আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

‘আমি শুধু দুর্নীতিবাজদের সম্পদ চুরি করি’

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সোমবার জামিনে মুক্তির পর ফের আটক হয়েছেন চুরির টাকায় মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানায় দান-খয়রাত করা চট্টগ্রামের আলোচিত ‘চোর’ বদিউল আলম ওরফে নাছির (৩৮)। জামিনে মুক্তির পর নাছির বাংলানিউজকে বলেন, ‘ভালো হয়ে যাবার চেষ্টা করব। তবে গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারব না, ভালো হয়েই যাব। কারণ যারা দুর্নীতিবাজ, সমাজের গরিব মানুষের হক যারা মেরে খায়, আমি শুধু তাদের সম্পদই চুরি করি। আল্লাহ এগুলো আমার হক হিসেবে রেখেছেন।

’ নগরীর কোতয়ালী থানাধীন গোলপাহাড় মোড়ে মিশম্যাক ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির কার্যালয়ে চুরির ঘটনায় গত বছরের ৮ জুন গ্রেপ্তার হন বদিউল আলম ওরফে নাছির। ৯ জুন তাকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার রফিকুল কাদের বাংলানিউজকে বলেন, ‘নাছিরের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া সবকটি মামলায় সে জামিন পেয়েছে। এজন্য দুপুর দু’টায় তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। ’ তবে জামিনে মুক্তির পরপরই বদিউল আলম ওরফে নাছিরকে নগর গোয়েন্দা পুলিশ ও নগর বিশেষ শাখার দুটি টিম কারাফটক থেকে পুনরায় আটক করে নিয়ে যায়।

তবে তাকে আটকের বিষয়ে নগর পুলিশের কোনও কর্মকর্তাই সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলতে চাচ্ছেন না। উল্লেখ্য, গ্রেপ্তারের পর পুলিশ হেফাজতে নাছির জানিয়েছিলেন, চুরির টাকা দিয়ে সে এলাকায় বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানায় দান খয়রাত করেন। এছাড়া টাকা দিয়ে তিনি একটি মাছের প্রজেক্ট গড়ে তুলেছে। বেশ কয়েকটি সিএনজি অটো রিকশাও আছে তার। চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার ধোপাছড়ি এলাকায় তার নিজ গ্রামে একটি দোতলা ভবনও সে নির্মাণ করেছে।

এসব তথ্য জানাজানি হওয়ার পর থেকেই চোর নাছিরেক নিয়ে পুলিশ প্রশাসন এবং মিডিয়ায় সরব আলোচনার সৃষ্টি হয়। কারা কর্মকর্তাদের কাছে তার পরিচয়, ‘এ-কালের রবিনহুড’ হিসেবে। কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, নাছিরের বিরুদ্ধে নগরী ও জেলার বিভিন্ন থানায় দায়ের হওয়া মোট ৮টি মামলা বিচারাধীন আছে। এগুলোর অধিকাংশই চুরি-ডাকাতির অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলা। এর মধ্যে কোতয়ালী থানায় দণ্ডবিধির ৪৫৭ ও ৩৮০ ধারায় দায়ের হওয়া দুটি মামলার মধ্যে একটিতে গত ৮ জুলাই এবং অপরটিতে গত ২৬ জুলাই নাছির জামিন পান।

একই থানায় দণ্ডবিধির ৩৯৫ ও ৩৯৭ ধারায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় গত ২০ অক্টোবর নাছির জামিন পান। নগরীর খুলশী থানায় দণ্ডবিধির ৪৫৭ ও ৩৮০ ধারায় দায়ের হওয়া দুটি মামলার মধ্যে একটিতে গত ৭ জুলাই এবং অপরটিতে গত ২৫ অক্টোবর জামিন পান তিনি। মিশম্যাকে চুরির ঘটনায় নগরীর পাঁচলাইশ থানায় দণ্ডবিধির ৪৫৭ ও ৩৮০ ধারায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় গত ১৩ জুলাই নাছিরের জামিন আদেশ হয়। এছাড়া জেলার সীতাকুণ্ড থানায় দণ্ডবিধির ৩৯৫ ও ৩৯৭ ধারায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় গত ১৩ সেপ্টেম্বর জামিন পান নাছির। সর্বশেষ নগরীর ডবলমুরিং থানায় দণ্ডবিধির ৩৯৫, ৩৯৭ এবং ৪১২ ধারায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় গতকাল রোববার নাছির চট্টগ্রামের একটি মহানগর হাকিমের আদালত থেকে জামিন পান।

সর্বশেষ মামলায় পাওয়া এ জামিন আদেশ রোববার বিকেল সাড়ে ৪টায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছে। এরপর সোমবার দুপুরে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, গত মে মাসে চোরের দল মিশম্যাকের সাতটি ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা নিস্ক্রিয় করে ক্যাশ ভল্ট ভেঙে মিশম্যাক ডেভলাপার ও মিশম্যাক শিপ ব্রেকার্সের ২৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে গিয়েছিল। চুরির ৮দিনের মধ্যে পুলিশ বদিউল আলম নাছিরসহ চোরচক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। গ্রেপ্তারের পর এ চোরচক্রের বিভিন্ন তথ্য পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদে বের করে আনে।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।