আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জনগণই ক্ষমতার উত্স

মু. আশরাফ সিদ্দিকী মানুষ ভুলে যেতে চায় ক্যাঙ্গারু কোর্টের কথা, ছুটি থেকে ডেকে এনে আর্মি অফিসারদের হত্যা করার কথা। কোনোভাবেই কাম্য নয় বিনা কারণে মায়ের কোল খালি হবে, পিতৃহারা হবে সন্তান, বিধবা হবে স্ত্রী। তারা আমাদেরই ভাই বা বোন বা পিতা। আমাদেরই আত্মীয় তাহরীর স্কয়ার-আরববিশ্ব হয়ে সারা বিশ্বে গণতন্ত্রকামী আপামর জনগণ গণতন্ত্রের চর্চায় পরিশীলনের বার্তা শাসকগোষ্ঠীর মগজে প্রবেশ করাতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক চেতনায় জন্ম নেওয়া স্বাধীন রাষ্ট্র।

গণতন্ত্রের জন্য আমরা রক্ত দিয়েছি, জীবন দিয়েছি। জনগণ সকল ক্ষমতার উত্স। সরকারসহ সকল রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। জনগণের কল্যাণের জন্যই সরকার কাজ করে। প্রতিটি রাষ্ট্রই জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য।

জনগণই রাষ্ট্র পরিচালনার নিমিত্তে প্রতিনিধি নির্বাচন করে। তাই গণতন্ত্রের প্রধান চরিত্র জনগণ জোর করে চাপিয়ে দেওয়া কোনো ব্যবস্থা মানতে নারাজ, বরং উল্টো ফল-প্রতিবাদ, প্রতিরোধ। জনগণের সংশ্লিষ্টতাহীন কোনো ব্যবস্থা দেশের সুফল আনতে পারে না, এটা প্রমাণিত সারা বিশ্বে। বাকস্বাধীনতা বা মতপ্রকাশের অধিকার হরণ করে নাগরিকদের জন্য বহু কল্যাণকর কর্মকাণ্ড বা সুযোগ-সুবিধা প্রদান করলেও জনগণ তা আমলে নেয় না, উল্টা প্রতিবাদ করে। আর এসব কারণেই কোনো স্বৈরতন্ত্র বা রাজতন্ত্র বিশ্বে টিকে থাকতে পারছে না।

সার্বিকভাবে সুষ্ঠু সমন্বয়ের দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালনাই হল সরকারের কাজ। এতে রাষ্ট্রের সব অঙ্গ বা প্রতিষ্ঠান আনুগত্য মেনেই কাজ করে। কার্যকর সম্মিলন আর সমন্বয়ে সংগঠিত কাজের মাধ্যমেই জনগণের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটে। দেশের ভেতরে বা বাইরে দেশের জন্য ক্ষতিকর সব অপকর্ম নস্যাত্ করাও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বর্তমানে বিশ্বে সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রতার বৃদ্ধি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার বিষয়টিকে আরও সামনে নিয়ে এসেছে।

প্রতিরক্ষা বাহিনী এখন যুদ্ধের জন্য নয়, বরং নিরাপত্তার বিষয়ে আরও সতর্ক থাকতে হচ্ছে। ফলে বাহিনীগুলোর পরিধি বৃদ্ধিতে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও সচেষ্ট এবং নিরাপত্তার বিষয়ে আরও সতর্ক থাকতে হচ্ছে। ফলে বাহিনীগুলোর পরিধি বৃদ্ধিতে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও সচেষ্ট এবং নিরাপত্তার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করছে। কিন্তু লক্ষণীয় যে অনেকে উচ্চাভিলাষী হয়ে প্রকাশ ঘটাতে নানাভাবে সুশৃঙ্খল বাহিনীগুলোকে নিজেদের ক্ষমতা গ্রহণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে, বিতর্কিত করেছে জাতির সামনে। মানুষ ভুলে যেতে চায় ক্যাঙ্গারু কোর্টের কথা, ছুটি থেকে ডেকে এনে আর্মি অফিসারদের হত্যা করার কথা।

কোনোভাবেই কাম্য নয় বিনা কারণে মায়ের কোল খালি হবে, পিতৃহারা হবে সন্তান, বিধবা হবে স্ত্রী। তারা আমাদেরই ভাই বা বোন বা পিতা। আমাদেরই আত্মীয়। যারা অপরের কাঁধে বন্দুক রেখে গুলি করেছে, ক্ষমতা দখল করে স্বার্থ হাসিল করেছে, তারা নিজেদের জীবনেও একই পরিণতি ভোগ করেছে। বিভিন্ন ক্যান্টনমেন্টে যেসব সেনাশাসক বিনা বিচারে দেশপ্রেমিক অফিসার হত্যা করেছে তারা সময়োচিত জবাব পেয়েছে।

সামরিক শাসন দেশে অবৈধ ঘোষিত হয়েছে। সত্য চিরকালই সত্য। দেশ পরিচালনায় এই সত্য হল গণতন্ত্র। সামরিক শাসন দেশে জারি করে ক্ষমতায় এসে দেশের অগ্রযাত্রাকে যারা ব্যাহত করেছে তারা আঁস্তাকুড়ে গেছে। ধিক্কৃত হয়েছে।

সুগঠিত এই বাহিনীকে অতীতের মতো অনেক অবসরপ্রাপ্ত নানাভুাবে বিভ্রান্ত করতে অপচেষ্টায় লিপ্ত। তরুণ অফিসারদের দ্বিধান্বিত করে ফায়দা লুটতে চায়। নানাভাবে অপকর্মে ব্যবহার করতে চায়। কিন্তু তারা ভুলে যায় সেই দিন আর নেই। বিশেষ বাহিনীকে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করে জন্ম নেওয়া দলগুলোর জন্যও সর্তকবার্তা যে অপচেষ্টার কুফল দলগুলোকেই বইতে হবে।

জাতীয় নিরাপত্তা আর সার্বভৌমত্ব রক্ষার মহান দায়িত্বে রত কোনো বাহিনীকে যারা বিতর্কিত করেছে জাতি কোনোদিন ক্ষমা করেনি। ‘বিপথগামী সেনা সদস্য’ বলে বলে ফায়দা লুটেছেন তাদের মুখোশ উন্মোচন হওয়া দরকার। সময়ে সময়ে ধর্ম, দেশ রক্ষা, দেশ ক্রান্তিলগ্নে বা দখল হয়ে যাচ্ছে, সার্বভৌমত্ব কেড়ে নেওয়া হচ্ছে-এমন সব ধুয়া তুলে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে অনেকে নিজেদের ধান্দা করে নিয়েছেন। রাষ্ট্রযন্ত্র কারও ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের জন্য নয়। কুচক্রীরা সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার নকশার মাধ্যমে ধর্মীয় রাজনৈতিক দল আর দলগুলোর জোটকেই সঙ্গে নিয়ে কুকর্মে লিপ্ত থাকে।

রাজনৈতিক সেসব দলের অন্ধকার গলিপথ চললে ঠিকই হারিয়ে যাবে। সশস্ত্র বাহিনীর পেশাদারিত্বের প্রশংসা আজ সারা বিশ্বে, যা সমগ্র জাতির জন্য তা গর্বের। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ দেশপ্রেমিক পেশাদারিত্বে বিশ্বাসী বাহিনীকে কোনোভাবেই বিতর্কিত করা অসম্ভব তা আবারও প্রমাণিত হল। সাধুবাদ জানাই সশস্ত্র বাহিনীকে। অপপ্রয়াস আর অপকর্ম নস্যাতের মাধ্যমে প্রমাণিত হল বিপথগামীদের কোনো অপচেষ্টায় জাতিকে এমনকি গণতন্ত্রকে বিনষ্ট করা যাবে না।

জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমেই দেশ এগিয়ে যাবে। সুপ্রতিষ্ঠিত গণতন্ত্রই প্রত্যাশা। গণতন্ত্রের পরিশীলিত চর্চার মাধ্যমে উত্তরণের ধারা অব্যাহত থাকুক-এই আমাদের প্রতীতি। লেখক : উন্নয়নকর্মী ashrafsiddiqueeditu(a)yahoo.com Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.