আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পর্যবেক্ষণঃ সামহোয়্যারইন...ব্লগ

"জেগে উঠুক তারুন্য,জেগে উঠুক স্বপ্ন,জেগে উঠুক মনুষ্যত্ব.........." আমি প্রায় বছর দুয়েক ধরে সামহোয়্যারইন...ব্লগকে দেখছি। প্রথম ছয় মাস শুধু পড়তাম, তারপর থেকে নিয়মিত লিখতাম, তবে গত বেশ কয়েক মাস যাবত লেখার চেয়ে পড়ার মাত্রাটাই বেশি ছিল। এই দীর্ঘসময়ে এই ব্লগের বেশ কিছু মানুষের সাথে ব্যক্তিগত এবং ভার্চুয়াল যোগাযোগ হয়েছে, কারো সাথে ব্লগীয় সম্পর্ক ছাপিয়ে নতুন সম্পর্ক হয়েছে, আবার কারো সাথে তিক্ত সম্পর্কও হয়েছে। এই বিশাল সময়ে সামহোয়্যারইন...ব্লগকে প্রায় প্রতিদিনই নতুন করে আবিষ্কার করেছি। আমি সাধারনত এই ব্লগিং সংস্কৃতিকে অন্যভাবে দেখি, তাই নিচের ধ্যান-ধারনা নিয়েই চলার চেস্টা করেছি সবসময়, আর তাই সামহোয়্যারইন...ব্লগ কেও একটু ভিন্নভাবে মূল্যায়ন করি আমি।

সেটাই সবার সাথে শেয়ার করছি। আমি যখন সামহোয়্যারইন...ব্লগ এ লিখা শুরু করি, তখনো দারুন একটা পরিবেশ ছিল। আড্ডা পোস্ট হত, নাস্তিকেরাও পোস্ট দিত, স্যাটায়ার আসত, ফেইসবুকে নতুন নিক নিয়ে অনেক আলোচনা চলত, ছাগুদের নিধন করা হত – সবই একটা মাত্রার মধ্যে ছিল যার কারনেই হয়ত তখনকার সমসাময়িক ব্লগারদের মধ্যে একটা বেশ ভাল সম্পর্ক গড়ে উঠেছে, তারো আগেকার ব্লগারদের মাঝেও আশ্চর্য রকমের এক সম্পর্ক ছিল, দৃঢ় আর বিশ্বাসী। কত আড্ডা হয়েছে, কত ফটোওয়াক হয়েছে হিসেব নাই। কিন্তু এর পরে ধীরে ধীরে সামহোয়্যারইন...ব্লগ বেশ পালটে যেতে শুরু করে, মডারেশন থেকে শুরু করে কিছু চেনা মানুষও কেমন জানি হয়ে যায়।

পরে অনেক ভেবে চিনতে কিছু কারন পেয়েছি। সেই সাথে সামহোয়্যারইন...ব্লগ এর আমূল পরিবর্তনেরও কারন পেয়েছি। ব্লগটা দখল করে নিয়েছে তথাকথিত কিছু বালওয়ালা বাম এবং নাস্তিকঃ একটা ছবি দিয়েই অনেক কিছু পরিষ্কার করে দেয়া যায়। এই তথাকথিত কিছু বালওয়ালা বাল এবং নাস্তিকগুলো যেকোনভাবেই হোক ব্লগের মডারেটরদের হাত করে নিয়েছে বা মডারেটরদের উপর তারা কথা বলার অধিকার রাখে। সামান্য কোন ইস্যু পেলেই এই তথাকথিত কিছু বালওয়ালা বাল এবং নাস্তিকগুলা যাদের বেশিরভাগই বেকার তারা মানব বন্ধন করেছে, সভা করেছে, ব্লগে পোস্ট দিছে, গ্রুপ ব্লগিং করে ছাগু ট্যাগ দিয়েছে (খেলেছে) , ইচ্ছামত কার্যকলাপ চালিয়েছে, ব্লগের মডারেটররা তাদের উতসাহ দিয়েছে ।

ব্লগের বিশাল একটা অংশকে যন্ত্রনা দিয়েছে তারা, সময় পেলেই তাদের রস ফালানো মানসিকতার বহি প্রকাশ করেছে, মডারেটররাও “বাহ, এই তো বাংলা ব্লগস্ফিয়ারের জাগরন” বলে হাতে তালি দিয়েছে। তারাও দ্বিগুন উতসাহে বিশেষ মাসে বা দিনে তাদের এই জাগরনের স্ফুলিং ছুটিয়েছে, তবে ফলশ্রুতিতে তাদেরকে খুব ভালভাবে আলাদা করা গেছে। ব্লগে তাদের মাল্টি নিকগুলাই বারবার ঘুরে ফিরে নিজেদেরকে প্রমোট করার চেস্টা করে গেছে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তারা আসলে “ভাত” পায় নাই, এই “ভাত” না পাবার ক্ষোভ থেকেই “ বাংলাদেশ অনলাইন এক্টিবিষ্ঠা” নামে একটা বাল ফালানো সংগঠন করছে, সেইটাও যখন ভাত পাইলো না তখন “ম্যাজিক মুবমেন্ট” করছে, সেইটারে দিয়া “ভাত” পাওনের লাইগা কিছু “সাংবাদিকতাগিরি” ফলাইছে। এখন দেখলাম সেইটাও ভাত পায় নাই। আসল উদ্দেশ্যটা কি? উহারা দেশ প্রেমিক কোন এন্টি-ছাগু বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবীত লোক না, উহারা হইল বড় বড় বালওয়ালা তথাকথিত বাল থুক্কু বাম।

এই রিটায়ের্ড থিওরী নিয়ে যে কেউ চলতে পারে না, সমাজ আর রাষ্ট্র তো থাক বহু দূরের কথা সেটা এই তথাকথিত বালেরাও জানে আর জানে বইলাই নিজেদেরকে তারা “সুবিধাবাদী”-তে কনভার্ট কইরা নিছে, সময় পাইলে দেশ নিয়া লাফায়, সুবিধা দেখলেই বর্ডারলেস পৃথিবী লইয়া লাফায়। সময় পাইলেই বাংলাদেশের সংস্কৃতির লাইগা জান উথাল-পাথাল কইরা ফালায় আর সুবিধা দেখলেই মদের বোতল লইয়া সিগারেট টানতে টানতে কয় “এইসব বালছাল দিয়া কি হয়?” কিন্তু এত কিছু কইরাও যখন এই বড় বড় বালেরা ভাত পায় না ,তাদের মাথায় খালি উকুন কামড়ায় তখন তারা হইল ব্লগ নাস্তিক। এই নাস্তিকের কাম হইছে “আসেম মুক্তমনা হই” “মুক্তমনারা বাল লইয়া বাল ফালায়” এই টাইপের ক্যানভাসিং করে। আর বাংলা ব্লগে তাগো এন্টি হইল সাধারন ব্লগার যাদের বেশিরভাগই মুসলমান, তাগোরে খালি খোচানো, খোচাইতে খোচাইতে যখন একটা মওকা পায় তখন আস্তে কইরা কিছু লাম-ছাল বুঝাইয়া ওরে হয় পটায় নাহয় ট্যাগায় (ছাগু,ভাদা ইত্যাদি ইত্যাদি) । এই বড় বড় বালওয়ালা মুক্তমনারাই নাশতিক সাজে, তারপর একটা ভাব লইয়া পোস্ট দেয় যেন ছাগু ধরা আর ছাগু খোজা তার পবিত্র দায়িত্ব।

এন্টি-ছাগু খেতাব পাইলেই তারপর শুরু করে তাগো জ্ঞান জাহির করার পালা, মানে অনুবাদ কইরা নাস্তিক হওয়া, তারপর কয়েকটা গরম ইস্যুতে বড় বড় বাল নিয়ে লাফাইতে লাফাইতে সাম্রাজ্যবাদ আর বালছাল (যেকোন ইস্যুতেই) নিয়া কথা কইয়া বুদ্ধিজীবী হওনের ট্রাই করে, তারপরেও যখন এই পোলাপানগুলারে তথা তাদের বড় বড় বালগুলারে দাম দেয় না তখন মাতুব্বর সাজার জন্য “বাংলাদেশ অনলাইন এক্টিবিষ্ঠা” “ম্যাজিক মুবমেন্ট” ইত্যাদি বানায়। এই বেকারগুলোর সারাদিন পিসির সামনে বসে থাকার টাইম আছে, এরা চাইলে ১০০/২০০ নিক নিয়ে একটা সাধারন ব্লগাররেও “ছাগু” বানাইতে পারে চাইলে বাম বানাইতে পারে চাইলে তারে ব্লগ থেইকা তাড়াইতেও পারে। আল্টিমেট গোল হইল তাগো নিজেগো লাভ যেমনে হয়, লাভ হইলে কইব রাজাকারগো বিচার চাই, লাভ হইলে কইব “রাজাকারদেরো এই দেশের মাটিতে ভাগ আছে” লাভ হইলে “এই দেশের সংস্কৃতি {যেই সংস্কৃতি কিনা দুইটা ধর্মের মিশ্রন} লইয়া লাফাইবো, লাভ হইলে ধর্মরে গাইল পাড়ব, মোদ্দা কথা নিজেদের মাতুব্বরি করার জন্য আর লাভের জন্য এরা যা খুশি তা করে, করার ক্ষমতা রাখে আর অথর্ব মডুরা সেটা “ব্লগস্ফিয়ারের জাগরন” বলে সুর তোলে। অথচ এই বালেদেরর একজনই কিছুদিন আগে ঢাবির পরিসংখ্যান বিভাগের এক ছাত্রীর সাথে লটরপটর করতে গিয়া ক্যাম্পাসে দৌড়ানি খাইছে, এই শুয়োরটাই আবার এসি সেমিনার রুমে মোটা ফ্রেমের চশমা নিয়া বড় বড় ডায়লগ মারে,াবার সুযোগ বুঝে এই বাম নেতার পাশ ছেড়ে জাতীয়বাদীতে যোগ দিতে যায় (যদিও দূর দূর করে তাড়ানি খাইছে) , শুয়োরটাই আবার মদের প্রতি আসক্ত, প্রকাশেও কুন্ঠিত না। অথচ এই রস ফালানো বালগুলো একাউন্টে গেলে দেখা যায়, খালি এরা আন্ডোলন করে বেড়ায়, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কোন মৌলিক লেখা নাই, সাম্রাজ্যবাদ নীতি নিয়ে অনেক লেখা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে দুইটা লাইন লিখতে পারে না, ছাগু ট্যাগ দেয়ার জন্য হাজার হাজার পেইজ ঘেটে স্ক্রীনশট দেয়ার জন্য মরিয়া হয়ে যায়, অথচ মুক্তিযুদ্ধের কোন লেখায় গিয়া একটা কমেন্ট দিতে পারে না! জামাত-শিবির এর কাছে যেমন “ধর্ম” একটা অস্ত্র ( খুবই নোংরা অস্ত্র) তেমনই এই বড় বড় বালওয়ালা বালগুলোর কাছে আমার দেশের সংস্কৃতি, মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন একইরূপ অস্ত্র।

এই অসভ্য জানোয়ারগুলো যেদিন থেকে এই নোংরা অস্ত্রগুলো ব্যবহার শুরু করেছে, আমার দেশের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে ধর্মকে কলুষিত করার চেস্টা শুরু করেছে সেদিন থেকে ব্লগ আর ব্লগ নাই, ব্লগ ভরে গেছে কিছু বালওয়ালা বালে। তারাই ব্লগটা নিয়ন্ত্রন করে , আর মডারেটররা তাতে “বাংলা ভাষার চর্চা বাড়ছে” বলে তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলে। {একান্তই ব্যক্তিগত মতামত শেয়ার করলাম, কারো সাথে মিলে গেলে বা এখানে নিজেকে খুঁজে পেলে তা কাকতাল হিসেবে ধরে নেবেন না বরং ধরে নেবেন আপনার জন্যই এই লেখা} ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।