আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পাহাড়ে অশান্তি ছড়াতে সিএইচটি কমিশনের নতুন মিশন

সহজ সরল ভালবাসা সুন্দর পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালি ও সেনাদের বিরুদ্ধে পাহাড়িদের ক্ষেপিয়ে তোলার চেষ্টা চলছে। এর পেছনে কয়েকটি বেসরকারি সংস'া ইন্ধন দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তাদেরই একটি সংগঠন সিএইচটি কমিশন- যারা পাহাড় থেকে সেনা তুলে নেয়া এবং বাঙালিদের ফিরিয়ে এনে সমতলে রাখার পক্ষে কাজ করে চলেছে। এ বিষয়ে তারা সরকারের সাথেও বোঝাপড়া করছে। গত ১৩ নভেম্বর বাংলাদেশ সফরে আসা জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব বান কি মুনের কাছেও তারা ই-মেইলে এ বিষয়ে আবেদন করেছে।

তারা বলেছে, বান কি মুন যেনো বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারকে অবহিত করেন এবং এ বিষয়ে জাতিসঙ্ঘে সম্ভব সব ধরনের পদক্ষেপ নেন। এ রকম এক প্রেক্ষাপটে পার্বত্য চট্টগ্রামে যেসব বাঙালি অবস'ান করছেন তারা উদ্বিগ্ন। এর মধ্যে আবার স্বাধীনতার ডাক দিয়েছে সেখানকার একটি পাহাড়ি ছাত্র সংগঠন। তারা সেনাক্যাম্প গুঁড়িয়ে দেয়া এবং বাঙালিদের হত্যার প্ররোচনা দিয়ে এসএমএস পাঠাচ্ছে এবং ওই এসএমএস যেনো অন্যদেরও পাঠানো হয় সে বিষয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এ বিষয়ে সরকারের গোয়েন্দা সংস'াগুলো কোনো ক্লু খুঁজে বের করতে পারেনি।

সেখানে কাজ করেন এমন একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা গত রাতে নয়া দিগন্তকে বলেছেন, এটা খুবই উদ্বেগের বিষয়, আমরা খুবই গুরুত্বের সাথে বিষয়টিকে দেখছি। তবে এর সাথে ঠিক কারা জড়িত সে সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। শান্তি চুক্তির বিরুদ্ধে অবস'ান নেয়া সংগঠন ইউপিডিএফকে এ জন্য কেউ কেউ অভিযুক্ত করলেও তারা তা অস্বীকার করেছে। তাদের কেন্দ্রীয় নেতা অলকেশ চাকমা বলছেন, তারা এ ধরনের কোনো বার্তা প্রচার করেননি। তাদের লক্ষ্য স্বাধীনতা নয়; তারা চাইছেন স্বায়ত্তশাসন।

অন্য দিকে চুক্তির পক্ষের শক্তি হিসেবে পরিচিত জনসংহতি সমিতির নেতা সজীব চাকমাও এ ধরনের কোনো বার্তা তাদের দলের পক্ষ থেকে প্রচারের বিষয়টি স্বীকার করেননি। গোয়েন্দারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। উদ্বেগের পাহাড়ে আতঙ্ক ছড়াতে যাচ্ছে সিএইচটি কমিশন : পাহাড়ে থাকা বাঙালিদের বিরুদ্ধে অবস'ান নেয়া অনিরপেক্ষ সিএইচটি কমিশন শুধু দেশে-বিদেশে বাঙালি ও সেনাদের দুষছে না, তারা পাহাড়ে গিয়ে নানা তৎপরতার মাধ্যমে তাদের চাপে রাখার কৌশলও নিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে তিন দিনের এক ঝটিকা সফরে যাচ্ছে সিএইচটি কমিশন। আমাদের খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, আগামীকাল ২২ নভেম্বর খাগড়াছড়ি দিয়ে অভিযান শুরু করে পুলিশি নিরাপত্তা নিয়ে তারা ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত পাহাড়ে থাকবেন।

এ সময় তারা সেনা ও বাঙালিদের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি এবং সেখানে পাহাড়ি রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস'ার সাথে মতবিনিময় করবেন। ওই সব সংস'ার কাছ থেকে তাদের আগে থেকে বলে রাখা বিভিন্ন সুপারিশ তুলে আনবেন, সেগুলো পরে তারা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে তুলবেন, যেখানে বাঙালিদের কোনো বক্তব্যই থাকবে না। কারণ তারা প্রথমেই ধরে নিচ্ছেন- বাঙালি মানেই পাহাড়ে অনভিপ্রেত। সিএইচটি কমিশনের এসব তৎপরতার প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। গতকাল বান্দরবানে বাঙালি ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে এর প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।

আমাদের বান্দরবান সংবাদদাতা জানিয়েছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহার ও বাঙালিদের সমতলে পুনর্বাসনে সরকারের কাছে পেশ করা সিএইচটি কমিশনের প্রস-াবের প্রতিবাদ জানিয়েছেন পার্বত্য বাঙালি ছাত্রপরিষদ নেতৃবৃন্দ। গতকাল রোববার সকালে বান্দরবানে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন সংগঠনটির নেতাকর্মী-সমর্থকরা। বিভিন্ন দাবিসংবলিত ব্যানার, ফেস্টুন, প্লেকার্ড নিয়ে নেতাকর্মীরা মানববন্ধন করেন। কর্মসূচিতে সাধারণ বাঙালিরাও যোগ দেন। এ উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি কামরান ফারুক, সাংগঠনিক সম্পাদক মো: সেলিম, মো: মঞ্জুর হোসেন প্রমুখ।

সভার পর শহরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। কর্মসূচি চলাকালে অনাকাঙিক্ষত পরিসি'তি এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ স'ানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সমপ্রতি সিএইচটি কমিশন পার্বত্য চট্টগ্রাম সফর শেষে সরকারের কাছে চার দফা প্রস্তাব পেশ করে। প্রস্তাবে পার্বত্য চট্টগ্রামে শানি- ফিরিয়ে অনতে সেনাক্যাম্প প্রত্যাহার ও বাঙালিদের সমতলে পুনর্বাসনের কথা উল্লেখ করা হয়। এ প্রস-াবের প্রতিবাদ জানিয়ে পার্বত্য তিন জেলায় বাঙালিদের সংগঠনগুলো প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে আসছে।

সিএইচটি কমিশনের পেছনের কথা : সিএইচটি কমিশনের ওয়েবসাইটে দেখা তথ্য অনুযায়ী, আমস্টার্ডাম ভিত্তিক অর্গানাইজিং কমিটি ফর সিএইচটি ক্যাম্পেইন এবং কোপেনহেগেন ভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ওয়ার্ক গ্রুপ ফর ইন্ডিজেনাস অ্যাফেয়ার্স নামের দু’টি সংগঠন যৌথভাবে ১৯৯০ সালে চিটাগং হিল ট্র্যাক্টস (সিএইচটি) কমিশন গঠন করে। এর সদস্যরা হলেন- সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল, ব্রিটেনের সাবেক এমপি লর্ড এরিক আভবুরি, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক এলসা স্টামাটোপৌলৌ, আইনজীবী সারা হোসেন, ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের শিক্ষক স্বপন আদনান, লার্স লার্স-অ্যান্ডার্স বেয়ের, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল এবং নিউ জার্সির প্রিন্সটনের ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডির শিক্ষক মিখায়েল সি ভন ওয়াল্ট ভন প্রাগ। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.