আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সামহোয়্যারইন ব্লগারস বার্ষিক বনভোজন ও আমার ব্যক্তিগত অনুভূতিনামা

© এই ব্লগের সকল পোষ্ট,ছবি,থিম প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে কোথাও বিনা অনুমতিতে প্রকাশ করা নিষেধ । অনুভূতির কোন ব্যাখ্যা নেই। অদ্ভুত এক মিথস্ক্রিয়া অথবা রসায়ন এই অনুভূতির ভেতরে,বাহিরে। অনেকটা লালনের ঐ “জলের উপর পানি” গানের মত । এই ইট পাথরের শহুরে জীবনে যেখানে আমরা প্রতিনিয়ত যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছি,অনুভূতি গুলো যেখানে ভোতা হয়ে যাচ্ছে,সেখানে কৃত্রিম মানবের খোলশ ভেঙ্গে বের হয়ে আসার জন্য এরকম উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাতেই হয়।

শুরুতেই যেই মানুষটির কথা বলব তিনি ছাইরাস হেলাল। আমাকে আপনার এতটা কাছের মানুষ ভাবার জন্য কোন বিশেষণ ব্যবহার করে অনুভূতি গুলোকে ছোট করতে চাই না। শুধু বলব আপনি আমার কাছে কি সেটা আপনার অন্তর জানে,আর আমি আপনার কাছে কি সেটা জানে আমার অন্তর। পিকনিকের আয়োজনের খবরটা আমাকে প্রথমেই হেলাল ভাই জানান সিনেমাখোরদের আড্ডার সময়। পরতীতে জিসান ভাই,যার অক্লান্ত পরিশ্রম আর চেষ্টার ফলে যখন পিকনিকের ছোট্ট বীজ যখন মহিরূহ হতে শুরু করে তখন আমি আরও সম্পৃক্ত হই।

চির তরুণ জিসান শা ইকরাম ভাই নিজ থেকে আমার খোঁজ নিতেন প্রায়ই। এভাবেই চলতে শুরু করে পিকনিকের স্বপ্ন পথ। মাঝখানে ব্লগে ঝড় উঠে,কুরুচিপূর্ণ অনেক কুৎসায় যে জিনিসটা আমাকে আহত করে সেটা হচ্ছে, কর্পোরেট লেবাস পরে যে কর্পোরেট পলিটিক্স এর নোংরামি চলে সব জায়গায়,ব্লগের মত একটা স্বতন্ত্র মাধ্যমকেও কুলষিত করতে অনেকেই পিছ পা হয় না। হতে পারে ব্যক্তিগত মতের অমিল তাই বলে ব্যক্তিগত আক্রমণ ! কিন্তু সবাই জানে শুভ আর অশুভের লড়াইয়ে সব সময় প্রথম জনেরই জয় হয়। আর তাই সেই মন্ত্র কে সাথে নিয়ে আগুয়ান হই আমরা।

আর এখানে যেই মানুষটার কথা বলতে হয় তিনি হচ্ছেন শিপু ভাই। শিপু ভাইের প্রমাণের কিছু ছিল না। তিনি ব্যক্তি স্বার্থ ভুলে এই পিকনিক আয়োজনের সকল কাজে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন। নানা প্রতিবন্ধকতা দূর করে,ফ্রাইডে থার্টিনের সকালে রওনা হই শাহবাগে। সেখানে দিনের আলো বাড়ার সাথে সাথে আসতে থাকেন সবাই।

শাহেদ ভাই এর গিটারের মুর্ছণা,নষ্ট কবির মাউথ অর্গান,পানকৌড়ির হেরে গলায় গান পিকনিকে আমার মত অন্তর্মুখী মানুষ করে তুলে বহির্মুখী কিছুটা হলেও। নিজের স্বাভাবিক কাঠিন্য ভুলে যাই নিশাচর ভবঘুরে,স্বর্ণমৃগ,ছোট মির্জা, মনসুর ভাইয়ের কাছে। কত বছর পর খেলতে নামা ক্রিকেটে কিংবা ভাওয়াল বনের স্তব্ধ নিস্তব্ধতায় হঠাৎ করে যেন খুঁজে পাই নিজের হারিয়ে ফেলা কৈশোরকে। ভাবতে থাকি একটা কথাই “ঐ পুরনো আমিই হয়তো বেশ ছিলাম”। আমার এই নিঃসঙ্গ বিচরণ ও যে কোন একজনের চোখে পরেছিল,সেটা শুনে অবাকই হয়েছিলাম।

আমার সেই হেটে বেড়ানোর পথে খানিকক্ষণের জন্য হলেও নতুনত্ব আসে। নিমচাঁদ ভাইয়ের জীবন দর্শন,মোয়াজেজম ভাইয়ের স্বদেশপ্রীতি,তারিক ভাইয়ের আন্তরিকতা আমাকে নতুন করে একটা অনুপ্রেরণা দেয় নিশ্চুপভাবে। অনেকটা বলতেই হয় “Life is beautiful, includes of lots of colors.” অথৈ সাগর ভাই,মাহি,আশকারি,সুমন,আশরাফ ভাই,নোমান ভাই,মেঘ এদের আন্তরিক্তা সত্যিই অবাক করে দেয়। বলতে তখন বাধ্যই হই। বিচ্ছিন্ন এই শহরে জীবনে আমরা-আমাদের এই ভ্রাতৃত্ব বোধ নতুন করে একটা আশার বাণী শোনায়।

এটাই যে,আমি এই শহর ঢাকায় নির্বাসিত নই। আমার সাথে এখন অনেকেই আছেন যারা আমার মতনই স্বপ্ন দেখেন। শেষে ফেরার পথে শিপু ভাইয়ের একটা কথাই মনে পরছিল,আমাদের দেখে কেউ বলবেনা আজ অনেকেরই প্রথম দেখা কিংবা দ্বিতীয়। আসলেই তাই ভালোলাগার,ভালোবাসার এমন সেতু বন্ধনে সর্বদা আছি,থাকতে চাই এবং থাকবো।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.