আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঢাকা ভ্রমণ, বই মেলা এবং কিছু প্রজাপতি সময়

আকাশ ভরা গাঙচিল ঢাকা ভ্রমণ, বই মেলা এবং কিছু প্রজাপতি সময় গতবছর ফেব্রুয়ারি মাসে আমি কি করছিলাম এখন ঠিক মনে নেই। তবে ব্লগে লেখালেখি শুরু করেছিলাম এটা মনে আছে। একটা বিষয়কে আমি আঁকড়ে ধরে রেখেছি পুরো একটা বছর। তাকে ঘিরে দুঃখ সুখের কবিতা লিখেছি। গল্পের মাঝে হারিয়ে গিয়ে নিজেকে খুঁজে পেয়েছি অন্য কোন আড্ডাবাজিতে।

যে বিষয়টা আমাকে জড়িয়ে রেখেছিলো, গত এক বছর যাবত আমি সে বিষয়টিকে এড়িয়ে যেতে পারিনি। এই বিষয়টির সাথে সাথে স্বাভাবিক নিয়মে জড়িয়ে গেছে কিছু মানুষের অস্তিত্ব। মানুষগুলো না থাকলে হয়তো এতোটা সময় নিয়ে কিছু লিখতে বসতাম না। ভাবতাম না এতো গভীরে। মানুষ আছে পাশে, থাকবে সাথে তবেই না আমরা বলবো এইতো মানব জীবন।

বিষয়টি কি? এটা হয়তো আর বুঝিয়ে দেয়ার প্রয়োজন নেই। হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন। ব্লগিং এবং একে ঘিরে থাকা কিছু মানুষের কথাই বলছিলাম। আমার যখন বৃষ্টিতে ভিজতে ইচ্ছে হয়েছে তখন ব্লগে একটা বৃষ্টির ছবি ব্লগ দিয়ে দিয়েছি। যখন অনেক বেশি মন খারাপ তখন নিজেকে ব্যাবচ্ছেদ করে লিখেছি আমার আমি।

আবার যখন খুব বেশি মন ভাল তখন দিয়েছি চুটিয়ে আড্ডা। ফেব্রুয়ারি মাস আর ঢাকা বইমেলা। এই কয়টা শব্দ শুনলেই প্রাণের মাঝে একটা দোলা দিয়ে যায় অচেনা কোন এক কোকিল। বিষণ্ণ সুরে গাইতে থাকে গান। আমি কি আর পাড়ি তাকে এড়িয়ে পথ মাড়িয়ে ফিরে যেতে? উহু, কখনো না।

তবে এও সত্য, জীবনে মাত্র ২ বার বইমেলায় যাওয়ার সুযোগ এসেছিল। প্রথমবার ২০০৬ সালে আর দ্বিতীয়বার ২০১২ বইমেলায়। আমরা সিলেটের ব্লগার বন্ধুরা চেয়েছিলাম বইমেলায় যাব এবং সব ব্লগার বন্ধুর সাথে আড্ডা দিবো। ঘুরে বেড়াবো এখানে সেখানে, বইমেলার পথে, মেলার ধুলোয় খুঁজে বেড়াবো বিখ্যাত মনিষীদের পায়ের ছাপের ফসিল। আশা পুর্ণ হয়েছে।

বইমেলায় যাওয়ার কথা বললাম প্রথমে অচেনা রাজ্যের রাজাকে। সে আমার খুব কাছাকাছি থাকে। ওর সাথে প্রায় দেখা হয়, আড্ডা হয়। তাই পরিকল্পনা করতে বসলাম আমরা ঢাকা গিয়ে কি কি করবো। কিন্তু মাত্র দুইজন দিয়ে কি আর মজা হবে! আমরা আমাদের সংখ্যা বাড়াই! কামরুল হাসান শাহি ভাইকে বললাম।

তার আগে সুদীপ্ত করকে বললাম। সবাই রাজি। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। আমার পরীক্ষা শেষ হবে যেদিন সেদিনই আমরা ছুটবো বইমেলার পথে। শাহি ভাইয়ের পরিকল্পনা বিরাট।

উনি ট্রেনে কেবিন নিয়ে যেতে আগ্রহী। আমিও রাজি। সুদীপ্তও রাজি। কিন্তু ঢাকা রওনা হবার আগের দিন রাজা আর শাহি ভাইয়ের কোন খোঁজ খবর নেই। রাগে আমার রীতিমত দিশেহারা অবস্থা।

ফোন দেই কিন্তু রাজা ফোন রিসিভ করে না। শাহি ভাই চুপচাপ। ফেসবুকে ম্যাসেজ দিলাম তার অনেকক্ষণ পর রিপ্লে এলো, সরি কবি। তার একটু পর রাজা জানালো সেও যাচ্ছে না। আমি ডিসিসন নিলাম কেউ না গেলে আমি একাই যাব।

নোমান নমি ভাইকে ফোন দিলাম। নোমান ভাই তো অনেক খুশি। উনি জানতেন আমরা আসবো কিন্তু আমি একা আসবো এমন কিছু কল্পনা করতে পাড়েন নাই। তবে এক্ষেত্রে সুদীপ্তকে ধন্যবাদ দিতেই হয়। ওর দায়িত্ববোধ আমাকে মুগ্ধ করেছে।

রেডিও আহার এজে নিশাত রহমান সারিকা ব্লগারদের নিয়ে তার শো ‘ব্লগারজ’ এর প্রথম থেকেই আমাকে অনুষ্ঠানে যেতে বলেছে। কিন্তু সিলেট থেকে ঢাকা গিয়ে আড্ডা দিয়ে আসা সম্ভব হয়নি, তাই যাওয়াও হয়নি। কিন্তু এবার সময়টা এমনভাবে ম্যানেজ করেছিলাম যেন এক ঢিলে অনেকগুলো পাখি মারতে পাড়ি। হয়েছেও তাই। সুদীপ্ত তার শত ব্যাস্ততা ফেলে শুধু নিশাতকে দেয়া কথা রাখতে আমার সাথে যেতে রেডি ছিল।

এমনকি তার শীতের কাপড় পর্যন্ত নেয়ার সুযোগ হয়নি। ভাগ্য ভাল আমি একটা শাদা চাদর নিয়েছিলাম এক্সট্রা। আমার শীতের ভীষণ সমস্যা। তাই এক্সট্রা প্রোটেকশন। তবে এতোটা শীত ছিল না তবে একটা মাত্র শার্টের কাছে শীত তখন অনেক বেশিই ছিল।

সুদীপ্তকে চাদর দিলাম। সে গায়ে দিল যখন তখন অনেক ভাল লেগেছে। আহ, একজনকে তো ঠাণ্ডা থেকে বাচাতে পেরেছি। তবে এই বিষয়টা বলার পেছনে খুব যুক্তি সঙ্গত কারণ আছে। এই চাদরটা আমার অনেক প্রিয়।

আমাকে অনেকে কবি বলেন। আর এই চাদরে চিরন্তন কবিরা মিলে মিশে একাকার হয়ে যান এটাই বাস্তব। চিরাচরিত যা দেখি আমরা, কাঁধে ব্যাগ, গলায় একটা প্যাঁচানো চাদর, মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি; এইতো চিরন্তন কবির অবয়ব। সুদীপ্ত মাঝে মাঝে আমাদের সাথে স্ট্যাটাস কাব্য খেলতে আগ্রহী হয়। চরম কিছু কবিতা লিখেছে সে।

এমন কি আমাদের ই-বুক ‘মুঠো ভরা রোদ’ এর শিরোনামের কবিতা সুদীপ্তর লেখা। এতো কিছুর পড়েও সে কবি উপাধি নিতে নারাজ। তার না কি এই নামে বিশাল অরুচি। কিন্তু আমি তাকে চাদরে জড়িয়ে হালকা একটা কবির অবয়ব বানিয়ে দিয়েছি সেদিন। শীতের কাছে আমরা সবাই অসহায়।

সুদীপ্ত তো নিরুপায়। ১৯ তারিখ রাত ১২ টার পরে সুদীপ্ত চলে এলো। ১ টার বাসের টিকেট করলাম আমরা। বাস চলছে সাথে সমান তালে চলছে আমাদের আড্ডা। এই গল্প সেই গল্প করতে করতে ঢাকা পৌঁছে গেলাম ভোর ৫ টার দিকে।

সুদীপ্ত নেমে গেছে আগেই আর আমি এবারই প্রথম ঢাকার মাটিতে পা দিতে যাচ্ছি এবং একা একা। এর আগে সাভারে এসেছিলাম। সেখান থেকে এক চক্কর ঘুরে আবার বাসায় ব্যাক করেছিলাম কিন্তু এবার কোন উপায় নেই। এই কংক্রিটের প্রাণহীন শহরে কিছুটা সময় আমাকে একাই এগিয়ে যেতে হবে। ফার্মগেটে নেমে রিক্সা নিলাম।

রিক্সাওয়ালাকে নির্দিষ্ট ঠিকানা বুঝিয়ে সিগারেটে টান দিতে গিয়ে ভাবলাম নোমান ভাইকে ফোনে জানাই আমি চলে এসেছি। ফোন দিয়ে ভয় পেলাম। নো এন্সার দেখে চমকে উঠলাম। নোমান ভাই যদি না আসে তাহলে আমি কৈ যাব? সায়েদাবাদ এবং গাবতলী, এই দুইটা ঠিকানা আমার। এর যেকোনো এক জায়গায় যেতে পারলেই আমি বেঁচে যাব কিন্তু যাব কিভাবে? আমি ঠিক কোথায় আছি আর কিভাবে যেতে হয় তা তো জানি না।

আবার নোমান ভাইয়ের মেসের এড্রেস নেয়ার প্রয়োজন বোধ করিনি। বাড়ি নাম্বার, রোড নাম্বার কিচ্ছু জানি না। ভাসা ভাসা শুধু ঠিকানা একটা আছে আমার কাছে। দ্বিতীয় বার ফোন দিলাম। এবার হতাস হইনাই।

আমি জানালাম চলে এসেছি এবং নোমান ভাইয়ের কথা মতো টাউন হলের সামনে নেমে গেলাম। এর পর অপেক্ষা। এর মাঝে দুটা সিগারেট শেষ করেছি। নোমান ভাইয়ের দেখা নাই। একটু পর ফোন এলো।

নোমান ভাই বলল, আরে আপনি এসে গেছেন? আমাকে ফোন দিলেন না কেন? আমি বললাম, এই তো এলাম একটু আগে। ভাবলাম আপনি আসছেন এজন্য আর ফোন দিলাম না। এর কিছুক্ষণ পর আবার ফোন। নোমান ভাই বললেন আপনার পেছনে তাকান। আমি তার ঠিক কিছুক্ষণ আগে পেছন ঘুরেছি।

তাই বুঝতে পারছিলাম না আমার পেছন এখন কোন দিকে। এদিক ওদিক তাকাতে নোমান ভাইকে দেখলাম। ফোন কেটে দিয়ে কুশল বিনিময়। এরপর ভোরের ঢাকাতে প্রথম যৌথ চা পান, সাথে সিগারেট। মেসে গিয়ে রেস্ট নেয়ার কথা তো ভুলেই বসে আছি।

আমাদের ২১ কবির কবিতা সংকলন ‘বহুমাত্রিক’ চোখে দেখলাম। হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখলাম। নিজের কবিতা পড়লাম। চমৎকার একটা অনুভূতি। আড্ডা শুরু করতে নির্দিষ্ট কোন টপিক লাগে না।

বিরতিহীন ভাবে চলল আমাদের আড্ডা। সকালে নাস্তা সেরে ফ্রেশ হয়ে বের হলাম। উদ্দেশ্য কোথায় জানি না। মেসে থেকে নেমেই দেখা হল বিশিষ্ট ব্লগার (এখানে বিশিষ্টর আগে একটা উপমা ছিল, সেটা দিলাম না) নিশাচর ভবঘুরের সাথে। একটু পর ব্লগার ধূসর ধ্রুবর আগমন।

ধ্রুবর সাথে আমার সেদিনই প্রথম দেখা এবং পরিচিত হওয়া। নিশার বিশাল একটা ভাব। লজিক্যালি কথা বলতে ওস্তাদ। বিশাল আড্ডা জমিয়ে ছিল এই নিশার আড়ালে লুকিয়ে থাকা সকাল বেলার কাক। তবে ঝামেলা একটু ছিলই, সে মাঝে মাঝে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে উধাও হয়ে যেত।

এসব বিষয় না, তবে আমি আর সুদীপ্ত ঠিক করে রেখেছিলাম কাকের অবস্থা খারাপ করবো। আমাদের সিলেট থেকে যাত্রা শুরু করার পর থেকেই সে ফেসবুকে এমন এমন স্ট্যাটাস দেয়া শুরু করেছিল এবং আরো বেশি বিব্রতকর অবস্থা যে সেই স্ট্যাটাস একটা পেজের এডমিন তার পেজে পাবলিশ করে দিয়েছিল। সেখানে আবার কাকের বিশাল অনুমতি ছিল। লজ্জাজনক ব্যাপার আরো ছিল তবে আমাদের ভাগ্য ভাল ছিল বিধায় সেই পেজের এডমিন আমাদের দুইজনের বিষয়ে এতো বেশি পাবলিসিটি দেখে মেলায় আমাদের সাথে দেখা করতে চলে আসেনি। ঈশ্বর বাচিয়েছেন।

কিন্তু এই কাককে কি এভাবেই শুকনো অবস্থায় ছেড়ে দিবো? উহু, কখনোই না। গত পরশু কাকের ওয়ালে শুরু করলাম কাব্য লেখা। সেসব কাব্য পড়লে মানুষ যে হাসতে হাসতে অথবা অবাক হতে হতে পাগল হয়ে যাবে এতে কোন ভুল নেই। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হল কোন এক অজ্ঞাত কারণে কাক আমাদের সেসব বিখ্যাত কাব্য ডিলিট করে ফেলেছে। আমাদের গন্তব্য টিএসসি।

জীবনের প্রথম ঢাকা ইউনির বিখ্যাত টিএসসি দেখলাম। এই স্থানের বিস্তৃতি কতটুকু তা না বুঝলেও এটা যে সত্যি একটা জনবহুল এলাকা তা ঠিকই বুঝেছি। সেখান থেকে শিখা চিরন্তন। সেই খা খা রোদের মাঝে বসে বসে শুরু হয়ে গেলো আড্ডা। নোমান ভাইয়ের মোবাইলে একজন ডিস্টার্ব করছে।

বারবার ফোনে জানতে চাচ্ছে শুভ আছে কি না। সেই লোককে কাক যেভাবে শায়েস্তা করলো তা রীতিমত অভিজ্ঞ মানুষের কাজ। যেসব কথা তখন আদান প্রদান হয়েছে তা শুনে আমাদের হাসি আর থামে না। বেটার উচিত শিক্ষা হয়েছে। শেষবার ফোনের ওপাশের মানুষটাকে বলা হল যে, আপনি যাকে খুঁজছেন সেই শুভই আপনাকে গালাতে বলল।

লোকটা বোধ হয় সত্যিই শুভকে দরকারে ফোন দিয়েছিল। এই কথা শোনার পর আর ফোন দেয় নাই। তখন দুপুর ১ টা ১৫ মিনিট। আমি নোমান ভাই, কাক আর ধূসর ধ্রুব। এবার আমাদের রেডিও আহাতে যাওয়ার সময়।

আমি, নোমান ভাই চললাম ওদেরকে বিদায় জানিয়ে। কথা হল বিকেল ৫ টার দিকে মেলায় মিট করবো। সুদীপ্তও চলে এসেছে আহা অফিসের সামনে। আমরা তিনজন মিলে আহা অফিস খুঁজে ভেতরে গেলাম। নিশাতের সাথে দেখা।

অনেক বেশি চঞ্চল একটা মেয়ে। অনেক পেইন দিয়েছি নিশাতকে আমরা। ঢাকাকে অনেক বেশি পচিয়েছি। নিজ নিজ শহরের ভাষায় কথা বলেছি। ব্লগ নিক খোলার ইতিহাস বলেছি।

সামু ব্লগের বিশাল ক্যাচাল নিয়ে আমরা তিনজন ক্যাচাল করেছি। নোমান ভাই অথবা সুদীপ্ত আমাকে ফাঁদে ফেলে অপবাদ দিয়ে ফেললো আমার নাকি সামুতে ১৫ টা নিক আছে। ওদের সাথে ঝগড়া বেঁধে গেলো। আরে কি বলে এসব? ১ টা নিকই আমি চালাতে হিমসিম খাই আর ওরা বলে কি না ১৫ টা নিক? মেজাজ চরম খারাপ হল। বললাম স্কিন শট দেন।

অযথা ঝামেলা করেন না মিয়া, যান। সুদীপ্ত চরম ক্যাচালি। সে বলে, নীরব সাহেব, স্কিন শটের ব্যাবসা আমরা করি না। সাহস থাকলে মাল্টি নিক ফেলে আসল নিকে এসে কথা বলুন। আমি তো পুরাই হতবাক।

মনটা কয়... এতক্ষণ যা বললাম সে সবই ছিল ফান এবং আমরা সবাই একটা সুস্থ সুন্দর ব্লগের পরিবেশ নিয়ে আসতে সুস্থ সুন্দর ব্লগিং করবো- এই আমাদের কামনা, এই আমাদের প্রার্থনা। আমাদের কারো মাল্টি নিক নেই। সেদিন আমরা খুব বেশি মজা করেছিলাম। আড্ডা যখন জমে উঠছে তখন ব্লগার চশমখোরের ফোন এলো। সে বলে দাদা আপনি কোথায়? আমি বললাম, আহা রেডিওতে।

সে বলে, দরজা খুলেন। মানে? চশম কি আহাতে এসেছে? ও যে আসবে তা তো জানি না আমি! দরজা খুলে দেখি ঠিক তো! চশম দাঁড়িয়ে। সে আমাকে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্য এসেছে। রিয়েলি এমন সারপ্রাইজ আর কি হতে পারে! থেঙ্কস চশম। এর পরের আড্ডা ছিল আরও বেশি মজার।

এবার আমরা চারজন। এজে শারিকা বিপদে পরে গেছে ঠিক বুঝতে পাড়ছি। সে মনে হয় না দ্বিতীয়বার আমাদের মতো এতোগুলো ফাজিল ব্লগারদের নিয়ে শো করার সাহস পাবে। তবে এটা সত্যি খুব বেশি মজার একটা আড্ডা ছিল। আমরা সবাই খুব বেশি আনন্দ করেছি।

শো শেষে এবার প্রাণের মেলা। কিন্তু তার আগে তো কিছু খাওয়া দরকার। ঘুম না হলেও চলে কিন্তু না খেয়ে আর কতক্ষণ। চা আর সিগারেট দিয়ে তো আর পেট ভরে না। কিন্তু আমি খাব কিভাবে? পেতে আমার বিরাট ঝামেলা।

উপস... বিকেল ৫টা নাগাদ আমরা চলে এলাম বইমেলায় কিন্তু এর মাঝেই হারিয়ে গেছে সুদীপ্ত আর নোমান ভাই। আমি আর চশম গল্পের বিভিন্ন গাঠনিক বিষয় আলোচনা করতে করতে কখন যে ওদের দুইজনকে হারিয়ে ফেলেছি তা নিজেরাই বুঝতে পারিনি। ফোন দিয়ে জানতে পারলাম ওরা চা খাওয়ায় বিজি। আমি আর দেরি করলাম না। চলে এলাম বইমেলায়।

এর মাঝে আহাতে আড্ডা চলার সময় শশী হিমু বেশ কয় বার ফোন দিয়েছে। ওর ভাইভা ছিল। তবে ভাইভা শেষ করে ঠিক মেলায় চলে এসেছে। মেলায় ঢুকতে যাব এমন সময় কাকের ফোন। বারবার ফোন দিচ্ছে।

আমি ওকে সিওর করলাম যে আমি প্রায় চলে এসেছি মেলায় কিন্তু বিশাল লাইন দেখে ঠিক বুঝতে পাড়ছি না কখন ভেতরে ঢুকতে পাড়ব। এমন সময় ব্লগার জয় রাজ খানের ফোন। ভাল লাগলো অনেক ওর ফোন পেয়ে। কিন্তু ওকে দেখে অনেক বেশি অবাক হয়েছি। সে যে এতো পিচ্চি এটা জানতাম না।

সে যাই হোক, জয় খুব কম কথা বলে। আমার সাথেই না কি দেখা করতে এসেছে। এবং দেখা হবার পরপরই সে চলে যেতে উদ্যত। ফোনে জয় জানালো সে বট তলায় আছে। আমি সবাইকে বট তলায় জমা হতে বলেছি।

কাক আর ধূসর ধ্রুব একসাথে আবার ওদিকে শশী আর দূর্বা জাহান একসাথে। বট তলায় গিয়ে প্রথম দেখা হল শশী আর দুর্বার সাথে। শশীর সাথে তো এর আগেও দেখা হয়েছে আমাদের। সিলেটে আমরা অনেক আড্ডা দিয়েছি। এবার দেখলাম দুর্বাকে এবং আমার এই ভ্রমণে যেসব মানুষদের দেখে অবাক হয়েছি দুর্বা তাঁদের একজন।

অবাক হবার কারণটা বলি। দুর্বার সাথে আমার ম্যাসেজে প্রায় কথা হয়। আমি ভেবেছি ওর সাথে দেখা হলে আমাদের স্বাভাবিক ভাবে কথাও হবে। কিন্তু ভার্চুয়াল দুর্বা আর বাস্তবের দুর্বা যে আলাদা তা বুঝলাম। সে খুব কম কথা বলেছে আমার সাথে।

শুধু সেদিন না, পুরো দুইদিন আমরা প্রায় একসাথে আড্ডা দিয়েছি কিন্তু দুর্বার সাথে আমার হাতে গোনা ৪/৫ টা কথা হয়েছে। এই স্বল্প কথার মাঝেও আমার প্রিয় কবির বইটা আমাকে গিফট করতে ভুলেনি। সেজন্য দুর্বার প্রতি অনেক অনেক ধন্যবাদ রইলো। এরপর আমরা সবাই গেলাম লিটোল ম্যাগ চত্তরে। সেখানে একে একে অনেকের সাথে পরিচয় হয়।

প্রথমে শিপু ভাইয়ের সাথে দেখা। শিপু ভাই পরিচয় করিয়ে দিলেন ব্লগার নীরব দর্শক, ব্লগার মিরাজ ইজ , ব্লগার অপরিণিতা। এরপর ব্লগার হানিফ রাশেদীন ভাই। আড্ডার মাঝে এলেন ব্লগার রেজোওয়ানা আপু। আপুর সাথে আমার অনেক বেশি মজা হয় ব্লগে কিংবা ফেসবুকে।

তিনি রিয়েলের নানু আর আমার আপু- এই নিয়ে আমাদের হালকা ঝগ্রাও চলে কিন্তু আপুকে দেখে খুশি হয়ে কথা বলতে গেলাম কিন্তু উনার চোখ দেখে মনে হল উনি আমাকে ঠিক চিনতে পারেননি। অপরবাস্তব নিয়ে ব্যাস্ত ছিলেন হয়তোবা। অপরবাস্তবের মোড়ক উন্মোচন শেষে ব্লগার রেজওয়ান মাহবুব তানিমের সাথে দেখা। আমি ওকে খেয়াল করিনি কিন্তু সে আমাকে দেখে জড়িয়ে ধরেছে। ওকে চিনতে একটু সময় লেগেছে।

হকচকিয়ে গিয়েছিলাম হঠাৎ করে তানিমকে তেড়ে আসতে দেখে। এই তানিমকে দেখে আবার অবাক হলাম। আমি ভেবেছিলাম তানিম মোটা করে একজন মানুষ। গুরুগম্ভীর কবি। কিন্তু ওকে দেখার পর ধারনা পাল্টে গেছে।

আমি ওকে বললাম দোস্ত মাইন্ড করিস না তোকে একটা কথা বলি, তোকে দেখে আমি অবাক হয়েছি। তোকে কেমন পাগলাটে মনে হচ্ছে। পাগলদের মতো হাঁটছিস। এ কথা শুনে মাইন্ড খেয়েছে কিনা জানি না তবে তানিমকে নিয়ে এতো দ্রুত সব বই কিনেছি যে সে আমার উপর রেগে গেছে। কেন এতো দ্রুত করতে হবে? আর আসলি তো এতো কম সময় নিয়েই বা আসলি কেন? কতো অনুরোধ করলো ওর বাসায় যেতে।

কিন্তু কি করবো আমার ব্যাগ তো সব নোমান ভাইয়ের মেসে। অনেক ক্ষণ ছিল সে আমাদের সাথে। তাসনুভা আকতার রিয়ার 'ইচ্ছে ঘুড়ি' বই কিনতে গেলাম। রিয়াকে এখানে ওখানে অযথাই দৌড়াতে হয়েছে আমার জন্য। অনেক চঞ্চল একটা মেয়ে রিয়া।

দারুণ ছড়া কবিটা লেখে। আমাদের সাথে অনেক সময় পর্যন্ত ছিল। তানিম আমাদের বাসে উঠিয়ে দিয়ে সে নিজে বাস ধরেছে। তখন প্রায় রাত ১০.৩০ বাজে। এতক্ষণ সে আমার সাথেই ছিল।

কতো গল্প যে করে ফেলেছি আমরা ঐ সময়ের ভেতর। তবুও আমাদের গল্প শেষ হয় না। আমরা যখন লিটল ম্যাগ চত্তরে তখন গ্যাব্রিয়েল সুমন ভাইয়ের সাথে দেখা। উনাকে একজন প্রকৃত কবির মতো লেগেছে এবং সুমন ভাইকে দেখে এবারও আমি অবাক হলাম। আমার ধারনায় ছিল উনি দেখতে চিকন কিন্তু উনি যে আমার চেয়েও চিকন হবেন আর এতো বেশি আটপৌরে তা ভাবিনি।

রঙ চটা একটা জিন্স, একটা সাধারণ পোলো টি শার্ট, পিঠে একটা দড়ি ব্যাগ ঝুলিয়ে ছন্নছাড়া ঘুরছেন মেলায়। আমি উনাকে নিয়ে চাণক্য বাড়ৈ এর বই পাপ ও পুনর্জন্ম কিনলাম সাথে সুমন ভাইয়ের এবং অনুকাব্য কিন্তু সুমন ভাই আমাকে অটোগ্রাফ দিলেন না। তার পরিবর্তে যা শুনালেন তাতে অটোগ্রাফ নেয়ার আর প্রয়োজন ছিল না। কবি আমাকে মনে মনে অটোগ্রাফ দিয়ে দিয়েছেন। সে কি কম কিছু? আমি আর অমত করিনি।

সুমন ভাই আমাকে গিফট করলেন জাফর আহমদ রাশেদের কবিতার বই দোনামোনা। বই কেনা যখন শেষ তখন দেখি কোথা থেকে উড়ে এলেন নষ্ট কবি । উনি যে এতো মজার মানুষ তা উনার নিক দেখে বুঝতে পারিনি। অনেক মজা হয়েছে নষ্ট কবির সাথে। মেলা থেকে বের হবার মুখে দেখা ব্লগার আরজুপনি আপুর সাথে।

উনাকে দেখে ভয় পেয়েছি। সেখান থেকে আমরা গেলাম ছবির হাটে। আমি, সুদীপ্ত, নোমান ভাই, কাক, অপরিণিতা, দুর্বা, শশী, তাসনুভা আকতার রিয়া, তানিম, নষ্ট কবি, আরজু পণি আপু, চশমখোর, ধূসর ধ্রুব। সুদীপ্তর গান আর সবার কোরাস সাথে নষ্ট কবির মাউথ অর্গানের সুর। সিগারেটের ধোঁয়ায় আড্ডা জমতে না জমতেই উঠে পড়লাম আমরা।

এবার সবার গন্তব্যে ফেরার পালা। রাত তখন ১.৩০ টা। আমি ঘুমানোর ভান করে শুয়ে রইলাম কিন্তু ঘুম আসে না। বাসে ঘুম হয়নি আবার সারাদিন এখানে ওখানে ঘোরাঘুরি সব মিলিয়ে প্রচণ্ড টায়ার্ড তবুও ঘুম আসে না। উঠে গেলাম নোমান ভাইয়ের কাছে।

সিগারেট খেলাম। পরে আমরা দুইজন শুয়ে শুয়ে শুরু করলাম সাহিত্য আড্ডা। হেলাল হাফিজ থেকে শুরু। তুমি যার তার, যে কেউ তোমার তোমাকে দিলাম না ভালোবাসার অপূর্ব অধিকার। এর পর হুমায়ূন আজাদ, তসলিমা নাসরিন।

এছারা যাবতীয় কবি লেখকদের নিয়ে আড্ডা দিতে দিতে ঘুমিয়ে গেছি হুট করেই। ঘুম থেকে উঠেছি পরদিন দুপুরে। এরপর নীলক্ষেত। তেহারি হাউজের তেহারির দাওয়াত ছিল। আমাদের হোস্ট ছিল দুর্বা।

আমি নোমান ভাই, কাক, অপরিণিতা আর দুর্বা। লাঞ্চ শেষে চারজন গেলাম আবার ছবির হাটে। চা খেয়ে আড্ডা শুরু। কত্ত যে মানুষ সেদিন জমেছিল কল্পনার বাইরে। আমাদের সাথে যোগ দেয় নোমান ভাইয়ের ফ্রেন্ড মহিউদ্দিন ভাই।

শেষবার অবাক হলাম ব্লগার সহচর ভাইকে দেখে। উনার মুখ দেখে বোঝা যায় না যে তিনি কতটা হেলদি। সে যাই হোক, আমাকে দেখে এমন জোরে চেপে ধরেছেন যে আমার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল কিন্তু উনি অনেক খুশি। আমার মুখ থেকে বের করালেন যে উনার আলিঙ্গনে আমি অনেক মজা পেয়েছি। আল্লাহর দানে উনি যে ভুঁড়ি পেয়েছেন তাতে আমাকে এই আশীর্বাদের সুফল স্বীকার না করে কিছুই করার ছিল না।

আড্ডা জমেছে বাদামে, মিষ্টি বড়ইএ, কাসুন্দি মাখান কাজি পেয়ারায় আর সিগারেটে। সহচর ভাই এসেই ব্লগের আড্ডা শুরু করলেন। তার একটু পর উনার মনে হল আমরা ছবি দেখে আসি না কেন? লাল টিপ চলছে বলাকায়। সবাই রাজি। আমরা চলে গেলাম বলাকায় কিন্তু টিকেট না পেয়ে হতাস হয়ে থেমে থাকলাম না।

সেখান থেকে চলে গেলাম স্টার রেস্টুরেন্টে। আমাদের সাথে পরে যোগ দেয় কাক, দুর্বা আর অপরিণিতা। আমাদের আড্ডার সবচেয়ে মজার ঘটনা ঘটেছে এই স্টার কাবাবে। কি খাব কি খাব করে চায়ের অর্ডার দিয়ে দিয়েছি। চা আসার আগে মনে হল শুধুই কি চা খাব? কি আর করা, অর্ডার দেয়া হল নান, চিকেন, মাটোন ল্যাগ।

খাবার আসার সাথে সাথেই বাদবাকি তিনজন চলে এসেছে। আমরা পারলে ১০ সেকেন্ডের মাঝেই খাবার শেষ করি। আহা ওরা এমন সময় এলো যে খাবার কেবল শুরু করেছি আমরা। কিন্তু ভাল খাবার ঠিক বাছাই করে আমরা নিয়ে নিয়েছিলাম। চিকেন কারো ভাল লাগেনি তাই চিকেন ওদের দিয়ে আমরা ল্যাগ দিয়েই চালিয়েছি একের পর এক নান।

খাবার মাঝে মাঝে চোখ ছিল সজাগ। কোথায় কোন সুন্দরী চলে আসছে আমরা তা ঠিক খেয়াল রেখেছি। আমি সহচর ভাইকে বললাম, এই সুন্দরীগুলো কৈ থাকে ভাই? সহচর ভাই নিরুপায়। কৈ থাকে তিনিও জানে না। তবে এক সুন্দরীর দিকে আমরা যেভাবে তাকিয়েছিলাম আর আমাদের ঠিক পেছনে দাঁড়ান সেই সুন্দরীর বড় ভাই অথবা দুলাভাইয়ের সামনে আমরা যেসব জোকস করেছি ভদ্রলোক সত্যি ভদ্র ছিলেন বলে আমাদের কথা শুনে নির্বিকার ভাবে জায়গা না পেয়ে চলে গেছেন।

যখন আমরা খেয়াল করলাম যে উনি সুন্দরীর কেউ তখন সবাই ভদ্র ছেলের মতো চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছি। বলে রাখি এইসময় আমরা চারজন ছিলাম। রমণী ব্লগার বন্ধুরা তখনো আমাদের সাথে যোগ দেয় নাই। কাড়াকাড়ি মারামারি করে খেলাম আমরা সবাই। অপরিণিতা খেলো কম।

ওর নাকি মেকআপ নষ্ট হয়ে যাবে এই ভয়ে। দুর্বা কিছুই খায়নি দু একটা শশার স্লাইস ছাড়া। ডায়েট কন্ট্রোল করে কি না! খাবার শেষে চা খেলাম আবারো এবং তখন আমাদের সাথে যোগ দেয় আর একজন ব্লগার রাজসোয়ান। আড্ডা চলল অনেকক্ষণ। কফিশপ গল্পের কথা মনে আছে নিশ্চয়ই সবার।

এই কফিশপ নিয়ে কতো যে গল্প অথচ আমি সেই বিখ্যাত কফিশপে কফি খাইনি। গল্প শেষে অনেকে এখানে কফি খেয়ে গেছে এবং আমাকে জানাতে ভুলেনি সে কথা। আমার ওয়ালে লিখে দিয়েছে আজ কফিশপে কফি খেলাম। এমনকি কফিশপের এক ফ্যান আমাকে দুদিন আগেও ম্যাসেজ করলো ভাইয়া কফিশপের এড্রেসটা বলেন। আমি তো শুধু জানি এটা ধানমন্ডিতে।

আর কোন এড্রেস আমার কাছে ছিল না। কিন্তু এবার যখন ঢাকায় এসেছি তখন কি আর এটা বাদ দেয়া যায়? খুঁজতে বের হলাম কফিশপ ক্যাফে ম্যাঙ্গো। তখন দুর্বা কাক আর অপরিণিতা বিদায় নিয়েছে। আমরা ৫ জন খুঁজে না পেয়ে ফোন দিলাম ত্রিনিত্রি আপুকে। এড্রেস জেনে আবার শুরু করলাম সার্চ দ্যা খোঁজ।

অবশেষে পেলাম কফিশপ কিন্তু দেখি গেটে তালা দেয়া। এখন? এতো খুঁজে পেলামই যখন তখন কি না কফিশপ বন্ধ? হতাস হবার আগেই আরিফ ভাই খুঁজে বের করলো কফিশপের ছোট গেট। দ্বিগুণ আনন্দে চলে গেলাম ভেতরে। প্রথম কিছুক্ষণ ঘুরলাম। সত্যি অনেক সুন্দর একটা কফিশপ।

পাশাপাশি তিনটা রুম। চমৎকার ডেকোরেশন। মৃদু আলো আর দারুণ দারুণ সব পেইন্টিং। দেয়ালে সুন্দর রঙ। সব মিলিয়ে দারুণ একটা জায়গা।

কফির অর্ডার দিলাম ৫টা কিন্তু এর একটু পরই কাক আবার এসে জয়েন করলো আমাদের সাথে। ক্যাপাচিনো খেলাম সবাই। ক্যামেরার ওভাবে ছবি তুলতে পারিনি তবে মহিউদ্দিন ভাইয়ের মোবাইলে তুলে ফেললাম বেশ কিছু ছবি। অসম্ভব সুন্দর কিছু সময় কাটিয়েছি আমরা সেই কফিশপে। আমি খুঁজছিলাম রিক আর নিশাতকে।

সাথে নীরবের বসে থাকা চেয়ারটাও। ভাবছিলাম এখানেই কতো ঘটনা ঘটেছে। নীরব, নিশাত আর রিক আর একজন লুকিয়ে থাকা রোদেলা। সব মিলিয়ে নস্টালজিক একটা সময়। আমি খুব বেশি ভাললাগায় ডুবে ছিলাম।

ভাবছিলাম যে কফিশপে একদিন রিয়েল একা একা এসেছে, যে কফিশপে ত্রিনিত্রি আপুও এসেছে তার বন্ধুদের সাথে আজ সেই কফিশপে আমিও এলাম একা একা ইতিহাসের সাথী হতে। হয়তো আমরা বিচ্ছন্নভাবে নয়, একদিন কফিশপে যাব তিনজন শুধু আড্ডা দিতে। এইতো আমার ঢাকা ভ্রমণ। কি করে এতো দ্রুত শেষ হয়ে গেলো সময়। নোমান ভাই আর কাক যদি আমাকে ধরে না রাখত তাহলে হয়তো এই কফিশপে আসাই হতো না।

আমি একদিনের জন্য গিয়েছিলাম ঢাকায় কিন্তু ওদের আন্তরিকতা আর দুর্বার বিধ্বংসী আচরণ আমি যদি আজকেই চলে যাই তাহলে সে আমাকে খুন করবে! সব মিলিয়ে দারুণ একটা সময় পার করেছি। নোমান ভাই আর কাক আমাকে বাসে তুলে দিতে এসেছিল। ওদের কথা আলাদা ভাবে না বললেই নয়। ইদানীং ওরা অনেক বেশি বিজি বিডি নিউজের তাদের স্পোর্টস সাইট নিয়ে। আমরা আসবো শুনে কাজ কমিয়ে রেখেছিলো।

আর পিঠে ল্যাপটপ নিয়ে ঘুরেছে নোমান ভাই। যখনই সময় পেয়েছে, যখনই প্রয়োজন পড়েছে নিউজ কাভার করেছে আর আমাদের সাথে আড্ডা দিয়েছে। নোটঃ অবাক করা বিষয় হল, আজকেই আমি পোস্ট দিলাম আর আজকেই নোমান ভাইয়ের জন্মদিন। শুভেচ্ছা রইলো অনেক অনেক। আর হুম, আজকের এই পোস্ট নোমান ভাইকেই উৎসর্গ করলাম।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.