আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আজকেও কি স্টেডিয়ামে আমরা কিছু জারজ পাকি সাপোর্টার দেখব??? আসুন বিজয়ের মাসে জানি আমাদের বীর ক্রিকেটারদের কথা

পেতে চাই সত্যের আলো, হতে চাই বিশ্বাসীদের একজন ‎২৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৭১। ঢাকা স্টেডিয়ামে শুরু হলো চারদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ। পাকিস্তান ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড দলের প্রতিপক্ষ কমনওয়েল্থ একাদশ। পাকিস্তানের হয়ে ইনিংস ওপেন করতে নামলেন ১৮ বছর বয়সী বাঙালি ব্যাটসম্যান রকিবুল হাসান। পাকিস্তান ক্রিকেট দলের একমাত্র বাঙালি সদস্য।

পাকিস্তান দলের সব ব্যাটসম্যানের ব্যাটেই সোর্ড [তলোয়ার] স্টিকার। যা জুলফিকার আলী ভুট্টোর নির্বাচনী প্রতীক। কিন্তু ব্যতিক্রম শুধু একজন। তিনি রকিবুল হাসান। তিনি মাঠে নামলেন ব্যাটে জয় বাংলা স্টিকার লাগিয়ে, পাশে বাংলাদেশের ম্যাপ! ১ মার্চ ১৯৭১, সোমবার দুপুর ১টা ৫ মিনিট।

নিশ্চিত ড্র-য়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে খেলা। তখন রেডিওতে শোনা গেলো ইয়াহিয়ার ঘোষণা, জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনির্দিস্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে! সঙ্গে সঙ্গে গর্জে উঠলো গোটা স্টেডিয়াম। ব্যাটে যে জয় বাংলা ধ্বনি নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন রকিবুল হাসান, মুহূর্তে সেই জয় বাংলা ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয়ে উঠলো গোটা দেশ। খেলা মুলতবি ঘোষণা করা হলো। সমগ্র বাঙালি জাতি নেমে এলো রাজপথে।

শুরু হলো অসহযোগ আন্দোলন। এর পরের ইতিহাস সবার জানা। একজন ক্রিকেটারের জন্য জাতীয় দলের হয়ে টেস্ট খেলার চেয়ে বড় আর কোনো চাওয়া নেই। কিন্তু মাতৃভূমির জন্য রকিবুল হাসান ত্যাগ করেছিলেন আজীবন লালিত টেস্ট খেলার স্বপ্ন। কোনোরকম রাজনৈতিক নির্দেশ ছাড়াই যিনি বরণ করে নিয়েছিলেন জুলুম নির্যাতন, যোগ দিয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধে।

বাদ দেই সে কথা। ফিরে আসি ২০১১তে। বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। চলছে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজ। শুরু হয়েছে শেষ ওয়ানডে একটু আগেই।

যথারীতি আজও অনেকে পাকিস্তানের পতাকা গালে একে তাদের সমর্থনে স্টেডিয়ামে যাবেন,আফ্রিদির বোলিং তাণ্ডবে বাংলাদেশ ব্যাটিং লাইন-আপ ঊড়ে যেতে দেখে আনন্দ প্রকাশ করেবন। যারা বাংলাদেশ বনাম পাকিস্থানের খেলায় পাকিস্থানকে সমর্থন করছেন, ওদের পতাকা গালে-মুখে এঁকে, পতাকা উড়িয়ে উচ্ছাস করছেন, একবারও কি ভেবেছেন আপনাদের এসব কর্মকান্ড দেশের জন্য যুদ্ধ করা জাতির সুর্য্যসন্তানদেক কিভাবে কতটা কষ্ট দেয়? যুদ্ধাহত ঐ পরিবারগুলিই বুঝে পাক হানাদার এবং ওদের দোসররা কিভাবে আমাদের নাগরিকদেক নিশংস ভাবে হত্যা করেছে, মা-বোনকে ধর্ষন করেছে। অনেকে বলছেন এটাতো খেলা, সমর্থনে আর কি আসে যায়, কিন্তু একবারও কি ভেবেছেন, প্রতিটা দল নিজ নিজ দেশকে উপস্থাপন করছে? শুধু খেলা বলে পাকিস্থানকে সমর্থন করার যুক্তি অসাড়, আপনাদের কথামত এই সামান্য খেলাতেই দেশের প্রতি আপনার সমর্থন দিতে পারছেন না, বড় কোন ঘটনায় দেশকে সমর্থন দেবেন কিভাবে? আবার ফিরে আসি একাত্তরে। আপনাদের কি জুয়েল এর কথা মনে আছে ? জুয়েল ছিলেন পূর্ব পাকিস্তান তথা সমগ্র পাকিস্তানের সেরা ব্যাটসম্যান । মুক্তিযুদ্ধে গেরিলার ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন তিনি ।

আলতাফ মাহমুদের বাসায় অবস্থানকালে তিনি পাকিস্তানি হানাদারদের হাতে ধরা পড়েন । পরবর্তীতে ক্যাম্পে পাকিস্তানি আর্মি তার তার দুই হাতের বুড়ো আঙুল কেটে নেয় । ১৮ বছরের টগবগে তরুণ রকিবুল হাসান মাতৃভূমির জন্য টেস্ট খেলার সুযোগ বিসর্জন দিতে পারেন, যে দলের ওপেনার হওয়ার সুযোগ প্রত্যাখ্যান করেন, সেই দলকে সমর্থন দিতে আমাদের কেন লজ্জা হয় না? আজ ফেসবুকে একটা চমৎকার ছবি দেখলাম যা আপনাদের সাথে শেয়ার না করে পারছি না। আসুন আমরা সবাই মিলে একসাথে গেয়ে উঠিঃ ‎"যেসব বঙ্গে জন্মি হইয়াছে ভারতীয়/পাকিস্তানি সেসব কাহার জন্ম নির্ণয় ন' জানি" বাংলাদেশে জন্মগ্রহনকারী সকল ছাগু এবং ভাদাকে গদাম। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.