আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হাঁটার সিরিজ: পর্ব ৩: হাঁটার ভুল নিয়ম ও সাবধানতা

বাংলাদেশের মানুষকে ফিটনেস, খাদ্যাভ্যাস , শরীর চর্চা এবং সুস্থ্য জীবন যাপন সম্পর্কে সচেতন করাই আমার লক্ষ্য |আমার ব্লগ : http://fitnessbd.com আগের পর্ব: ২ এ হাঁটার নিয়ম গুলো জেনেছেন| সেখানে বলেছিলাম হাঁটার ক্ষেত্রে সব সময় মনে রাখতে হবে যে-- পুরা শরীর কে সঠিক posture এ রেখে, হাত ও পা ব্যবহার করে, মন স্থির করে, পর্যাপ্ত শক্তি দিয়ে হাঁটতে হবে|হাঁটা যতই সোজা ব্যায়াম মনে করুন না কেন, হাঁটার নিয়ম জানার পাশাপাশি হাঁটার ভুল দিক গুলো ও সতর্কতা জানতে হবে| তাহলেই হাঁটা সঠিক হবে ও হাঁটার ফল পাওয়া যাবে| আপনার কষ্ট সার্থক হবে| কারণ এত কষ্ট করে হাঁটবেন আর সেটা ঠিক নিয়মে হচ্ছে কিনা সেটা না জানলে হাঁটার সময়টি নষ্ট হবে| আমি দেখেছি অনেকেই হাঁটার সময় posture এর দিকে মনোযোগ দেয় না, মেরুদন্ড সোজা করে হাঁটে না| এতে শারীরিক সমস্যা, যেমন: ব্যাক পেইন,নেক পেইন, ইত্যাদি হয় ও দেহের গঠন নষ্ট হয়ে যায়| তাই হাঁটার নিয়ম গুলো যখন জেনেছেন, তাই হাঁটার ভুল নিয়ম গুলো জেনে নিলে সঠিক ভাবে হাঁটতে সাহায্য করবে| তাছাড়া যেকোনো ব্যায়ামেরই সতর্কতা আছে, তাই হাঁটার সতর্কতা গুলোও মেনে চলা দরকার|তা না হলে যেকোনো বিপদ বা শারীরিক সমস্যা হতে পারে| হাঁটার যে ভুল নিয়মগুলো এড়িয়ে চলবেন: ওয়ার্ম আপ ও কুল ডাউন না করা| অধিক সময়, যেমন: ৩০ মিনিট হাঁটলে, ওয়ার্ম আপের পরে স্ট্রেচিং না করা| শরীর সামনে বা পেছনে বাকানো| এতে ব্যাক মাসেলে চাপ পড়ে সমস্যা হতে পারে| মেরুদন্ড বা ব্যাকবোন বাকানো | নিচের দিকে মাথা হেলানো বা তাকানো| এতে আপনার ঘাড়, কাঁধ ও ব্যাকে সমস্যা বা ব্যথা হতে পারে| হাঁটার সময় হাত দুটো ব্যবহার না করা হাঁটার সময় হাত দুটোকে বেশি চেপে বা বাকিয়ে পেছনে নেয়া| এতে আপনার হাতে যেমন বেশি চাপ পড়বে, তেমন আপনার ব্লাড প্রেসার বেড়ে যেতে পারে| সামনে আগানোর সময় পা দুটোকে কোনাকুনি বা বাকা ভাবে বাড়ানো| হাত দুটো শরীরের প্রায় সাথে না লাগিয়ে সামনে বা পাশে প্রসারিত করা| হাত দুটো বেশি সামনে ও পেছনে নেয়া| পায়ের পাতা ফেলার সময় আগে আঙ্গুল দিয়ে চাপ দিয়ে তারপর গোড়ালি দিয়ে হাঁটা| এতে আপনার পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা হতে পারে| থপ থপ করে শব্দ করে হাঁটা বা কোমরে চাপ দিয়ে হাঁটা | এতে আপনার পায়ে বা কোমরে ব্যথা হতে পারে| বড় বড় স্টেপ ফেলে(overstride) আগানো ভুল নিয়ম|এতে অতিরিক্ত শক্তি খরচ হবে, কোমরে চাপ পড়বে| ফলে, আপনি পরে আর হাঁটার শক্তি পাবেন না| সব সময় একই গতিতে হাঁটা ভুল| ধীরে ধীরে হাঁটলে তেমন লাভ নেই| দ্রুত গতিতে হাঁটতে হবে, যাকে বলে হন হন করে হাঁটা| অনেক পুরানো, আরামদায়ক নয়, খুব ভারী বা ছোট জুতা পরে হাঁটা| খুব আটসাট ও ভারী পোশাক পরা| সাথে ভারী ব্যাগ ও অনেক জিনিস নিয়ে হাঁটা হাঁটার দিকে মন না দিয়ে অন্যমনস্ক হয়ে ও মন খারাপ করে হাঁটা হাঁটার সময় বই পড়া ও হাঁটতে হাঁটতে অন্য কাজ করা| ভরপেট খাবার খেয়ে সাথে সাথে হাঁটবেন না| হাঁটতে হাঁটতে একবারে অনেক বেশি যেমন দুই তিন গ্লাস পানি খাবেন না | খালি পেটে বা ক্ষুধার্ত অবস্থায় হাঁটবেন না| তাহলে শক্তির অভাবে হাঁটা সঠিক হবে না, হাঁটায় মন বসবে না| সপ্তাহে একদিন হলেও শরীর কে বিশ্রাম না দেয়া| শরীরকে বিশ্রাম না দিলে আপনার ব্যায়াম কাজে আসবে না কারণ, বিশ্রামের ফলে মাসেল তৈরী হবে, শক্তি ফিরে আসবে ও ব্যায়াম কাজ করবে| | অনেক সময় ধরে, যেমন: ২/৩ ঘন্টা হাঁটবেন না| এতে আপনি খুব ক্লান্ত হবেন, পরবর্তিতে আর কোনো কাজ করতে পারবেন না| তাছাড়া অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়| সব কিছুই করতে হবে পরিমানমত| তাই অতিরিক্ত ব্যায়াম শরীরের জন্য ভালো নয়--এটা মনে রাখবেন| নিচের ভিডিওটি দেখুন ও হাঁটার ভুল নিয়ম গুলো জানুন: [youtube Click This Link বাইরে হাঁটার সাবধানতা : বাইরে হাঁটতে গেলে একজন সঙ্গী থাকলে ভালো, বিশেষ করে যাদের কোনো শারীরিক সমস্যা আছে, যেমন: ডায়বেটিস, প্রেসার ইত্যাদি সাথে অবশ্যই মোবাইল, পরিচয় পত্র, নাম,ঠিকানা, বাসার বা আত্মীয়-স্বজনের ফোন নাম্বার, ইত্যাদি রাখা উচিত ডায়বেটিস, ব্লাড প্রেসারের রোগীরা ডাক্তারের নির্দেশ মত হাটবেন হার্ট, কিডনি, লিভার, arthritis ইত্যাদির কোনো সমস্যা থাকলেও ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে হাঁটুন| পায়ে বা শরীরের কোথাও কোনো ব্যথা, ফুলা ইত্যাদি থাকলে, হাঁটবেন না| ব্যাক পেইন থাকলে ডাক্তারের নির্দেশ নিয়ে হাঁটতে হবে| জ্বর বা কোনো রকম অসুখ নিয়ে হাঁটবেন না| সুস্থ্য হয়ে হাঁটবেন| রাতের বেলা খুব নির্জন জায়গায় হাঁটতে যাবেন না দিনের বেলা ব্যস্ত রাস্তায়, কোলাহল পূর্ণ রাস্তায় না হাঁটাই ভালো খোলামেলা, পরিষ্কার, মুক্ত বাতাস পূর্ণ জায়গায় হাঁটতে হবে শরীর খারাপ লাগলে অবশ্যই হাঁটা বন্ধ করে দিবেন একটু ক্লান্ত লাগলে অল্প পানি খেয়ে নিবেন ও ভালো লাগলে হাঁটা শুরু করবেন হাঁটতে হাঁটতে কোনো খাবার খাবেন না| হাঁটার ঠিক আগে ক্যাফেইন যুক্ত পানীয়, যেমন: চা, কফি খাবেন না| এগুলো শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বের করে পানিশুন্যতা সৃষ্টি করতে পারে| হাঁটার আগে উচ্চ মাত্রার প্রোটিন যুক্ত খাবার, অধিক ক্যালরি,ফ্যাট, ও শর্করা যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন| কারণ এগুলো হজম হতে অনেক সময় লাগে| তাই হাঁটার আগে এগুলো খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে| ভারী খাবার খাওয়ার ৩-৪ ঘন্টা, হালকা খাবার খাওয়ার ২-৩ ঘন্টা, এবং হালকা স্ন্যাকস খাবার ১ ঘন্টা পরে হাঁটবেন| তবে এটি এক এক জনের জন্য এক এক রকম হতে পারে| একেবারে কিছু না খেয়ে অথবা সারাদিন কিছু না খেয়ে হাঁটবেন না, এতে হাঁটার সময় শক্তি পাবেন না হাঁটা শেষ করার ১৫ মিনিট থেকে এক ঘন্টা পরে খাবেন| বেশি ঘাম হলে, অনেক সময় ও অনেক দূরত্বে হাটলে, electrolyte এর ঘাটতি হয়| সেক্ষেত্রে ডাবের পানি বা স্যালাইন খেতে পারেন| হাঁটার সিরিজ কেমন লাগছে তা জানাতে ভুলবেন না|আশা করি হাঁটার উপর পোস্ট গুলো আপনাদের কাজে লাগবে| আপনি ফিটনেস বিষয়ে আর কি জানতে চান তা জানান| আর আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন ফিটনেস বাংলাদেশের পোস্ট গুলো| কোন পোস্ট গুলো ভালো লাগছে তা জানাতেও ভুলবেন না| ধন্যবাদ| ফিটনেস বাংলাদেশের লেখা ভালো লাগলে, ইমেইলে নিয়মিত নতুন পোস্ট পেতে ফিটনেস বাংলাদেশ ব্লগে আপনার ইমেল ঠিকানাটি লিখে subscribe করুন| আগামী প্রকাশনা: ট্রেড মিলে হাঁটার নিয়ম Image by: freeworkoutsguide

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.