফে‘কে আমি জিজ্ঞেস করলাম, কাযা‘ কী? তিনি বললেন, বাচ্চার মাথার কিছু অংশ মুণ্ডানো আর কিছু অমুণ্ডিত রাখা’। [মুসলিম : ৩৯৫৯; বুখারী : ৫৪৬৫; ইবন মাজা : ৩৬২৭; আহমদ : ৪৯২৮। ] ইবন উমর রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি শিশুকে দেখলেন তার (মাথার) কিছু চুল নেড়ে করা হয়েছে আর কিছু অবশিষ্ট রাখা হয়েছে। তাকে দেখে তিনি এ থেকে বারণ করলেন এবং বললেন, তোমরা (মাথা) পুরোটাই মুণ্ডাও অথবা পুরোটাই অমুণ্ডিত রাখো। ’ [মুসনাদ আহমদ : ৫৬১৫; আব্দুর রাযযাক, মুসান্নাফ : ১৯৫৬৪১।

] আকীকা সংক্রান্ত করণীয় প্রথম. আকীকার গোশত ব্যবহার আকীকার পশু যবেহ করার পর এর ব্যবহার ঠিক কুরবানীর পশুর মতোই। ফলে তা তিন ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। একভাগ পরিবার, একভাগ সাদাকা ও একভাগ হাদিয়ার জন্য। ইমাম নাববী রহ. বলেন, ‘মুস্তাহাব হলো আকীকার গোশত থেকে (নিজেরা) খাওয়া, (গরীবদের মাঝে) সদকা করা এবং (বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়স্বজনকে) হাদিয়া পাঠানো। যেমন আমরা বলেছি এসেছি কুরবানীর পশুর ক্ষেত্রে।

’ [নাসায়ী : ৪২২৯; শরহু মা‘আনিল আছার : ১০১৫। ] অধিকাংশ আলেম আবার আকীকার গোশত কাঁচা সদকা না করে তা রান্না করে সদকা করা এবং রান্নার তা গরীবদের কাছে তা পাঠিয়ে দেয়াকে মুস্তাহাব বলেছেন। তবে যদি না পাঠিয়ে তাদেরকে বাড়িতে এনে দাওয়াত করে খাওয়ানো তাহলে সেটা আরও উত্তম। যদি আকীকার গোশত দিয়ে দাওয়াতের আয়োজন করা হয়, তাহলে তাতে ধনী-গরীব, আত্মীয়-পরিজন, বন্ধু-প্রতিবেশী সবাইকে শরীক করতে যাবে। এক কথায় তিনি যেভাবে চান এটাকে কাজে লাগাবেন।

প্রখ্যাত তাবেয়ী ইবন সীরীন রহ. বলেন, ‘আকীকার গোশত যেভাবে ইচ্ছে কাজে লাগাতে পারেন। ’ [আল-মাজমূ‘ : ৮/৪৩০। ] ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহ. এর সঙ্গে রান্নার কথাও যোগ করেন। তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, আকীকার গোশত কি রান্না করা হবে? তিনি বললেন, ‘হ্যা’। তাকে বলা হলো, তাদের জন্য এটা রান্না করা কঠিন হবে।

তিনি বললেন, ‘তারা সেটা সহ্য করবে। ’ এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ইবনুল কায়্যিম রহ. বলেন, ‘এটা এজন্য যে, তিনি যখন গোশত রান্না করে দেবেন, গরীব, মিসকিন ও প্রতিবেশিদের আর রান্নার কষ্ট ও খরচটুকু বহন করতে হবে না। একটি ভালো কাজে তা নতুন মাত্রা যোগ করবে। নিয়ামতের শুকরিয়ায় এটি অতিরিক্ত হিসেবে বরিত হবে। প্রতিবেশি, সন্তানাদি ও অভাবীরা এর মাধ্যমে আরও বেশি আনন্দিত হবে।

কারণ যদি কাউকে রান্না করা এবং খাবারের জন্য একেবারে প্রস্তুত কোনো গোশত কাউকে দেওয়া হয় তবে তিনি ওই গোশত পাওয়া থেকে অবশ্যই অধিক খুশি হবেন, যাতে পাকানো ও রান্নার কষ্ট সহ্য করার প্রয়োজন রয়েছে। ’ [তুহফাতুল মাওদূদ : ৫৯-৬০। ] ইমাম মালিক রহ. থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি তার সন্তানের আকীকা করেন। তিনি আকীকা কীভাবে করেছেন আমাদের জন্য তার বিবরণ দিয়েছেন। তদীয় ‘মাবসূত’ গ্রন্থে তিনি লিখেন, ‘আমি আমার সন্তানের আকীকা দিয়েছি।

প্রথমে যেসব ভাই ও অন্যদের দাওয়াত দিয়েছি তাদের যা খাওয়াবার ইচ্ছে করেছি তা জবাই করলাম। তারপর তাদের খাবার প্রস্তুত করলাম। এরপর আকীকার ছাগল জবাই করলাম। তা থেকে প্রতিবেশিদের হাদিয়া দিলাম। পরিবারের লোকেরা গোশত খেল।

হাড়-হাড্ডি যা অবশিষ্ট ছিল সেগুলো টুকরো করে রান্না করলাম। তারপর প্রতিবেশিদের আবার সেগুলো খাওয়ার দাওয়াত দিলাম। তারা খেল আর আমরাও খেলাম। মালিক রহ. বলেন, অতএব যার অর্থের প্রাচুর্য রয়েছে, আমি চাই তিনি এমন করবেন। আর যার নাই, তিনি আকীকা জবাই করবেন এবং সেখান থেকে খাবেন ও খাওয়াবেন।

’ [আল-মুনতাকা : ৩/১০৪। ] দ্বিতীয়. আকীকার চামড়া ও এর বর্জ্যসংক্রান্ত বিধান ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহ.-এর মতে আকীকার চামড়া, মাথা এবং ইত্যাকার অংশগুলো বিক্রি করা হবে তারপর তার মূল্য সাদাকা করা হবে। আকীকার বর্জ্য সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘চামড়া, মাথা এবং বর্জ্য বিক্রি করা হবে এবং তা সদকা করা হবে। ’ [তুহফাতুল মাওদূদ : ৭০; কাশশাফুল কিনা‌ : ৩/৩১। ] এদিকে ইমাম মালিক রহ.-এর যে কোনো অংশ বিক্রির বিপক্ষে।

তিনি বলেন, ‘আকীকার গোশত বা চামড়ার কোনো অংশই বিক্রি করা হবে না। ’ [আল-মুয়াত্তা বিহামিশিল মুনতাকা : ৩/১০৩। ] ইবন রুশদ বলেন, ‘আকীকার গোশত, চামড়া এবং এর যাবতীয় অংশের বিধান খাওয়া, সদকা করা ও বেচার দিক থেকে কুরবানীর পশুর মতোই। ’ [বিদায়াতুল মুজতাহিদ : ১৩৭৭। ] এককথায় আকীকার গোশত ও এর অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ব্যবহার তেমনি যেমন কুরবানীর পশুর গোশত ও তার অন্যান্য অংশের ব্যবহার করতে হয়।

আল্লাহ তা’আলা আমাদের জীবনের প্রতিটি পর্বকে তাঁর রাসূলের সুন্নতের রঙ্গে রাঙাবার এবং সকল অপসংস্কৃতি ও কুসংস্কার থেকে দূরে থাকবার তাওফীক দিন। আমীন। - আলী হাসান তৈয়ব সূত্র ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।