আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

২০১১ সালের জামায়াত এবং ১৯৭১ সালের জামায়তের মাঝে কোন পার্থক্য নেই

পরিবর্তনের জন্য লেখালেখি "জামায়াত অত্যন্ত সচেতন ভাবে , অনেক গুলো কজকে সামনে রেখে ইউনাইটেড পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো। ভারতের সাহায্যে স্বাধীনতা অর্জন করে আমরা হয়ত পিন্ডির শাসন থেকে মুক্ত হব কিন্তু দিল্লির পিঞ্জরে থাকব। আমি আমার বক্তব্যে স্পষ্ট করেছি -জামায়াত যেহেতু সচেতন ভাবেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, জামায়াতের পলিটিকাল সিদ্ধান্তের ব্যাপারে জামায়াতের কোন অনুতাপ নেই। " উপরের কথা গুলো "জামায়াত নেতা নিজামীর জামাতা এবং ইউ কে'র জামাত প্রধান ও মূল স্পোকস্ম্যান জনাব ব্যারিস্টার নজরুল ইসলামের সাথে নিঝুম মজুমদারের একটি টক শোর ভিডিও থেকে পাওয়া। (১৯শে ডিসেম্বর, এটিএন বাংলার মুক্ত সংলাপ অনুষ্ঠানে।

-- কৃতজ্ঞতা ঃ নিঝুম মজুমদার" আমি কিছু বাক্য সংক্ষেপের প্রতি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করবো। ১। জামায়াত অত্যন্ত সচেতন ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ২। অনেক কজকে সামনে রেখে ৩। ইউনাইটেড পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো ৪।

কোন অনুতাপ নেই এখন আসুন দেখি বিভিন্ন সভা, সেমিনার , মাহফিল , এবং মিডিয়াতে জামায়াত নেতারা কি বলে? ১। স্বাধীনতার বেশ কিছু বছর পর্যন্ত জামায়াতের বক্তব্য এই রকমই ছিলো যে তারা পাকিস্তানের পক্ষে কাজ করে কোন ভুল করে নাই। কয়দিন আগে গু আযমকেই সেই কথাই বলতে দেখা গেলো। ২। বিভিন্ন জন সমাগমে গু আযম সহ জামাতের নেতারা বাংলা ভাষা, বাংলা সংস্কৃতি এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে হিন্দুয়ানি ভাষা, হিন্দু সংস্কৃতি এবং ভারতের ষড়যন্ত্র বলে আখ্যা দিয়ে এসেছে।

৩। বেশ কিছু বছর পর্যন্ত জামায়াত পিছলামী স্বীকার করত না যে তারা রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের জন্য দল করে। তাদের প্রচার ছিলো এই রকম যে ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য তারা কাজ করে । ( তাইলে ভোটে দাঁড়ায় কেন?) ৪। জামাত করলে বেহেস্ত পাওয়া যাবে বলে কর্মী সংগ্রহ, আল্লাহর পথে খরচ করা হবে বলে সদস্যদের কাছ থেকে চাঁদা নেওয়া , শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার লোভ দেখিয়ে ভোট আদায় , নারী শাসন মানি না হুঙ্কার দিয়ে হাসিনা - খালেদার লেজুর বৃত্তি ইত্যাদি বহু ভন্ডামি জামায়াতের স্বভাব।

এন জি ও বানিয়ে কৃষকের টাকা মেরে দেওয়ার খবরও এসেছিলো এন টিভিতে। এই যে জামায়াত কোটি কোটি টাকা চাঁদা তোলে, ব্যবসা করে, বিদেশী অনুদান পায়- এইটা দিয়ে তারা কি করে? জামাত শিবির ক্যাডার বাহিনীর জন্য অস্ত্র কেনে, গরীব কর্মীদের পোষে আর নেতার ছেলেদের লন্ডন পাঠিয়ে উকিল বানায়। সাথে বৃটিশ উকিল ভাড়া করা তো আছেই। দেশে বিদেশে নিজের পক্ষে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের বিপক্ষে গুজব ছড়ানোও একটা খরুচে কাজ। ইসলামী ব্যাংক কিংবা হাসপাতাল, ইবনে সিনা , কিছু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়- আপনার আমার শ্রমের টাকা এখন যুদ্ধাপরাধীদের বাচানোর কাজে লাগছে।

ভিডিওর কথা গুলো লক্ষ্য করুন। জামায়াত যা করেছে অত্যন্ত সচেতন ভাবেই করেছে। ভুল করে করে নাই। জেনে শুনে বুঝে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে - জামায়াত ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্র সংঘ (পরে ছাত্র শিবির) লক্ষ লক্ষ বাঙ্গালী হত্যাকারী এবং নারী ধর্ষণকারী , শিশু হত্যাকারী পাকিস্তানী সরকার এবং পাকিস্তানী সেনা বাহিনীকে সাহায্য করবে। সুদীর্ঘ ৯টা মাস তারা তাই করেছে।

ইসলাম কি জালিমের পক্ষে কাজ করতে বলে না জালিমের জুলুম এর প্রতিবাদ করতে বলে? জুলুম এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে বলে? জামায়াত মুখে যতই ইসলামের কথা বলুক, তাদের আচরণে ইসলামের বিন্ধুমাত্র প্রভাব নাই। যা আছে, তার পুরাই ভন্ডামি। তারা ইউনাইটেড পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো । অর্থাৎ ২৫শে মার্চের গণহত্যার পরেও তাদের এই সিদ্ধান্ত বব্দলায় নাই। অনেক বাঙ্গালী মুসলমান ২৫শে মার্চের আগে যাই চেয়ে থাকুক, গণহত্যার কথা জানার সাথে সাথেই জুলুমের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে , মজলুমের পক্ষে মুক্তিযুদ্ধ করেছে।

কিন্তু জামায়াত "অত্যন্ত সচেতনভাবে" জালিমের পক্ষ নিয়েছে। হাজার হাজার মাতা, পিতা, শিশুর লাশ তাদের সিদ্ধান্তকে বদলাতে পারে নাই। তাদের কোন অনুতাপ নেই। অর্থাৎ ৩০ লক্ষ মানুষ হত্যা এবং ২ লক্ষ নারীকে ধর্ষণ করতে সাহায্য করেছে যেই রাজনৈতিক দল , পাকিস্তানী সেনা বাহিনীকে বাংলার পথ , ঘাট, মানুষ, বুদ্ধিজীবী চিনিয়ে দিয়েছে যেই দল- তাদের কোন অনুতাপ নেই। স্বাধীনতার, হত্যার, ধর্ষণের , আগুনে পুড়িয়ে জান মাল নষ্টের ৪০ বছর পরেও তাদের কোন অনুতাপ নেই।

তারা এখনো মনে করে পাকিস্তানকে সাহায্য করার "অত্যন্ত সচেতন সিদ্ধান্ত" সঠিক ছিলো। তার মানে তারা এখনো পাকিস্তান পন্থী। --------------------------------------- অথচ এই জামায়াতে ইসলামী ইদানিং ভাষা সৈনিক বানায় গে আযমকে যে কিনা লন্ডন আর বাংলাদেশের প্রকাশ্য জনসভায় "বাংলাকে হিন্দুয়ানী" ভাষা বলে গালি দিত । এই জামাত এখন ভোট পাওয়ার জন্য বিজয় মিছিল করে বাধ্য হয়ে। ভোটের জন্য এই জামায়াত ইদানিং মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা জানায় মুক্তিযোদ্ধার পাছায় লাত্থি মেরে।

হ রে ভাই, "সৎ লোকের দলই বটে" !!!!!!!!!! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।