আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গ্রাম-বাংলার ছেলেমেয়েদের অদ্ভূত কিছু আচরণ!

আমি এক যাযাবর.... আমার জন্ম গ্রামে হলেও বেড়ে ওঠা শহরে। তবুও নাড়ির টানে প্রায়ই ছুটে যাই গ্রামে। অন্যরকম এক ভালোলাগা কাজ করে গ্রামের মায়াভরা পথে। যাই হোক, ছোট বেলায় যখন গ্রামে যেতাম, তখন কিশোর-যুবকদের মাঝে অদ্ভূত কিছু আচরণ লক্ষ্য করতাম; যেগুলো এখন প্রায়ই মনে করি আর হাসি। সেরকম কিছু মজার আচরণ আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই।

১. মিশতে না চাইলে মেয়েদের অহংকারী বলা গ্রামে সুন্দরী কিংবা স্মার্ট মেয়েদের সংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই কম থাকে। এর মধ্যেও যেসব মেয়ে দেখতে খানিকটা সুন্দরী, গ্রামের কিশোর-যুবকরা তাদের পেছনে ঘুরঘুর করে এবং আশপাশের কয়েকগ্রাম জুড়ে যুবকদের কাছে সেই মেয়ের খবরাখবর থাকে। যাই হোক, মূল কথায় আসি। সুন্দরী মেয়েরা তাদের সৌন্দর্য্যের অহঙ্কারে হোক কিংবা ছেলেদের বিরক্তির শিকার হয়ে হোক, কিছুটা রিজার্ভ থাকতে পছন্দ করে। সকলের সাথে কথা বলে না, রাস্তাঘাটে আত্মমর্যাদার সাথে চলাফেরা করে, ছেলেরা কথা বলতে প্রচণ্ড আগ্রহী হলেও সহজে তাদেরকে পাত্তা দেয় না....।

যেসব ছেলে ঐ মেয়েটির সাথে কথা বলতে চায়, তারা তখন সুন্দরী মেয়েটির আত্মমর্যাদা চর্চার এই দিকটিকে বিকৃত করে এর নাম দেয় 'অহংকার', 'ভাব', পার্ট ইত্যাদি। ছড়িয়ে দেয় 'মেয়েটা খুব অহংকারী', 'বেশি ভাব নেয়' ইত্যাদি ইত্যাদি। এক কান দুই কান করে ব্যাপারটা সেই মেয়ের কানে আসে। প্রথমে মেয়েটা কষ্ট পায়, একটু কাঁদে। তবে আস্তে আস্তে সে আগের চেয়ে কিছুটা উদার হয়।

ছেলেদের সাথে কথা একটু-আধটু বাড়িয়ে দেয়, 'অহংকারী' তকমাটা গা থেকে ঝেড়ে ফেলতে ছেলেদের সাথে একটু একটু মেশা শুরু করে। ২. সামান্য কারণেই মাফ চাইতে বাধ্য করা একটা গল্প বলি। একবার গ্রামে গিয়ে দেখি, এক মেয়ে প্রচণ্ড মন খারাপ করে আছে। খোঁজ নিয়ে জানলাম, মেয়েটাকে একটা ছেলে বিরক্ত করত বলে সে তাকে 'বেআদব' বলেছে। আর এতেই মানসম্মান প্লাস্টিক হয়েছে সেই ছেলের।

সে এখন গোঁ ধরেছে যে, মেয়েটাকে মাফ চাইতে হবে তার কাছে। ছেলেটা তার পরিচিত কিছু মেয়েকে বারবার পাঠিয়ে সেই মেয়েটাকে চাপ দিচ্ছে তার কাছে মাফ চাওয়ার জন্য। পরে মেয়েটা মাফ চেয়েছিল কিনা, সেটা আমার জানা হয় নি, তবে তুচ্ছ কারণে এরকম আরো বেশ কিছু মাফ চাওয়ার ঘটনা দেখেছি আমি। ৩. পছন্দের মেয়েকে নিয়ে উপন্যাস লেখা পড়াশোনার ঠিক নাই, কয়েকবার ফেইল করেছে এরকম এক ছেলে আমাদের গ্রামে উপন্যাস লিখত। তার পছন্দের মেয়েকে নায়িকা বানিয়ে, নিজেকে নায়ক কল্পনা করে এই উপন্যাস রচিত হত।

উপন্যাস লেখার ব্যাপারটি প্রকাশ হলে, যেই মেয়েটি এই উপন্যাসের নায়িকা, তাকে নিয়ে কানাঘুষা শুরু হত গ্রামে। কখনো কখনো এধরনের উপন্যাস বই আকারেও প্রকাশ পেত। আমার পরিচিত সেই 'ঔপন্যাসিক' এরকম একটা বই প্রকাশ করে। আমি তখন অনেক ছোট। কোনো কারণবশত সেই উপন্যাসের একটা কপি আমার মায়ের হাতে আসে।

তিনি সেটা পড়বার পরে ঘৃণায় থুথু ফেলেন এবং চুলায় পুড়িয়ে ফেলেন। জানি না, এধরনের উপন্যাস কতটা মানহীন আর অশ্লীল হয়ে থাকে। তবে ঢাকায় আসবার পর প্রথম আলো পত্রিকা মারফৎ এধরনের ঔপন্যাসিকদের সম্পর্কে মজার কিছু তথ্য জানতে পেরেছি। এসব ঔপন্যাসিক ঢাকার বাংলাবাজারে বইয়ের ব্যবসায়ীদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। কোনো লেখকের বই প্রকাশ হলে, তাকে সম্মানি দেয়া হয়।

কিন্তু এই লেখকদের ক্ষেত্রে সেটা হয় না। তারাই বরং প্রকাশকদের মোটা অংকের একটা অর্থ দিলে তবেই তার বই বাজারে আসে। বাংলাবাজারে এই শ্রেণীর লেখকদের বিশেষ একটা নামও আছে- 'মুরগা লেখক' ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১২ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।