আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

২৩শে আগষ্টের একটি খুন.......এবং তার আগের কিছু ঘটনা................

আমি স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক। মনে হয় না এর থেকে বেশী কিছু চাওয়ার আছে। ২৩শে আগষ্ট রাত ১০:৩৫ রাশেদের গুলিবিদ্ধ লাশ পড়ে আছে। রাশেদের লাশের সামনেই নাফিজ পিস্তল হাতে দাড়িয়ে আছে। নাফিজের মুখে ভয়নাক অসুস্হ মানুষের হাসি খেলা করছে।

২৩শে আগষ্ট রাত ১০:৩০ রাশেদ সামনে দাড়িয়ে আছে। মুখ একদম ফ্যাকাশে হয়ে আছে তার। ভয়ে চেহারা শুকিয়ে গেছে। ভয় পাবেই না কেন ? তার সামনে পিস্তল হাতে নাফিজ দাড়িয়ে আছে। নাফিজের চেহারা ভয়ঙ্কর হয়ে আছে।

মুখে অমানুষিক হাসি। কি যেন বলছে রাশেদ নাফিজকে। কিন্তু নাফিজের কানে কিছুই ঢুকছে না। শেষবারের মতো রাশেদের দিকে তাকিয়ে নাফিজ রাশেদের মাথা বরাবর গুলি করে বসলো। ২৩শে আগষ্ট রাত ১০:০৫ নাফিজ রাশেদের বাসার নীচে দাড়িয়ে আছে।

অপেক্ষা করছে রাশেদের বাসায় ঢুকার জন্য। হাতে একটা জ্বলন্ত সিগারেট। মামুন, অর্ক ও জাকিকে বেরিয়ে যেতে দেখলো রাশেদের বাসা থেকে। সময় হয়ে এসেছে। সিগারেট ফেলে দিয়ে নাফিজ আস্তে আস্তে হাটতে হাটতে রাশেদের বাসার নীচে এসে দাড়ালো।

২৩শে আগষ্ট সন্ধ্যা ০৮:২৮ রাশেদ, মামুন, অর্ক ও জাকি। চারবন্ধু মিলে চরম হাসাহাসি করছে। রাশেদ: এই কাজটা করা কি ঠিক হলো ? নাফিজ কালকে আমাকে সামনে পেলে মেরেই ফেলবে। অর্ক: ঠিকই করেছে মামুন। নাফিজ মাঝে মাঝে কিছু ব্যাপারে পাগলামী করে মেজাজটাই খারাপ করে দেয়।

আজকে বিকালে হাউকাউ করে মেজাজ খারাপ করে দিছে। ২৩শে আগষ্ট রাত ০৮:৩০ নাফিজের মোবাইলে একটু আগে একটা sms এসেছে। তার খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু মামুন এই smsটা পাঠিয়েছে। নাফিজের মাথায় আগুন ধরে গেছে। প্রচন্ড রাগে সে পাগল হয়ে যাচ্ছে।

খুব খুব ভয়ঙ্কর একটা কাজ করতে ইচ্ছে করছে নাফিজের। অবশেষে নাফিজ মনস্হির করলো। আজ রাতেই সে ভয়ঙ্কর একটা ঘটনা ঘটাবে ঠিক করলো। ২৩শে আগষ্ট রাত ০৯:১০ নাফিজ আস্তে আস্তে তার বাবার রূমে ঢুকলো। রূমে এখন কেউই নেই।

সবাই খেতে বসেছে। নাফিজের বাবা একজন পুলিশ অফিসার। নাফিজ একটা কাজে রূমে এসেছে। আজকে রাতের জন্য বাবার পিস্তলটা তার দরকার। আস্তে করে আলমারীটা খুলে বাবার পিস্তলটা বের করলো নাফিজ।

গুলি আছে নাকি একবার দেখলো। সব ঠিকঠাক করে পিস্তলটি নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে গেলো। ২৩শে আগষ্ট রাত ০৮:২০ জাকি: দেখি তো...smsটা কি লিখলি ?? Sms এ লেখা, " নাফিজ অর্পা তোকে না করে দিয়েছে জানতে পারলাম। আসলে এমনটাই হবে জানতাম। তোর খারাপ লাগবে ভেবে এতদিন তোকে একটা কথা জানাইনি।

রাশেদ ও অর্পা অনেকদিন ধরেই একে অপরকে ভালোবাসে। " ২৩শে আগষ্ট সকাল ১১:০০ অর্পা ও নাফিজ একটি রেস্টুরেন্টে বসে আছে। নাফিজের চোখ-মুখ লাল হয়ে আছে। প্রচন্ড লজ্জা ও অপমানে সে মারা যাচ্ছে। অর্পা ও নাফিজ অনেকদিন ধরেই একে অপরের খুব ভালো বন্ধু।

কিন্তু এই সম্পর্কটি শুধু বন্ধুত্ব ভাবতেই নারাজ নাফিজ। নাফিজ অর্পাকে অসম্ভব ভালোবাসে। নাফিজ ভাবতো অর্পাও তাকে ভালোবাসে। সেই বিশ্বাস থেকেই নাফিজ অর্পাকে আজ তার ভালোবাসার কথা বললো। কিন্তু অর্পা মুখের উপর না করে দিয়েছে তাকে।

২৩শে আগষ্ট রাত ০৮:০০ রাশেদ, মামুন, অর্ক ও জাকি। সবাই রাশেদের বাসায় বসে আড্ডা দিচ্ছে। রাশেদের বাসা আজকে খালি। নাফজ ও অর্পাকে নিয়েই আলোচনা। হঠাৎ করেই মামুন একটি বুদ্ধি দিলো।

কালকে যেহেতু সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাচ্ছে তাই আজকে রাতে নাফিজকে একটা sms পাঠাবে বলে ঠিক করলো সবাই। আজকে আরো বেশী কষ্ট পাক। ২৩শে আগষ্ট বিকাল ০৫:০০ মোবাইলে অর্ক ও অর্পা কথা বলছে। অর্ক: আচ্ছা আমরা সবাই জানতাম তুইও নাফিজকে পছন্দ করিস। তাহলে আজকে ওকে না বলে দিলি কেন ? অর্পা: দোস্ত আজকে নাফিজ এমনভাবে হঠাৎ করে কথাগুলো বলে বসলো যে মুখ দিয়ে কোন শব্দই বের হচ্ছিলো না!!! কি বলবো না বলবো ভেবেই হুট করে না বলে ফেলেছি।

অর্ক: বেচারা পুরা দেবদাস হয়ে গেছে এখন। উল্টাপাল্টা কথা বলে একটু আগে মেজাজটাই খারাপ করে দিলো সবার। বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছি গাধাটাকে। অর্পা: আমি নাফিজকে প্রচন্ড ভালোবাসি। আজকে হঠাৎ করে টেনশনে বোকার মতো কাজ করে ফেললাম।

আমিতো ফোন দিলেও এখন ফোন ধরবে না ও। কালকে সবাই মিলে ওকে একটু নিয়ে আসিস তো। সরি বলে সব বুঝিয়ে বলবো ওকে। অর্ক: দুজন দুজনকেই পছন্দ করিস তারপরও কত নাটক দেখালি তোরা!!! আচ্ছা নিয়ে আসবো গাধাটাকে। খুব ভালো বন্ধুদের সাথে তো মজা করাই যায়......কি বলেন আপনারা ?? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।