আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গাজীপুর তুমি কার

ভালবাসি ওয়ার্ড : ৫৭ সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড : ১৯ ভোটার : ১০ লাখ ২৬ হাজার ৯৩৮ জন মহিলা ভোটার : ৫ লাখ ২৭ হাজার ৭৮৩ কাউন্সিলর পদে লড়ছেন : ৪৫৬ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে : ১২৮ জন ভোট কেন্দ্র : ৩৮৪ কে হতে যাচ্ছেন নবগঠিত গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম মেয়র? ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা সমর্র্থিত অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা নাকি প্রধান বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া সমর্থিত অধ্যাপক এম এ মান্নান-কাকে জয়মাল্য পরাবেন গাজীপুরবাসী?। এমনই প্রশ্ন আজ দেশবাসীর। কারন আজ দেশের নবগঠিত সিটি করপোরেশনগুলোর মধ্যে সব চেয়ে বড় আয়তনের সিটি করপোরেশন গাজীপুরের নির্বাচন। এই নির্বাচন থেকেই দেশের সর্ববৃহত্তম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ-বিএনপি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাদের ভবিষ্যত নির্ধারণ করবে। যদিও এক্ষেত্রে বেশি সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি।

এ নির্বাচনে ফলাফল যাই হোক, এর পুরো সুবিধা পাবে দলটি। আর ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের পক্ষে বা বিপক্ষে যাই হোক এটা তাদের জন্য গলার কাঁটা হয়ে দেখা দেবে। তবে আওয়ামী লীগ চাচ্ছে জয় নিয়েই গলার কাঁটা বহন করতে। এ জন্য সর্বশেষ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানকে দিয়ে তাদের পক্ষে সমর্থন আদায় করে নিয়েছে। একই ভাবে তাদের নীতির বিরোধী হেফাজতে ইসলামও তাদের পক্ষে রয়েছে বলে প্রচার করেছে।

এ সবকিছু বিবেচনায় বলা যায় আজ সেয়ানে সেয়ানে টক্কর চলবে গাজীপুরে। তাই সারা দেশের মুনুষের দৃষ্টি এখন গাজীপুরের দিকে। এদিকে নির্বাচন কমিশনও একটু বাড়তি সর্তকতা নিয়েছে এই সিটি নির্বাচনে। গতকাল শুক্রবার থেকেই থেকেই নির্বাচনী এলাকায় বিজিবি টহল দেয়া শুরু করেছে। নিñিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১১ হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করছে।

আজ সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলবে ভোটগ্রহণ। রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মতিয়ার রহমান জানিয়েছেন, গাজীপুর সিটিতে উৎসবমুখর পরিবেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য যা যা করা দরকার সব ধরনের প্রস্তুতিই নেয়া হয়েছে। গত ৭ জানুয়ারি দুটি পৌরসভা ও ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদের ৩২৯ দশমিক ৯০ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে গঠিত হয় দেশের ১১তম সিটি করপোরেশন। ৫৭টি সাধারণ এবং ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সমন্বয়ে গঠিত এই সিটি করপোরেশনের মোট ভোটার ১০ লাখ ২৬ হাজার ৯৩৮ জন।

তার মধ্যে মহিলা ভোটারের সংখ্যা পাঁচ লাখ ২৭ হাজার ৭৮৩ জন। ৫৭টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪৫৬ জন এবং ১৯টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১২৮ জন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৩৮৪ এবং ভোটকক্ষের সংখ্যা দুই হাজার ২৫০টি। আজকের নির্বাচনে মেয়র পদে ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে ১৪ দল সমর্থিত প্রার্থী এডভোকেট আজমত উল্লা খান আর ১৮ দল পার্থী সমর্থিত অধ্যাপক এম এ মান্নান। তবে নাগরিক কমিটির প্রার্থী আনারস প্রতীকের মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম রাজনৈতিক চাপে তার প্রার্থীতা প্রত্যাহর করলেও ব্যালট পেপারে তার প্রতীক থাকায় অফিসিয়ালি তিনি এখনও মেয়র প্রার্থী রয়েছেন।

ফলে তার প্রতীকেও ভোট দেয়া যাবে। গাজীপুরবাসীর প্রত্যাশা- সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যিনিই মেয়র নির্বাচিত হন না কেন নতুন মেয়রকে তারা স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। র‌্যাব-১ অধিনায়ক লে. কর্নেল কিসমত হায়াত জানান, নির্বাচনে নিñিদ্র নিরাপত্তা দিতে পাঁচ হাজার পুলিশ সদস্য, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ১২ প্লাটুন সদস্য, ৮৪৭ জন র‌্যাব ও আনসার সদস্যসহ ১৩ হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়া যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে র‌্যাবের ডগ স্কোয়াড ও হেলিকপ্টার টহল ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথমবারের এ নির্বাচনকে অবাধ ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।

যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে নিয়োজিত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি র‌্যাব, বিজিবি ও পুলিশের সমন্বয়ে গঠিত মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স টহল দেবে এবং ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে বিশেষ দৃষ্টি রাখা হবে। তাছাড়া তাৎক্ষণিক বিচার কাজ পরিচালনার জন্য নির্বাহী ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একাধিক টিম দায়িত্ব পালন করবে। গাজীপুর সিটি করপোশনের নির্বাচনে নিজেদের বিজয় নিশ্চিত করতে মরিয়া হয়ে ওঠেছে বড় দুই রাজনৈতিক দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থী। নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হলেও তাদের পক্ষে নিজেদের মতো করে প্রচারণা চলাচ্ছেন দু’দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। তবে নির্বাচনে গণরায়ের প্রতিফলন সব সময় ক্ষমতাশীনদের বিপক্ষে যায় বলে মনে করা হয়।

এক্ষেত্রে ১৮ দল সমর্থীত মেয়র প্রার্থী অধ্যাপক এম এ মান্নান কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানেই রয়েছেন বলে মনে করা হয়। তবে দুই জোটের কেন্দ্রীয় নেতারা নিজ দলের প্রার্থীর সমর্থনে ভোট ও গণসংযোগ করেছেন। তবে বিদ্রোহী প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের নাটকীয় নিখোঁজ হওয়া এবং তাকে নিয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তব্যে নাখোশ হয়েছেন ভোটাররা। স্থানীয় ভোটরদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ এলাকার মোট ভোটরদের মধ্যে ৩৫ শতাংশ আওয়ামী লীগের স্থায়ী ভোট। আর বিএনপির রিজার্ভ ৩২ শতাংশ।

জাতীয় পার্টির আছে ৮ শতাংশ। বাম ও অন্য দলের আছে ৫ শতাংশ। এর বাইরে জামায়াতের ৫ শতাংশ এবং বাকি ১৫ শতাংশের বেশিরভাগই নিরপেক্ষ ভোটার। ওই ১৫ শতাংশের ১০ শতাংশ ভোট এখন হেফাজতে ইসলামের দখলে। এর বাইরে আওয়ামী লীগের ৩৫ শতাংশ ভোটারের একটি অংশ ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর পরও জাহাঙ্গীর আলমকেই দেবেন।

এতে আজমতের আরো কিছু ভোটের ঘাটতি পড়বে। অপরদিকে হেফাজতে ইসলামের ১৫ শতাংশ ভোটের হিসাব এর বাইরে রাখলেও আব্দুল মান্নান ভোটের সমীকরণে অনেকটাই এগিয়ে। ১৮ দলী সমর্থীত মেয়র প্রার্থী মান্নানের সুনিশ্চিত বিজয় বুঝতে পেরে নানা কৌশলে ভোট ডাকাতির চেষ্টা করছে ক্ষমতাসীনরা- এমন অভিযোগ তুলছেন মান্নান সমর্থকরা। তবে ক্ষমতাসীন শিবির থেকে বলা হচ্ছে, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। মান্নান সমর্থকদের এই আশঙ্কা ভোটের দিনই মিথ্যা প্রমাণ হবে।

ক্ষমতাসীনরা প্রয়োজনে মান্নানের ভোটারদের নিরাপত্তা দেবে বলেও জানিয়েছেন ১৪ দলের সমন্বয়ক আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম। তিনি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, ১৮ দল নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা ভোটের মাঠে ধর্মকে ব্যবহার করছে। এদিকে মান্নান সমর্থকরাও ঘোষণা দিয়েছে, তারা ফলাফল ছিনিয়ে নিতে দেবে না কাউকে। তারা ভোট দিয়েই বাড়ি ফিরবে না।

ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত পাড়া-মহল্লায় প্রতিটি কেন্দ্র পাহারা দেবেন বলে জানিয়েছেন। তাদের দাবি বিজয় তাদের দোড় গোড়ায়। এ বিজয় কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না। যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত ইসি : প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবুদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের বলেছেন, যেকোন পরিস্থিতি মোকাবিলা ও পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত রয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন কমিশন সার্বক্ষনিক গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বলেও তিনি বলেন।

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন (জিসিসি) নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির বিভিন্ন অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাধারণভাবে কোন অভিযোগ করলে পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব না, যদি সুনির্দিষ্টভাবে কোন অভিযোগ করেন তাহলে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হবে। স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রভাব প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রকিবউদ্দিন আহমদ বলেন, নির্দলীয় নির্বাচনই হচ্ছে। কোন দলের প্রতীক ব্যবহৃত হচ্ছে না। তবে যখন দলীয় নেতৃবৃন্দ নির্বাচনী কার্যক্রমে উপস্থিত থাকেন তখন দলীয় প্রভাব পড়ছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় স্থানীয় নির্বাচনেও দলের প্রভাব কিছুটা পড়ে।

জাহাঙ্গীর কোন প্রতীকে ভোট দিচ্ছেন : রাত পোহালেই নির্বাচন। আনারস প্রতীকের মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম ১৪ দল প্রার্থীকে সমর্থন করায় তার দোয়াত কলমে ভোট দেওয়ার কথা। তারপরও জনমনে প্রশ্ন, জাহাঙ্গীর কোন প্রতীকে ভোট দিচ্ছেন! নিজের প্রতীকে না সমর্থিত প্রতীকে! দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচন। সাতজন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে আলোচিত আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম ১৪ দল প্রার্থীর দোয়াত-কলমে নাটকীয়ভাবে সমর্থন করলেও তিনি নিজের ভোটটি কোথায় দেবেন তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। একাধিক গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, জাহাঙ্গীরের আনারস প্রতীকে এখনো হাজার হাজার ভোট পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আজমত ও মান্নানের ভোট যুদ্ধে জাহাঙ্গীরের ভোটও ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে অনেকে ধারণা করছেন। এদিকে ৩০ জুন, জিসিসি নির্বাচনের আলোচিত আনারস প্রতীকের মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম দলীয় নির্দেশে ১৪দল প্রার্থীর সমর্থনে অনুষ্ঠিত ইশতেহার পাঠ অনুষ্ঠানে মোনাজাতে শরিক হন। আজমত উল্লার ইশতেহার পাঠ অনুষ্ঠানে জাহাঙ্গীরকে নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করতে চাইলে দ্রুত মোনাজাত শুরু হয়ে যায়। মোনাজাতে সবার সঙ্গে অংশ নেন জাহাঙ্গীর আলম। জিসিসি নির্বাচনের দিনই ফল ঘোষণার দাবি বিএনপির : গাজীপুর সিটি করপোরেশন (জিসিসি) নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষে সেদিনই গণনা করে ফলাফল ঘোষণার দাবি জানিয়েছে বিএনপি।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে এসে লিখিতভাবে এ দাবি জানান। এ সময় কমিশন সচিবালয়ে কোনো কমিশনার না থাকায় তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের একান্ত সচিবের কাছে তার এ সংক্রান্ত আবেদন জমা দেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বৃহস্পতিবার গাজীপুর নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের দেওয়া বক্তব্য মতে ভোটের পরের দিন বেলা ১১টায় পুরো ফলাফল গণনা করে প্রকাশ করা হবে। এ সিদ্ধান্তকে আমরা মনে করি, ভয়াবহ এবং জনঅধিকারের জন্য হুমকি স্বরূপ। এটি দূরভিসন্ধিমূলক।

আমরা এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে ভোটের দিন ফলাফল ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি। গাজীপুর নিয়ে আ’লীগের আলাদা হিসাব : চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মতো পরাজয় নয়, বরং গাজীপুরের ফলাফল কিশোরগঞ্জের মতো নিজেদের পক্ষে আসবে এমনটাই আশা করছে আওয়ামী লীগ। প্রথম দিকে গাজীপুর সিটি করপোরেশন (জিসিসি) নির্বাচনের সম্ভাব্য ফলাফল নিয়ে হতাশায় ছিল আওয়ামী লীগ ও ১৪ দল। কিন্তু নির্বাচনের ঠিক আগ মূহূর্তে জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে তারা। যদিও সব কিছু স্পষ্ট হবে শনিবারের নির্বাচনী ফলাফলে।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল নেতারা মনে করছেন, জাতীয় ইস্যু কিংবা বিরোধী দলের বিভিন্ন প্রচার প্রচারণায় আওয়ামী লীগের নির্দিষ্ট ভোটাররা অভিমান করতে পারেন। কিন্তু ভোট দেওয়ার সময় ঠিকই আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীকেই ভোট দেবেন। গাজীপুর আওয়ামী লীগের অন্যতম ভোট ব্যাংক। বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের এ ভোট ব্যাংক ভাঙতে পারবে না বলে মনে করেন তারা। গাজীপুরের ভাসমান ভোটারদের বড় একটা অংশ শ্রমিক।

রানা প্লাজার ঘটনাসহ বিভিন্ন জাতীয় ইস্যু শ্রমিকদের উপর প্রভাব ফেললেও এ কয়দিনের আওয়ামী লীগ ও ১৪ দল নেতা-কর্মীদের ব্যাপক নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় তা অনেকটাই কেটে গেছে। ফলে শ্রমিকরা আওয়ামী লীগের প্রার্থীকেই ভোট দেবে বলে আশা তাদের। এদিকে হুট করেই মহাজোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টির হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ আজমত উল্লাকে সমর্থন করায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর ভোট বাড়বে। এক্ষেত্রে জাতীয় পার্টির ভোট বাড়ার চেয়ে এরশাদের এ সমর্থন ভাসমান বা স্বাধীন ভোটারদের মধ্যে একটা ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বেশি ইতিবাচক হিসেবে দেখছে আজমত উল্লাহ খানের ব্যক্তি ইমেজ।

সব মিলিয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে একটু ভিন্ন হিসাব কষছে আওয়ামী লীগ। পরাজয় নয়, বরং নিশ্চিত বিজয় হবে বলেও বিশ্বাস নেতা-কর্মীদের। তবে গাজীপুরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বড় হুমকি হেফাজত ইসলাম ও ধর্মীয় ইস্যু। এছাড়া সাভারের রানা প্লাজা হতাহতের ঘটনাও আওয়ামী লীগের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াতে পারে। এছাড়া আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম ইস্যুটি আওয়ামী লীগের জন্য নেতিবাচক হতে পারে।

যদিও এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন মানুষ অনেক সচেতন হয়েছে। ফলে ধর্মীয় প্রপাগা-ায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর ভোট কমবে না। গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেন, গাজীপুরের নির্বাচনে ধর্মীয় অপপ্রচার কাজে আসবে না। কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের বিজয়, আজমত উল্লাহ খানকে এরশাদের সমর্থন সব মিলিয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর বিজয় হবে। আমরা মনে করি বিজয় সুনিশ্চিত।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান মল্লিক বলেন, আমরা আমাদের নেতা-কর্মীদের মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি আজমত উল্লার ফিল্ড অনেক ভালো। এটি হয়েছে নেতা-কর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে। এরশাদের সমর্থন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টির সমর্থনে জয় পরাজয় নির্ভর করে না। বরং এরশাদ সাহেব বুঝতে পেরেছেন আজমত উল্লা খানই জিততে পারে। এজন্য তিনি শেষ সময়ে এসে তাকে সমর্থন দিয়েছেন।

গাজীপুরে নির্বাচনের সরঞ্জাম বিতরণ সম্পন্ন : গতকাল শুক্রবার দুপুর থেকে কেন্দ্রগুলোতে ব্যালট পেপার, ব্যালট বাক্স, সিলসহ ভোটের যাবতীয় সরঞ্জাম পাঠিয়ে দেয়। সকাল থেকে নির্বাচনের সরঞ্জাম পাঠানোর কথা থাকলেও নিরাপত্তার স্বার্থে দেরি করে পাঠানো হচ্ছে বলে কমিশন সূত্রে জানা গেছে। গাজীপুরের রির্টানিং অফিসারের কার্যালয়, নগর ভবন ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এই ৩টি স্থান থেকে ব্যালট পেপার ও ব্যালট বাক্স বিতরণ করা হয়। গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে। শেষ মুহূর্তের প্রচার-প্রচারণায় মধ্যরাত পর্যন্ত গণসংযোগে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.