আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার দ্বিতীয় কবিতার বই উত্তরাধিকারের হলফনামা থেকে পাঠকদের জন্য একগুচ্ছ কবিতা

ঘুড়ি ও মানুষ সুতো কেটে দিলেই কি সব শেষ হয়ে যায়? কতোদিন এইভাবে কাটা পড়ছে কতো ঘুড়ি মিলিয়ে যায় নিরুদ্দেশে। আবার ফিরেও আসে। মা বলতেনÑ ঘুড়ি হচ্ছে মানুষ। সেই থেকে ঘুড়ি দেখলেই মানুষের মুখ ভেসে আসে ঘুড়ি দেখলেই মনে পড়ে জিগাড় গাছের আঠার কথা ঘুড়ি দেখলেই মনে পড়ে বাবার গৃহপালিত গরুর কথা কতো শত বছর ধরে ঘুড়ি উড়ছে উড়ছে মানুষ। কতো শত বছর ধরে কাটা পড়ছে ঘুড়ি কাটা পড়ছে মানুষ।

ঘুড়ি ও মানুষ। মানুষ ও ঘুড়ি। কেবল জিগাড় গাছের আঠাগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে! আর মন খারাপ করে বসে আছে পাড়ার মেয়ে কুলসুম। ১০.০৪.২০১১ আগারগাঁও, ঢাকা উৎসবের রং কালো নয় কেন? আজ বৃষ্টি হবে মাথাভর্তি ধুলো বৃষ্টির জলে ধোঁয়ে নেবে কনে প্রত্যাশী কোনো সুপুরুষ। আর তাই, পাড়ায় পাড়ায় উৎসবের মিছিলে নেমেছে ন্যাংটা ছেলে-মেয়েরা সুন্দরী রমণীরা দাঁত বের করে হাসছে।

যেন নির্বাচনের হরিলুটের টাকার মতো সে হাসি। আমার খুব কান্না পাচ্ছে ঝিঁঝিঁ পোকার মতো হঠাৎ জ্বলে ওঠা মৃদু আলোয় আবার উৎসব হয় নাকি? মায়ের কথা মনে পড়ে মা বলতেনÑ লাল নীল রঙে সবার আগ্রহ থাকে না যতটা থাকে কালো রঙের উৎসবে। তিনি বলতেনÑ বেওয়ারিশ লাশের মিছিল দেখো শত্রু-মিত্র সবাই এখানে আসে। এমনকি অনেক অজানা অচেনা মুখও। মা, আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে।

উৎসবের রং কালো নয় কেন? কেন সাহসী পুরুষরা আস্থা রাখেন কেবল আলোর মিছিলে! ২২.১১.১১ আগারগাঁও, ঢাকা আমার জন্মের বছর আমার জন্মের বছর মায়ের শরীরে নাকি লেবু ফুলের সুবাস জড়িয়ে থাকতো কেউ কেউ মাকে বলতোÑ আমি নাকি খুব সৌভাগ্য বয়ে আনবো। যেদিন আমার জন্ম হলো একজোড়া ভাতশালিক ঘরের পাশে গান ধরেছিল যে ডাহুক সন্তান প্রত্যাশী হয়ে সারারাত রক্ত ঝরানোর কান্নায় কেঁদেছিল সেও নাকি আমার জন্ম আনন্দে উৎসব করেছিল। আর আমার মাÑ ডালিম গাছের ডালের উপর বসা কাকগুলোর জন্য ছুড়ে দিয়েছিল তাঁর স্নেহ। আমি কতোটা সৌভাগ্য বয়ে এনেছি জানি না। কানাগলি পেরিয়ে বাসায় ফেরার আগে বাজারে গিয়ে লেবুফল দেখলে আমার জন্মের কথা মনে পড়ে মনে পড়ে ভাতশালিক আর ডাহুকের কথা এমন কি মায়ের কথা! মা তুমি কেমন আছ? ভাতশালিক, লেবুফল কিংবা ডাহুকের কান্না শুনলে তোমারও কি কান্না পায়? ২৩.১১.১১ আগারগাঁও, ঢাকা কাক ও আমি অলৌকিক আলো হাতে দাঁড়িয়ে আছি ঘরভর্তি বিষণœ অন্ধকার।

বাইরে শীতল হাতের রমণীরা ওম দিচ্ছে যারা হতে পারতো আমার স্ত্রী কিংবা বান্ধবী! অথচ আদিপিতার প্রার্থনালগ্নে তাদের করতলে পাঠিয়েছি বিশুদ্ধ বাতাসের তারবার্তা। হয়তো রমণীরা ভুলে গেছে। আমি এখন পথের বাঁকে তারবার্তার লম্বা থামের দিকে তাকিয়ে আছি বাঁদুরঝোলা হয়ে তারে ঝুলছে কাক ও মানুষের দীর্ঘশ্বাস! বান্ধবী কিংবা স্ত্রীর জন্য দুঃখ হচ্ছে তারা কি দেখতে পাচ্ছে কাক কিংবা আমার মধ্যে পার্থক্য? ২১.০৩.১১ আগারগাঁও, ঢাকা বইটি প্রকাশ করেছে অনিন্দ্য প্রকাশ। স্টল নং ৬২, ৬৩ ও ৬৪ । ২০১২ একুশে গ্রন্থমেলা।

প্রচ্ছদ রাজিব রায়। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.