আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কেউ খাবার দিলে খাই,না দিলে পেটটারে ধইরা থাহি ! দেশের মানুষ এখন চার বেলা খায়।?(প্রধান মন্ত্রী

সারাদিন পাহাড়ের ঝোপ জঙ্গলে ছেলেডারে তালাস করি। রাত অইলে বাড়িতে যাই। কোনো মতে থাহনের এডা ঘর আছে । ওই হানেই ঘুমাই। কেউ খাবার দিলে খাই।

না দিলে পেটটারে ধইরা থাহি। কি করুম। এইহানে আমার কেউ নাই। বাবার বাড়ি ভারতে। তাই বর্ডারের কাটাতারের বেড়ার আশপাশে দেহি।

আমাগোর কাউরে দেহন যায় কি’না। ” কথাগুলো বলেন, শ্রীবরদী উপজেলার রানীশিমুল ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের হালুহাটি গ্রামের মৃত ছৈয়দ আলীর স্ত্রী ছালেমা বেওয়া (৬৫)। তার তিন ছেলে তিন মেয়ে। বড় ছেলে মারা গেছে অনেক আগেই। এক ছেলে মানষিক প্রতিবন্দ্বী।

আরেক ছেলে নিখোঁজ প্রায় দু’বছর ধরে। বড় মেয়েটাও মাস খানেক হলো কোথায় গিয়েছে তা জানেনা ছালেমা বেওয়া। এক মেয়ে বিয়ের পর থেকে স্বামীর বাড়ি থাকে। আরেক মেয়ে স্বামী পরিত্যক্তা হয়ে বাড়িতে এসেছে। স্বামীর রেখে যাওয়া এক খন্ড জমিতে একটি ঝোঁপড়ি ঘরে থাকেন মা আর মেয়ে।

বাড়ি থেকে চলে যাওয়া বড় মেয়ে সায়মা বেগম (৪০) কে খুজেঁ বেড়ানো যেন তার সারাদিনের কাজ। প্রতিদিন সকাল হলে গারো পাহাড়ের ভারতের সীমানার ঝোপঁ জঙ্গল দিয়ে খুজেঁ ফিরে ছালেমা বেওয়া। বন্য প্রাণীর হাত থেকে রক্ষার পেতে হাতে একটি দা নিয়ে ঘুরতে থাকে সারাদিন। সম্প্রতি পাহাড় থেকে সন্ধ্যায় ফিরে আসার পথে কথা হয় ওই বয়োবৃদ্ধা সাথে। তিনি জানান, তার বাবা ভারতের তেজপুর এলাকার বাসিন্দা মৃত ফইমদ্দিন।

তার মা, বাবা মারা গেছে অনেক আগেই। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় একবার বাড়িতে গিয়েছিলেন। তখনই শেষ কথা হয়েছিল তার মা বাবার সাথে। এরপর অনেকবারই যাবার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু অর্থের অভাব ও নানা জটিলতার কারণে আর যাওয়া হয়নি।

তাই তার ধারনা তার ছেলে মেয়ে হয়তবা তার বাবার কাছে চলে গেছে। এ জন্য প্রতিদিন যান গারো পাহাড়ে। তিনি বলেন, “আমি নিজেই চলতে পারিনা। তার মধ্যে মেয়েডাও আইছে। আপনারাই কন কেমনে চলুম? বয়স্ক ভাতার কথা বললে তিনে বলেন, “হুনছি সরকার বয়স্কদের ট্যাহা দেয়।

কিন্তু জানিনা কত বছর অইলে ট্যাহা পাওন যাইবো। মেম্বারÑচেয়ারম্যানরা আমাগোর কথা হোনেনা। তাই কিছু চাইনা। একবার মাটিকাটার জন্যে আমার কাছ থাইকা দুই হাজার ট্যাহা নেয়। ছয়দিন কাজ করার পর আমারে একুশ ট্যাহা দিছে।

এডা দিয়ে কি অইবো? তাই পোলা আর মাইডারে খুঁিজ। ওগোরে পাইলে আমার আর কষ্ট করতে অইবো না। ” এমনি হতাশা আর ক্ষুধার যন্ত্রনা নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন ছালেমা বেওয়া। তাই তাকে বয়স্ক ভাতা দিলে হয়ত সামান্যতম কষ্টের অবসান হতে পারে। এমনি প্রত্যাশা করেন এলাকার সচেতন মানুষ।

 ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.