আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হেলথ টিপসঃ-----------আবেগের অসুখ

আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি যারা আবেগীয় সুস্বাস্থ্যের অধিকারী তারা আবেগ এবং তাদের ব্যবহার দ্বারা পরিচালিত হয়। তারা জীবনের অসম্ভব চ্যালেঞ্জকে সম্ভব করতে পারে, আন্তরিক ও গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে সুফলাফলে ও সাফল্যে পূর্ণ থাকে তাদের জীবন এবং তাদের জীবন ভরপুর থাকে উদ্দীপনায়। যখন খারাপ কিছু ঘটে তারা সেটাকে সামনে নিয়ে এগিয়ে চলে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হল বেশিরভাগ এ ধরনের লোক বিপদে পড়লে তাদের এ ক্ষমতাকে কাজে লাগায়। কিন্তু এটি মানসিক, শারীরিক সুস্বাস্থ্যের সঙ্গেও জড়িত।

তাই শারীরিক সুস্বাস্থ্যের জন্যও আবেগীয় সুস্বাস্থ্যের প্রয়োজন। আপনি আপনার আবেগমূলক সুস্বাস্থ্যের জন্য যত সময় ব্যয় করবেন ততই তা দৃঢ় হবে। মানসিক বা আবেগীয় স্বাস্থ্য কী আবেগীয় স্বাস্থ্য ও মানসিক স্বাস্থ্য মনের সুস্বাস্থ্যের পরিপূরক। এটা হচ্ছে নিজেকে অনুভব করার ক্ষমতা, সম্পর্কের উন্নয়ন করার ক্ষমতা, অনুভূতিকে নিয়ন্ত্রণ করে বাধাকে বা দুঃসময়কে অতিক্রম করার ক্ষমতা। মানসিক অসুস্থতার অনুপস্থিতিই শুধু ভালো মানসিক স্বাস্থ্য নয়।

মানসিক সুস্বাস্থ্যের অধিকারী তারাই নয় যারা বিষণœতা, উদ্বেগ অথবা মানসিক রোগাক্রান্ত নয় বরং তারাই মানসিক সুস্বাস্থ্যের অধিকারী যারা মানসিকভাবে সুস্থ এবং ইতিবাচক বৈশিষ্ট্যে ও চিন্তাধারায় ভরপুর। যারা মানসিক এবং আবেগীয় দিক থেকে সুস্থ তাদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে = আনন্দের অনুভূতি রয়েছে। = উদ্দীপকমূলক, হাসার, কৌতুককর অনুভূতি রয়েছে। = মানসিক চাপ সামলানোর ক্ষমতা রয়েছে। = তাদের কাজকর্ম ও সম্পর্কে উন্নতি ও উদ্দীপনার দক্ষতা রয়েছে।

= নতুন কিছু শেখা এবং পরিবর্তনমূলক দক্ষতা রয়েছে। = কাজ এবং খেলার মধ্যে বিশ্রাম ও কাজের মধ্যে সামঞ্জস্য রয়েছে। = নিজের সম্পর্কে দৃঢ় আÍবিশ্বাস এবং উঁচু মনোভাব রয়েছে। উপরিল্লিখিত বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন লোক উন্নয়নমূলক, গঠনমূলক কাজকর্ম এবং গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে। তারা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং মানসিক চাপের সময় স্থির থাকতে পারে।

মানসিক ও আবেগীয় সুস্বাস্থ্যের জন্য আনন্দের ভূমিকা মানসিক ও আবেগীয় সুস্বাস্থ্যের অধিকারী মানে এই নয় তারা কখনও খারাপ সময় অথবা মানসিক ও আবেগীয় খারাপ সময় অতিবাহিত করেনি। আমাদের সবাইকে হতাশা, লোকসান এবং পরিবর্তনের মধ্যে যেতে হয়। যখন এগুলো জীবনে স্বাভাবিক হয়ে যায় তখন ঘটে দুঃখজনকভাব, বিষণœতা, উদ্বেগ ও মানসিক চাপ। সাধারণ লোকের চেয়ে মানসিক সুস্বাস্থ্যের অধিকারী লোকের পার্থক্য হচ্ছে তারা দুর্যোগ, দুর্ভাবনা, মানসিক চাপ পেছনে ফেলে এগিয়ে যেতে পারে। ওই ক্ষমতাকেই বলা হয় উজ্জীবন বা উদ্দীপনা।

এ ধরনের লোকের কঠিন সময় মোকাবেলার দক্ষতা রয়েছে এবং সর্বদা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। তারা সব সময় স্বকেন্দ্রীয়, উদ্বেগহীন সৃজনশীল থাকতে পারে সেটা ভালো অথবা খারাপ যে সময়ই হোক না কেন। আনন্দময় জীবন তৈরি মানসিক চাপে ভরপুর জীবনের মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ জীবনই হচ্ছে আনন্দময় জীবন। এটি বিভিন্ন উপায়ে ঘটে থাকে =জীবনকে শক্ত ও কঠিন আবেগীয় অনুভূতির মধ্যে দিয়ে যেতে দিন, বুঝতে চেষ্টা করুন যখন আপনার এ অনুভূতি কাজের জন্য ক্ষতিকারক হয়ে দাঁড়ায়। = আগে বাড়-ন এবং কাজ করুন দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখুন এবং নিজেকে চাঙা করুন।

= প্রিয়জনের সঙ্গে সময় ব্যয় করুন, তার উৎসাহ এবং সমর্থন আপনার প্রয়োজন। =অন্যকে এবং নিজেকে বিশ্বাস করুন। বিশ্রাম করুন মানসিক এবং আবেগীয় স্বাস্থ্য ভালো রাখতে আপনার শরীরের যতœ নিন এবং পরিমিত ঘুমান। প্রতিটি মানুষের দৈনিক ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করুন অনেকেই পুষ্টিকর খাদ্যের অভ্যাস করেন না।

কিন্তু যতই আপনি পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করবেন ততই সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবেন। মানসিক চাপ মুক্তির চেষ্টা করুন এবং মনকে কাজের প্রতি উদ্যোগী করে তুলুন ব্যায়াম একটি শক্তিশালী ওষুধ মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা ও হতাশা কাটানোর জন্য। কাজের চেষ্টা করুন যেমন সিঁড়ি দিয়ে ওঠা, হাঁটতে বের হওয়া। প্রতিদিন ৩০ মিনিটের ব্যায়াম আপনাকে দেবে মানসিক ও শারীরিক সুস্বাস্থ্য। নিয়মিত সূর্যের আলোর পরশ নিন সূর্যের আলো আপনার মনকে ভালো করবে, তাই প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ মিনিট সূর্যের আলো গায়ে মাখুন।

এটা ব্যায়ামের সময়, বাগান করার সময় অথবা সামাজিক কাজকর্ম করার সময় সূর্যের আলোর সংস্পর্শে থাকতে পারেন। অ্যালকোহল, সিগারেট এবং অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় ওষুধ বর্জন করুন। নিজের যতœ নেয়ার মাধ্যমে আবেগীয় এবং মানসিক সুস্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটান। মানসিক এবং আবেগীয় সুস্বাস্থ্যের জন্য নিজের চাহিদা, অনুভূতির প্রতি যতœশীল হোন। নেতিবাচক চিন্তা এবং মানসিক চাপও মাথায় আনবেন না।

আপনার দায়িত্ব এবং আনন্দের সামঞ্জস্য রক্ষা করুন। যদি আপনি সুস্বাস্থ্যের প্রতি নজর দিন তাহলে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আপনি মনোবল পাবেন। নিজের যত্ন নেয়ার উপায় নিজের অনুভূতির প্রতি যত্নবান হোন ৫টি অনুভূতির মাধ্যমে শান্ত এবং উদ্দীপিত থাকুন। দৃষ্টি, শব্দ, সংস্পর্শ, স্বাদ এবং গন্ধ। আপনার মন ভালো রাখতে গান শুনুন, ফুল দিয়ে সাজান এবং ঘ্রাণ নিন, হাত-পায়ের যত্ন নিন এবং ভালো পানীয় পান করুন।

গঠনমূলক, অর্থপূর্ণ এবং সৃজনশীল কাজে নিযুক্ত থাকুন এমন কাজ করুন যা আপনার সৃজনশীলতাকে চ্যালেঞ্জ করবে এবং আপনাকেও কঠিন কাজকে সহজ করতে চেষ্টা করবে। দীর্ঘস্থায়ী সুস্বাস্থ্য আপনার বুদ্ধিমত্তাকে বৃদ্ধি করবে। বুদ্ধিমত্তা অন্যের সঙ্গে মিশতে, অন্যকে বুঝতে, সমস্যা সমাধানে সাহায্য করবে। অধ্যাপক ডা. এএইচ মোহাম্মদ ফিরোজ সাইক্রিয়াটিস্ট, রয়েল কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।