একসঙ্গে অনেকগুলো পদের ভারে নুয়ে পড়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আরজু মিয়া।
একইসঙ্গে অনেকগুলো পদের দায়িত্বে থাকায় তিনি কোন পদের দায়িত্বই সঠিকভাবে পালন করতে পারছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া প্রক্টরের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের একটি নির্দিষ্ট এলাকার গ্রুপকে মদদ দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপাচার্যের আস্থাভাজন হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আরজু মিয়া একাধারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, সিন্ডিকেট সদস্য, সিনেট সদস্য, নবনির্মিত শহীদ রফিক-জব্বার হলের প্রভোস্ট ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দোকান পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
ফলে তাকে কোনো ঘটনায়ই তাৎক্ষনিকভাবে পাওয়া যায় না।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে ২ সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা, জুবায়ের হত্যা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলোয়ারদের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় প্রক্টর তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেননি।
প্রক্টরের দায়িত্ব ক্যাম্পাসে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা তো দূরের কথা কোথাও কোনো ঘটনা ঘটলে প্রক্টরের দেখা মেলে না। শুধুমাত্র তদন্ত কমিটিতে দেখা যায় তার নাম। এ নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
শিক্ষার্থীদের দাবি, যে শিক্ষকই প্রক্টরের দায়িত্বে থাকবেন তাকে অন্য কোন দায়িত্ব দেওয়া যাবে না। কারণ প্রক্টরের ওপর অন্য কোন দায়িত্ব দেওয়া হলে প্রক্টর তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারবেন না। আর সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী কেউই নিরাপদে থাকতে পারবেন না।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ ছাত্রলীগের হামলায় নিহত হওয়ার ঘটনায় প্রক্টরকেই দায়ী করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
প্রক্টর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন বলেও অভিযোগ করে শিক্ষার্থীরা প্রক্টরের অপসারণসহ ৪ দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন।
অপরদিকে, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ আল মামুনকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে ‘শিক্ষক সমাজ’ ব্যানারে উপাচার্যবিরোধী শিক্ষকরা প্রক্টর আরজু মিয়ার অপসারণসহ ৫ দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে উপাচার্যপন্থি শিক্ষক প্যানেল থেকে প্রক্টর আরজু মিয়া সাধারণ সম্পাদক পদে বিএনপিপন্থি শিক্ষক প্যানেলের শরিফ উদ্দিনের কাছে ১৪ ভোটে হেরে যান।
এতো অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও উপাচার্যের বিশেষ আস্থাভাজন হওয়ায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির তাকে পদ থেকে অপসারণ করছেন না বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির বলেন, ‘আমি মনে করি না জুবায়ের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রক্টরের সম্পৃক্ততা রয়েছে। ’
অপরদিকে, প্রক্টর আরজু মিয়া বলেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ হাজার শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর নিরাপত্তা একজন প্রক্টরের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়।
’
তবে ছাত্রলীগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে যে কোন ধরনের মতাদর্শের শিক্ষার্থীরাই থাকতে পারে। ’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকদের অভিযোগ, প্রক্টরকে কখনো কোন ঘটনার জন্য ফোন করা হলে তিনি ঠিকমত তথ্য দেন না। এমনকি সাংবাদিক পরিচয় পেলে তিনি তথ্য না দিয়ে ফোন কেটে দেন।
সূত্র : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।