আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঢামেকে লাশ নিয়ে চাঁদাবাজি

ঢামেক মর্গে একদিকে নিহতের স্বজনদের হৃদয়বিদারক আহাজারি অন্যদিকে লাশ বুঝে নেওয়ায় স্ব-স্ব ব্যস্ততা। এরই মধ্যে ময়নার লাশ নিয়ে ঘটে যায় তুলকালাম কা-। সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত মনির হোসেন ময়নার (২৫) লাশ বিনা ময়না তদন্তে ফেরত দেওয়ার বিনিময়ে এক পুলিশ সদস্যের ১০ হাজার টাকা দাবী করায় এই অপ্রত্যাশিত বাকবিতন্ডা হয় বলে জানা গেছে। আর এতে উপস্থিত অনেকে মন্তব্য করছেন টাকার গন্ধে মানুষের হৃদয়বিদরক আহাজারি ও লাশের গন্ধ ঢাকা পড়ে গেছে। নিহত ময়নার ছোট ভাই নূর ইসলাম জানান, তার বড়ভাই ময়নার লাশ শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটায় ঢামেক মর্গে পাঠানো হয়।

বিনা ময়না তদন্তে লাশ ফেরত পাওয়ার জন্য বিভিন্ন দিক দৌড়ে শেষ পর্যন্ত শাহবাগ থানার এক পুলিশ সদস্যের অমানবিক আচরণের শিকার হয় সে। লাশের সুরতহাল রিপোর্ট করে শাহবাগ থানায় একটি জিডি করেন। যার নং-৯০২ তাং-১৮/১১/১১। তারপর বিনা ময়নাতদন্তে লাশ বুঝে দেওয়ার জন্য শাহবাগ থানার কর্তব্যরত পুলিশ সদস্য রমজান আলী মোটা অংকের টাকা দাবী করেন। দীর্ঘ তিন ঘণ্টা দরকষাকষির পর রমজান আলী ১০ হাজার টাকার কমে লাশ দিবে না বলে জানিয়ে দেয়।

এরপর ও ঢামেকের পরিচিত লোকজন, সরকার দলীয় নেতা পর্যায়ের লোকজনের সুপারিশ পর্যন্ত তোয়াক্কা করেনি ওই পুলিশ সদস্য। এই নিয়ে তাদের সাথে ওই পুলিশের বাকবিতন্ডা হয় বলে জানায় নুর ইসলাম। নিহত ময়নার বন্ধু বাচ্চু মিয়া জানান, ওই পুলিশ সদস্যের মধ্যে একটু মানবতা নাই। একটি গরীব পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম লোকটি মারা যাওয়ায় পরিবারের সদস্যদের দিকে একটি সহানুভতিশীল দৃষ্টি না দিয়ে উল্টা জুলুম করছে। অথচ মর্গের দায়িত্বরত বাবুল পর্যন্ত সুপারিশ করে ব্যর্থ হয়ে তার পকেটের টাকা দিয়ে হলেও লাশ বিনা ময়না তদন্তে ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেয়।

বাচ্চু আরো জানায়, এ ব্যাপারে জামালপুরের ইসলামপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ফরিদুল হক দুলাল ফোন করে সাহায্যের জন্য অনুরোধ করার চেস্টা করলেও তিনি কথা বলতে রাজী হননি। অবশেষে সংসদ সদস্য ফরিদুলকে দুলাল সহ একাধিক সংসদ সদস্যের তৎপরতায় বিনা ময়না তদন্তে ময়নার লাশ ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পিক-আপ গাড়ী চালক ময়না ঢাকা থেকে নরসিংদী যাওয়ার সময় বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় স্বরস্বতী বেলি ব্রীজের উপরে উঠতে থাকলে তার সামনে থাকা একটি ট্রাক হঠাৎ করে ব্যাকে এসে ময়নার চালিত পিক-আপটিকে ধাক্কা দিয়ে ট্রাকটি পালিয়ে যায়। এতে ময়না মারাত্বম আহত হলে তাকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার রাত দুইটায় ময়না মারা যায়।

ময়নার মৃত্যুতে তার স্ত্রী ওযুফা বেগম বাকশক্তি হারিয়ে মর্গের পার্শ্বের রাস্তায় বসে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। নিহত ময়নার আট বছর থেকে দুই বছর বয়সী তিনটি সন্তান রয়েছে। তার বাড়ি জামালপুর জেলার ইসলামপুর থানা এলাকায়। ময়না সবুজবাগ থানার নন্দীপাড়ার এক নাম্বার রোডে ভাড়া থাকতো। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।