আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাড়িয়ালর ভাগ্নি স্নেহা এবং আমার ছোট্ট গল্প

আমার চোখে ঠোটে গালে তুমি লেগে আছো !! -মেয়েগুলা মাঝে মাঝে এমন বেকুবী কেন করে বলতো ? পল্টু একটা সিগারেটে সবে মাত্র টান টা দিয়েছে ! এখনও ধোয়া বের হওয়ার সময় পাই নাই ! পল্টু আমার কথা শুনে আমার দিকে তাকালো ! একটু পরে ওর নাক মুখ দিয়ে কেমন ধোঁয়া বের হতে শুরু করলো ! আমার মাঝে মাঝে অবাক লাগে যে এই পিচ্চি কালেও পল্টুটা কিভাবে সিগারেট ফুকছে ! পল্টু এবার আমাকে বলল -কি বললি তুই ? বেকুব মেয়ে মানে ? -না মানে ! দেখ মেয়েদের ভুলের কারনেই তো তাদের নাম্বারটা ছড়ায় ! তারপর ছেলেরা যখন মেয়েটা কে ফোন করে তখন মেয়েটাই ছেলেটাকে অসভ্য বলে গালি দেয় ! কেন ? নিজের নাম্বার টা নিজে সেভ করে রাখা যায় না ? পল্টু আমার দিকে আবার তাকিয়ে বলল -দেখ নিলয় অতো প্যাচাল না পেড়ে কি হয়েছে বল ? আমি একটা কাগজ পল্টুর দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললাম -দেখ ! পল্টু হাতে নিলো কাগজটা ! তারপর আমার দিকে জিজ্ঞাসু চোখে তাকালো ! বলল -এই স্নেহা টা আবার কে ? -আমাদের বাড়িয়ালার ভাগ্নি ! দুই তলায় থাকে ! -এটা কে দিলো তোকে ? -ও ই দিয়েছে ! -মানে কি ? গতরাতের ঘটনা ! আমি নিচে নামছিলাম মোবাইলে টাকা ভরার জন্য ! দুইতলাট সিড়ি বেয়ে নিচে নেমেছি তখনই মেয়ে মানে স্নেহা আমাকে পিছন থেকে ডাক দিল ! আমি দাড়ালাম ! আমার কাছে এসে বলল -আপনি কি মোড় পর্যন্ত যাবেন ? -হ্যা ! -আমার একটা ফোন করতে হবে একজন কে ! কিন্তু মোবাইলে টাকা নাই ! আপনি কি এই ৫০ টাকা আমার মোবাইলে পাঠাতে পারবেন ? -হ্যা ! সমস্যা না ! আপনার মোবাইল নাম্বার টা ? -এই নিন ! এই বলে মেয়েটা আমাকে ওর মোবাইল নাম্বার লেখা কাগজটা দিল ! আমার কাছে সব ঘটনা শুনে পল্টু বিরক্ত বলল -গাধা ! -হুম ! আসলেই মেয়েটা গাধা ! নাম্বার দেওয়ার দরকার কি ? কার্ড কিনে আনতে বললেই পারতো ! আমার কথায় দিগুন বিরক্ত হয় বলল -ঐ মেয়ে গাধা না ! তুই গাধা ! -মানে কি ? -মানে বুঝিস না ? বেকুব ! ঐ মেয়ে তোকে পছন্দ করছে ! তাই তোকে নাম্বারটা দিছে ! -তা কেন হবে ! মেয়েটা মাত্র কদিন এসেছে এখানে, এর মধ্যেই আমাকে পছন্দ করে ফেলল ! -আরে বেটা ! মেয়েটা যদি কেবল টাকাই ভরতে তোকে ফোন নাম্বার দিয়ে থাকে তাহলে কাগজে ওর নাম লিখবে কেন ? এটা স্পষ্ট ইঙ্গিত ! এই টাও যদি না বুঝিস !! -কিন্তু ..। -কোন কিন্তু না ! এখনই মেয়েটাকে ফোন দে ! -কিন্তু কি বলে দেবো ! আসলে আমি ... পল্টু আমার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে বলল -আর একটা কথা বলল, মেয়েটা দেখতে কেমন ? -ভাল ! বলতে গেলে সুন্দরী ! -তাহলে তুই ফোন দে ! না হলে আমি দেই ! কেন জানি পল্টুর এই কথাটা ভাল লাগলো না ! স্নেহা আমাকে ফোন নাম্বার দিয়েছে আমি কেন পল্টুকে ফোন করতে দেব ! আমি বললাম -আচ্ছা আমিই দিচ্ছি ! পল্টুর কাছ থেকে দুরে চলে এসে স্নেহার নাম্বারে ফোন দিলাম ! রিং শুরু হতেই বুকের মাঝে একটা চাপা উত্তেজনা সৃষ্টি হল ! আচ্ছা পল্টুর কথা শুনে তো ফোন দিয়েই দিলমা এখন যদি মেয়েটা এমন কিছু না ভেবে থাকে ? আর স্নেহার সাথে আমি কি কথা বলবো ? আমি ফোন কেটে দিতে যাবো ঠিক তখনই স্নেহা ফোন রিসিভ করলো ! -হ্যালো ! আমি চুপ ! আমার বুকের ভিতরকার চাপা উত্তেজন যেন একটু বেড়ে গেল ! স্নেহা আবার বলল -হ্যালো ! কে বলছেন ? -আমি ! -আমি কে খানিকক্ষন নিরবতা ! তারপর স্নেহা বলল -ও ! আপনি ! বলুন ! কি বলবো ! আমি কি বলব ? কোন কিছুই মাথায় আসছে না ! বললাম -কালকে টাকা পাঠিয়েছিলাম ঠিক মত গিয়েছিল ? আমার কথা শুনে স্নেহা একটু হেসে ফেলল । বলল -আপনি কি আমাকে এই কথা বলার জন্য ফোন দিয়েছেন ? -না মানে !! আমি কোন কথা খুজে পাই না ! চুপ করে থাকি ! স্নেহা নিজেই যেন কথা শুরু করে ! কেন জানি আমারও ওর সাথে কথা বলতে ভাল লাগছে ! আর আমি বুঝতে পারছি স্নেহারও ভাল লাগছে কথা বলতে ! আশ্চার্য !! কথা শেষ যখন ফোন রাখলাম পল্টু আমার দিকে তাকিয়ে দেখি মিসকি মিসকি হাসছে ! আমি বললাম -কি ব্যাপার হাসছিস কেন ? -তোর চেহারা দেখে ! মামা ! তুমি তো প্রেমে পড়ে গেছ ! আমি কেবল হাসি ! আসলেই কি তাই ! স্নেহার সাথে আস্তে আস্তে কথা বলতে শুরু হল ! দিন আসলেই ভাল কাটতে লাগল ! স্নেহা এমনিতে কথা বলতো কিন্তু মুখ ফুটে কিছু বলতো না ! আমিও কিছু বলতাম ! বিকেল বেলা ছাদের দেখা হত ! সরাসরি কথা হত না ! কারন আসে পাশে বাড়ির আরো অনেকেই থাকতো ! এই ভাবে তো আর চাইলেই কথা বলা যায়না ! তবে হাতে ফোন থাকতো ! কিছু একটা বলতে চাইলেই আমি ওকে মেসেজ পাঠিয়ে দিতাম ! ও সেইটা দেখে সেইটা করতো ! কিন্তু একদিন স্নেহা আমাকে রাতের বেলা ফোন দিয়ে ছাদে আসতে বলল ! ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম প্রায় ১২ টা বেজে গেছে ! এতো রাতে ! একটু ভয় ভয় লাগছিল ! যদি কেউ দেখে ফেলে ! আর স্নেহা ওর মামার মামীর চোখ ফাকি দিয়ে কিভাবে আসবে এতো রাতে ? আমি তবুও ছাদে হাজির হলাম ! একটু পরেই স্নেহা এসে হাজির ! আমার দিকে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষন ! আমিও ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম কিছু না বলে ! আসলে আমি কি বলবো কিছু বুঝতে পারছিলাম না ! আর আমি তো কিছু জানিও না ! কেন হঠাৎ আমাকে এখানে আসতে বলল ! বাসা থেকে আবার জেনে যায় নাই তো ! আমি বলল -কি হয়েছে ? স্নেহা চুপ করেই রইলো ! তারপর বলল -আমার কপালে বুঝি আর সুখ সইবে না ! -কেন ? এই কথা কেন ? -কালকে আমি চলে যাবো ! -সে কি কোথায় ? -বাসায় ! -কেন ! তুমি না বললে আরো একমাস থাকবা তুমি এখানে ! তাহলে ! -আমিও তাই জানতাম ! কিন্তু আব্বা কালকে আসবে আমাকে নিতে ! আমি .... এই টুকু বলেই স্নেহা চুপ করে গেল । কিছুক্ষন পরেই দেখলাম ও কেঁদে উঠল ! ওর চোখে পানি দেখে কেন জানি আমার বুকটাও আন্দোলিত হয়ে উঠলো ! আমি কিছু না বলে কেবল ওর কাছে গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরলাম ! স্নেহাও আর কিছু না বলে কেবল আমার বুকের মাথা রেখে ফোঁপাতে লাগলো ! কতক্ষন ছিলাম জানি না এক সময় মনে হল যে ওর এখন যাওয়া দরকার ! ওর মামা টের পেলে খবর আছে ! আমি কেবল বললাম -চল যাবে তো কি হয়েছে ! আমার মাঝে টো যোগাযোগ থাকবে ! তাই না ? একটু চুপ করে থেকে স্নেহা বলল -তাহলে তোমাকে এভাবে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছা হলে কি করবো ? যখন দেখতে ইচ্ছা করবে তখন কি করবো ? আমি কোন কথা না বলে কেবল চুপ করে থাকি ! আসলেই তো ওকে যখন দেখতে ইচ্ছা হবে তখন কি করবো ? আমি জানি না ! জানি না সামনের দিন গুলো কেমন কাটবে !! পরদিন সকালেই স্নেহারা চলে গেল ! আমি কেবল তার চলে যাওয়া চেয়ে চেয়ে দেখলাম ! কেন জানি মনে হল আবার দেখা হবে তো ? মান্না দে র একটা গান আছে না ! আবার হবে তো দেখা ! এই দেখাই শেষ দেখা নয় তো ? ফেবু লিংক

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ৪৪ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.